Advertisement
E-Paper

‘বৈঠক ১১টায়, ৪১ মিনিট আগে নথি হাতে পেলাম’! ওয়াকফ-জেপিসি নিয়ে আবার সরব হলেন কল্যাণ

কল্যাণের অভিযোগ, সোমবার বৈঠক শুরুর ৪১ মিনিট আগে সংশোধনীর তালিকা সংক্রান্ত নথি হাতে পেয়েছেন তিনি। ফলে তাঁর পক্ষে প্রস্তাবিত সংশোধনী পর্যালোচনা করাই সম্ভব হয়নি।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৭ জানুয়ারি ২০২৫ ১২:২৭
ওয়াকফ সংক্রান্ত বিষয়ে জেপিসির বৈঠক নিয়ে ফের ক্ষোভপ্রকাশ কল্যাণের।

ওয়াকফ সংক্রান্ত বিষয়ে জেপিসির বৈঠক নিয়ে ফের ক্ষোভপ্রকাশ কল্যাণের। গ্রাফিক: আনন্দবাজার অনলাইন।

দিন তিনেক আগেই ওয়াকফ সংশোধনী বিল নিয়ে যৌথ সংসদীয় কমিটির (জেপিসি) বৈঠকে জোর বিতণ্ডায় জড়িয়েছিলেন শাসক এবং বিরোধী সাংসদেরা। বিষয়টি এমন জায়গায় পৌঁছেছিল যে, তৃণমূলের কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়-সহ ১০ বিরোধী সাংসদকে সাসপেন্ডও করা হয়েছিল। এ বার ওয়াকফ সংশোধনী বিল সংক্রান্ত বিষয়ে জেপিসির বৈঠক নিয়ে নতুন অভিযোগ তুললেন কল্যাণ। তাঁর অভিযোগ, সোমবার বৈঠক শুরুর ৪১ মিনিট আগে সংশোধনীর তালিকা সংক্রান্ত নথি হাতে পেয়েছেন তিনি। ফলে তাঁর পক্ষে প্রস্তাবিত সংশোধনী পর্যালোচনা করাই সম্ভব হয়নি।

বিষয়টি নিয়ে যৌথ সংসদীয় কমিটির চেয়ারম্যানকে চিঠি দিয়েছেন কল্যাণ। চিঠিতে তাঁর বক্তব্য, সোমবার সকালে ১১টা থেকে বিলের ধারা ধরে আলোচনা হওয়ার কথা বৈঠকে। কিন্তু বিলে কী কী সংশোধনী আনা হয়েছে, তার তালিকা তাঁর কাছে এসে পৌঁছেছে সকাল ১০টা ১৯ মিনিটে। ফলে তাঁর পক্ষে সব ক’টি প্রস্তাবিত সংশোধনী ভাল করে পড়াই সম্ভব হয়নি। কল্যাণ লিখেছেন, ‘‘বিষয়টি নিয়ে খুবই তাড়াহুড়ো করা হচ্ছে। একেবারেই গুরুত্ব দিয়ে দেখা হচ্ছে না।’’ সংবিধানের অনুচ্ছেদ ১৪-য় বর্ণিত তাঁর মৌলিক অধিকারও খর্ব করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন কল্যাণ।

প্রসঙ্গত, গত শুক্রবারই জেপিসির বৈঠকে বিজেপি সাংসদ নিশিকান্ত দুবের সঙ্গে তর্কাতর্কিতে জড়িয়েছিলেন পড়েছিলেন। বৈঠকের সময় নিয়ে সেখানে বিতণ্ডা হয়েছিল। বিরোধী সাংসদেরা কমিটির চেয়ারম্যান জগদম্বিকা পালের কাছে অনুরোধ করেছিলেন, ৩০-৩১ জানুয়ারি যাতে পরবর্তী বৈঠকের দিন স্থির করা হয়। কিন্তু শেষমেশ জানানো হয়, বৈঠক হবে ২৭ জানুয়ারি। তারই প্রতিবাদ করেছিলেন কল্যাণেরা। তাঁদের দাবি ছিল, এত তাড়াহুড়ো কেন করা হচ্ছে? এ নিয়ে নিশিকান্তের সঙ্গে কথা কাটাকাটি হয়েছিল শ্রীরামপুরের তৃণমূল সাংসদের। উত্তেজনাপূর্ণ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। এর পর কল্যাণ, এ রাজা, সঞ্জয় সিংহ-সহ ১০ সাংসদকে সাসপেন্ড করা হয়। বস্তুত, ওয়াকফ বিল নিয়ে গত অক্টোবরেও যৌথ সংসদীয় কমিটির বৈঠকে তুমুল অশান্তি হয়। সে দিন আহত হন তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ। কাচের বোতল ভেঙে তার হাত জখম হয়েছিল। বৈঠকে ‘অসংসদীয় ভাষা’ প্রয়োগের জন্য কল্যাণকে এক দিনের জন্য সাসপেন্ডও করা হয়েছিল।

গত ৮ অগস্ট লোকসভায় ওয়াকফ সংশোধনী বিল পেশ করেছিলেন কেন্দ্রীয় সংখ্যালঘু মন্ত্রী কিরেন রিজিজু। বিলটি ‘অসাংবিধানিক এবং মুসলিমদের ধর্মীয় স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপকারী’ বলে অভিযোগ তুলে বিরোধীরা একযোগে তা নিয়ে আপত্তি জানান। দীর্ঘ বিতর্কের শেষে ঐকমত্যের লক্ষ্যে বিলটি যৌথ সংসদীয় কমিটির কাছে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছিল কেন্দ্র। কংগ্রেস, তৃণমূল, ডিএমকে, এসপি, আপ, মিম-সহ প্রায় সব ক’টি বিরোধী দলের বক্তব্য, ওই বিল সংবিধান-বিরোধী। এই বিল যেমন মুসলিমদের ধর্মীয় স্বাধীনতা কেড়ে নেবে, তেমনই যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোতেও আঘাত করবে বলে মনে করেন তাঁরা। বিলে বলা হয়েছে, আগামী দিনে কোনও সম্পত্তি ওয়াকফ হিসাবে ঘোষণা করার অধিকার ওয়াকফ বোর্ডের হাতে থাকবে না। ওই ক্ষমতা তুলে দেওয়া হবে জেলাশাসকদের হাতে। বিরোধীদের অভিযোগ, নতুন আইনে যাবতীয় ক্ষমতা জেলাশাসকের হাতে চলে যাবে। এর ফলে জেলাশাসক ওয়াকফ বোর্ডের চেয়ারম্যানের থেকেও শক্তিশালী হয়ে উঠবেন। যাবতীয় গুরুত্ব হারাবে ওয়াকফ বোর্ড।

বর্তমানে যে আইন রয়েছে, তাতে ওয়াকফের দখল করা জমি বা সম্পত্তিতে কোনও ভাবেই পর্যালোচনা করার সুযোগ থাকে না। কারও আপত্তি সত্ত্বেও জমি বা সম্পত্তি দখল করতে পারে ওয়াকফ বোর্ড। তাতে হস্তক্ষেপ করার সুযোগ থাকে না সরকারের। নতুন বিলে তার বন্দোবস্ত রয়েছে। এটা নিয়েই আপত্তি উঠেছে। এ ছাড়া রয়েছে একটি কেন্দ্রীয় পোর্টালের মাধ্যমে ওয়াকফ সম্পত্তির নথিভুক্তিকরণ নিয়ন্ত্রণ করার প্রস্তাব।

Kalyan Banerjee
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy