Advertisement
E-Paper

মায়ানমার সীমান্ত নিয়ে কঠোর দিল্লি

বাড়ছে মাদক-বাণিজ্য ও রফতানি। উত্তর-পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলিতে অস্থিরতা তৈরির জন্য ফের সক্রিয় হচ্ছে জঙ্গিরা। অস্ত্র চোরাচালান হচ্ছে চোখ এড়িয়ে। আর এই গোটা প্রক্রিয়ায় রয়েছে চিনের ইন্ধন।

অগ্নি রায়

শেষ আপডেট: ২৫ মে ২০১৭ ০৩:১৭

বাড়ছে মাদক-বাণিজ্য ও রফতানি। উত্তর-পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলিতে অস্থিরতা তৈরির জন্য ফের সক্রিয় হচ্ছে জঙ্গিরা। অস্ত্র চোরাচালান হচ্ছে চোখ এড়িয়ে। আর এই গোটা প্রক্রিয়ায় রয়েছে চিনের ইন্ধন।

ভারত-মায়ানমার ১৬৪৩ কিলোমিটারের খোলা সীমান্তে অবাধ যাতায়াতের সুযোগ (দু’দেশের চুক্তি অনুযায়ী দু’প্রান্তের ১৬ কিলোমিটার পর্যন্ত ভিসাবিহীন যাতায়াত করা যায়) নিয়ে এ ভাবেই গড়ে উঠছে নৈরাজ্যের স্বর্গোদ্যান। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক সূত্রের খবর, পরিস্থিতির মোকাবিলায় সীমান্ত নীতিতে এ বার একটি বড় মাপের পরিবর্তন আনতে চলেছে নরেন্দ্র মোদী সরকার। সম্প্রতি সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, এই অবাধ যাতায়াতের ক্ষেত্রসীমায় প্রতি ২ কিলোমিটার অন্তর তৈরি করা হবে চেকপোস্ট। সীমান্তের ওপার থেকে আসা ব্যক্তিদের পরিচয়পত্র খতিয়ে দেখে তারপরেই তাদের ভারতে ঢোকার অনুমতি দেওয়া হবে। প্রয়োজনে জেরা করা হবে। মন্ত্রক সূত্রে খবর, শীঘ্রই মিজোরামে যাচ্ছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহ। মুখ্যমন্ত্রী লাল থানহাওলাকে সঙ্গে নিয়ে মায়ানমার সীমান্তে গিয়ে নিরাপত্তা পরিস্থিতি খতিয়ে দেখবেন তিনি।

মন্ত্রকের সংশ্লিষ্ট এক শীর্ষ কর্তার বক্তব্য, ‘‘অবাধ যাতায়াতের নীতি মানে এই নয় যে অপরাধীদেরও অবাধে অনুপ্রবেশ করতে দেওয়া হবে। এত দিন এই নীতির সুযোগ নিয়ে চোরাচালানকারী থেকে সন্ত্রাসবাদী, সবাই নানা ভাবে ঢুকে পড়েছে। গা ঢাকা দিয়েছে। শনাক্তকরণের ক্ষেত্রে সমস্যা আরও বেশি। কারণ, সীমান্তের ওপার এবং এপারের উপজাতিদের মধ্যে চেহারার বিন্দুমাত্র পার্থক্য নেই।’’

আরও পড়ুন: শিক্ষা দেবো, হুমকি পাক বায়ুসেনার

মন্ত্রক ঘরোয়া ভাবে স্বীকার করছে যে নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখে এই পদক্ষেপ আরও আগেই করা উচিত ছিল। বিশেষত ওপারে মায়ানমার সরকার কিন্তু অবাধ যাতায়াত নীতি থাকা সত্ত্বেও প্রতি কিলোমিটার অন্তর একটি করে চেক পোস্ট বসিয়ে রেখেছে।

সরকারের পরিসংখ্যান বলছে, গত চার বছরে ভারত এবং মায়ানমারে বেআইনি অস্ত্র রফতানি যথেচ্ছ ভাবে বেড়েছে। ১৮০টি আধুনিক আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার হয়েছে। ওই একই সময়সীমায় উদ্ধার হয়েছে ৫০ হাজার কিলোগ্রাম মাদক, যা নাকি ভারত-নেপাল সীমান্তে উদ্ধার হওয়া মাদকের পরেই দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। এছাড়া কিছু আন্তঃসীমান্ত সিন্ডিকেট এলাকার বিচ্ছিন্নতাবাদী শক্তিগুলিকে উস্কানি দিয়ে জঙ্গিপনায় মদত দিচ্ছে বলে আশঙ্কা গোয়েন্দাদের। মন্ত্রকের এক কর্তার কথায়, ‘‘অনেক ক্ষেত্রেই দেখা যাচ্ছে মাদক চক্রের সাহায্য নিয়ে জঙ্গি অনুপ্রবেশ ঘটছে। কারণ, সীমান্তের দুপারেই ওই চক্র স্থানীয় পুলিশের চোখে ধুলো দিয়ে সমান্তরাল চ্যানেল গড়ে তোলে। ফলে এই সিন্ডিকেটের সাহায্য নিলে, গা ঢাকা দিয়ে নাশকতা চালানো সুবিধেজনক।’’

বিদেশ মন্ত্রক সূত্রের দাবি, মায়ানমার সীমান্তে উত্তর-পূর্বের জঙ্গি গোষ্ঠীগুলিকে এক ছাতার তলায় আনার ব্যাপারে সক্রিয় চিনা সেনার একাংশ। কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সূত্রের খবর, আলফা, এনএসসিএন-খাপলাং এবং আরও ৭টি জঙ্গি সংগঠনকে একত্র করে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় ‘ইউনাইটেড ন্যাশনাল লিবারেশন ফ্রন্ট’ তৈরি করতে চিনের ভূমিকা রয়েছে। মাদক চোরাচালানের আড়ালে জঙ্গি পাচারের নকশাতেও চিনের পরোক্ষ সহায়তা রয়েছে বলেই মনে করা হচ্ছে।

Myanmar Border India Security
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy