নয়া ম্যাপে অরুণাচল প্রদেশ এবং লাদাখের আকসাই চিনকে ‘নিজেদের’ বলে দাবি করেছে চিন। মঙ্গলবার শি জিনপিংয়ের সরকার ২০২৩ সালের ‘স্ট্যান্ডার্ড ম্যাপ’ প্রকাশ করার পরে কড়া প্রতিক্রিয়া জানাল ভারত। ভারতীয় বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর বলেন, ‘‘এমন বিকৃত মানচিত্র প্রকাশ করা চিনের অভ্যাসে পরিণত হয়েছে। ওরা প্রতিবেশীর ভূখণ্ডকেও নিজের অংশ বলে দাবি করে।’’
কমিউনিস্ট পার্টি শাসিত একদলীয় চিনের সরকারি সংবাদমাধ্যম ‘গ্লোবাল টাইমস’ যে নতুন মানচিত্র প্রকাশ করেছে তাতে ‘স্বাধীন দ্বীপরাষ্ট্র’ তাইওয়ান এবং দক্ষিণ চিন সাগরকেও তাদের অংশ বলে চিহ্নিত করা হয়েছে। সাম্প্রতিক সময়ে আন্তর্জাতিক বিধি লঙ্ঘন করে দক্ষিণ চিন সাগরে চিনা ফৌজ আগ্রাসন চালিয়েছে বলে ফিলিপিন্স, ভিয়েতনামের মতো প্রতিবেশী দেশগুলি অভিযোগ তুলেছে। এই আবহে ভারতীয় বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র অরিন্দম বাগচী মঙ্গলবার বলেন, ‘‘অরুণাচল প্রদেশ এবং আকসাই চিন নিয়ে চিনের ভিত্তিহীন দাবি ভারত খারিজ করছে।’’
আরও পড়ুন:
২০২০ সালের জুনে গালওয়ান উপত্যকার রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের পর থেকে লাদাখের প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা (এলএসি)-তে উত্তেজনা রয়েছে। এই পরিস্থিতিতে আকসাই চিনের উপর বেজিংয়ের দাবি নতুন করে অশান্তির অনুঘটক হতে পারে কূটনীতি বিশেষজ্ঞদের একাংশের আশঙ্কা। প্রসঙ্গত, সম্প্রতি দক্ষিণ আফ্রিকায় ব্রিকস সম্মেলনের ফাঁকে সাক্ষাৎ হয় ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং চিনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের। সেই সাক্ষাৎপর্বে লাদাখ সমস্যা মেটাতে দুই রাষ্ট্রনেতা ‘একমত’ হয়েছেন বলে জানিয়েছিলেন ভারতীয় বিদেশ সচিব বিনয় কোয়াত্রা। এই আবহে অরুণাচল, লাদাখ নিয়ে নিয়ে চিনের এ হেন দাবি ঘিরে দু’দেশের সম্পর্কে নতুন টানাপড়েন তৈরি করল বলে মনে করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন:
প্রসঙ্গত, ২০২১ সালের ডিসেম্বরে নয়া সীমান্ত আইন কার্যকর করার সময় অরুণাচল প্রদেশের ১৫টি জায়গার নতুন নামকরণ করে বিজ্ঞপ্তি জারি করেছিল বেজিং। উত্তর-পূর্ব ভারতের ওই প্রদেশকে ‘দক্ষিণ তিব্বত’ বা ‘জাঙ্গনান’ প্রদেশ হিসেবে দেখানো হয়েছিল চিনা মানচিত্রে। এর পরে চলতি বছরের এপ্রিল মাসে চিনা অসামরিক প্রতিরক্ষা দফতর অরুণাচলের ১১টি এলাকার নাম পরিবর্তন করে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে। যার মধ্যে ছিল দু’টি উপত্যকা, দু’টি আবাসিক এলাকা, দু’টি নদী এবং পাঁচটি পর্বতশৃঙ্গ। দু’টি ক্ষেত্রেই কূটনৈতিক স্তরে প্রতিবাদ জানিয়েছিল নয়াদিল্লি।