Advertisement
০৩ মে ২০২৪
Cyclone Biparjoy

ঘূর্ণিঝড় এলেই ভেঙে পড়ে ‘তাসের ঘর’, তবু বার বার ছাউনি গাঁথেন, ‘বিপর্যয়ে’ নির্লিপ্ত দম্পতি

জখাউয়ের বৃদ্ধ দম্পতি ‘বিপর্যয়’ নিয়ে তেমন চিন্তিত নন। তাঁদের কাঁচা বাড়ি আবার ভেঙে যাবে, তাঁরা জানেন। ঝড় কেটে গেলে আবার নতুন করে সেই ঘর গড়ে তুলবেন তাঁরা।

Couple who lost three houses in three cyclones now gets ready for Cyclone Biparjoy.

গুজরাত উপকূলে ঘূর্ণিঝড় ‘বিপর্যয়’-এর পূর্ববর্তী পরিস্থিতি। ছবি: সংগৃহীত।

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
গান্ধীনগর শেষ আপডেট: ১৫ জুন ২০২৩ ২০:১৬
Share: Save:

সমুদ্রের ধার ঘেঁষে এক ফালি জমি। তাতেই মাথা গোঁজার ঠাঁই ৭০ বছরের হওয়া বাই এবং উসমানের। বৃদ্ধ এই দম্পতি চোখের সামনে বহু বার ঘূর্ণিঝড়ের তাণ্ডব দেখেছেন। তাঁদের চোখের সামনেই বার বার ছারখার হয়ে গিয়েছে তাঁদের গড়ে তোলা ‘তাসের ঘর’। এ বার ‘বিপর্যয়ের’ জন্য তাঁরা কোমর বেঁধেছেন।

গুজরাতের জখাউয়ের বাসিন্দা এই বৃদ্ধ দম্পতি। জীবদ্দশায় এখনও পর্যন্ত তাঁরা তিনটি ঘূর্ণিঝড় দেখেছেন। তিন বারই ঝড়ের দাপটে তাঁদের কাঁচা ঘর উড়ে গিয়েছে। সমুদ্রের উপকূলে তার পরেও বার বার ঘর বানিয়েছেন দম্পতি। সারা জীবনের সঞ্চয় দিয়ে গড়ে তুলেছেন কুঁড়ে ঘর। ঝড় আসে, তাঁদের আস্তানা খড়কুটোর মতো উড়ে যায়। তবু নতুন বাসা বাঁধার উৎসাহ তাঁরা এখনও হারিয়ে ফেলেননি।

ঘর ভেঙে যাওয়ার আফশোস নেই দম্পতির। ‘বিপর্যয়ের’ আগে তাঁদের ভাঙা ঘর নিয়ে প্রশ্ন করা হলে বৃদ্ধ, বৃদ্ধা জানিয়েছেন, তাঁদের পাকা বাড়ি গড়ার সামর্থ্য নেই। কাঁচা বলেই ঘূর্ণিঝড়ে তাঁদের বাড়ি বার বার ভেঙে যায়। কিন্তু তাঁরা সৌভাগ্যবান যে, ওই এলাকায় ঝড়ে কখনও কারও মৃত্যু হয়নি। প্রাণ বাঁচাতে পারাটাই দম্পতির প্রাপ্তি।

বন্দর এলাকায় কৃষিকাজ করেই দিন কাটান হওয়া এবং উসমান। আপাতত জখাউ এলাকাতেই সমুদ্র থেকে দূরে একটি সরকারি ত্রাণশিবিরে তাঁরা আশ্রয় নিয়েছেন। নিজের হাতে তৈরি করা ঘর উড়ে গেলে তাঁদের আফশোস নেই। ঝড়বৃষ্টিতে চাষের জমির ক্ষতি হলে, ফসল নষ্ট হলে তাঁরা বিলাপ করেন।

‘বিপর্যয়ের’ তাণ্ডবে আবার ঘর ভাঙবে, জানেন বৃদ্ধ, বৃদ্ধা। তাঁরা জানিয়েছেন, এ বার আর নতুন করে ঘর গড়ার জন্য সঞ্চিত অর্থ তাঁদের কাছে নেই। তাঁরা দু’জন মিলে দিনমজুরি করে ঘর তৈরির টাকা জোগাড় করবেন। তার পর আরব সাগরের তীরে নতুন করে আবার মাথা তুলবে কাঁচা বাড়ি।

‘বিপর্যয়’ নিয়ে গুজরাতের এই বৃদ্ধ দম্পতি তেমন চিন্তিত নন। তাঁরা আশাবাদী, অতীতের মতোই এই ঘূর্ণিঝড়ের দাপটও সময়ের সঙ্গে সঙ্গে কমে যাবে।

গুজরাতের এই জখাউতেই বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা থেকে মধ্যরাতের মধ্যে আছড়ে পড়ার কথা ‘বিপর্যয়ের’। এখনও পর্যন্ত উপকূল এলাকা থেকে প্রায় এক লক্ষ মানুষকে নিরাপদ স্থানে সরিয়েছে বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Cyclone Biparjoy Gujarat
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE