বিজেপি সাংসদ মীনাক্ষী লেখি। —ফাইল চিত্র
সব বুথ ফেরত সমীক্ষায় ইঙ্গিত, দিল্লিতে ফের ক্ষমতায় আসতে চলেছে অরবিন্দ কেজরীবালের আম আদমি পার্টি (আপ)। কিন্তু মঙ্গলবার চূড়ান্ত ফল ঘোষণার আগে পর্যন্ত হাল ছাড়তে নারাজ বিজেপি। দলের নেতাদের দাবি, এগজিট পোল ‘একজ্যাক্ট’ ফলাফল নয়। ভোট গণনা পর্যন্ত কর্মীদের চাঙ্গা রাখতে গেরুয়া শিবিরের এই স্ট্র্যাটেজি বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা।
শনিবারই দিল্লির ৭০টি বিধানসভা আসনের ভোটগ্রহণ হয়েছে। সন্ধ্যার দিকে বুথ ফেরত সমীক্ষার ফল প্রকাশ করে বিভিন্ন সংস্থা। অধিকাংশ সমীক্ষার ফলেই ইঙ্গিত, একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে তৃতীয় বারের জন্য রাজধানী দিল্লির মুখ্যমন্ত্রীর মসনদে বসতে চলেছেন অরবিন্দ কেজরীবাল। কোনও কোনও সমীক্ষায় ইঙ্গিত, তাঁর দল আপ পেতে পারে ৬০টির কাছাকাছি আসন। ২০১৪ সালের নির্বাচনে তাদের আসন সংখ্যা ছিল ৬৭। সেখান থেকে কিছুটা কমতে পারে। অন্য দিকে বিজেপির আসন সংখ্যা ১০ থেকে ১৪ এর কাছাকাছি থাকতে পারে বলে অধিকাংশ সমীক্ষার ফলে ইঙ্গিত।
কিন্তু সমীক্ষার এই ফল মানতে নারাজ বিজেপি। শনিবার ভোটপর্ব মেটার পরেই রাতের দিকে বৈঠকে বসেন দলের শীর্ষ নেতৃত্ব। বৈঠকে ছিলেন খোদ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। এ ছাড়া ছিলেন দলের সাংসদরা এবং দিল্লি শাখার বর্ষীয়ান নেতারা। ভোটগ্রহণ পর্ব এবং ভোট পরবর্তী সমীক্ষার ফলাফল নিয়ে বৈঠকে আলোচনা হয়েছে বলে দলীয় সূত্রে খবর। বৈঠকের পরেই দলের তরফে এই সব বুথ ফেরত সমীক্ষার ফলাফল কার্যত উড়িয়ে দেন দলের নেতৃত্ব।
আরও পড়ুন: হ্যাটট্রিকের পথে কেজরীবাল, পূর্বাভাস দিল্লির সমীক্ষায়
বিজেপির নতুন দিল্লি কেন্দ্রের সাংসদ মীনাক্ষী লেখি বলেন, ‘‘এক্সিট পোল সঠিক অঙ্ক নয়। অতীতেও এমন বহু নজির রয়েছে, যেখানে সমীক্ষার ফল মেলেনি।’’ তাঁর যুক্তি, ভোটগ্রহণ হয়েছে অনেক রাত পর্যন্ত। কিন্তু ভোট পরবর্তী সমীক্ষা করা হয়েছে বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত। সমীক্ষা নিয়ে বৈঠকে পর্যালোচনা হয়েছে বলে জানিয়ে তাঁর মন্তব্য, ‘‘আমাদের ভোটাররা অনেক দেরিতে ভোট দিতে এসেছেন এবং রাত পর্যন্ত ভোট দিয়েছেন।’’
রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা অবশ্য মনে করিয়ে দিচ্ছেন, দেরিতে ভোট দেওয়া বিজেপির রণকৌশল ছিল না। গত বুধবার একটি সভায় অমিত শাহ বলেছিলেন, ‘‘আপনারা সপরিবারে সকাল সাড়ে ১০টার মধ্যে বুথে গিয়ে ভোট দিয়ে আসুন। আমি আপনাদের সিদ্ধান্ত জানি। ১১ তারিখের ফলাফল সবাইকে চমকে দেবে।’’ ফলে মীনাক্ষী লেখির ‘দেরি করে ভোট দেওয়া’র তত্ত্ব কতটা যুক্তিযুক্ত, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা।
আরও পড়ুন: শুধু চিনেই ৮০০! মৃত্যুর সংখ্যায় সার্স-কে পিছনে ফেলল করোনা
দেশ জুড়ে সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন (সিএএ), জাতীয় নাগরিকপঞ্জি (এনআরসি), জাতীয় জনসংখ্যা পঞ্জি (এনপিআর) নিয়ে তীব্র প্রতিবাদ-বিক্ষোভের আবহে দিল্লির লড়াই জেতা বিজেপির কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তাতে ওই সব ইস্যুতে জুতসই জবাব দিতে পারবেন নরেন্দ্র মোদী-অমিত শাহেরা। তা ছাড়া দিল্লির ভোটার তালিকায় সারা দেশের প্রতিনিধিত্ব রয়েছে। তাই রাজধানীর ভোটের ফলাফলে গোটা দেশের মনোভাবের প্রতিফলন অনেকটাই ফুটে ওঠে বলে মনে করেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের একাংশ। কিন্তু সমীক্ষার ফলাফল বিজেপির জয় কার্যত অসম্ভব। যদিও মীনাক্ষী লেখি আত্মবিশ্বাসী, ‘‘দিল্লিতে বিজেপিই সরকার গড়ছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy