Advertisement
১৬ মে ২০২৪
Bihar Caste Census

‘জাতগণনা করতে পারে না নীতীশ সরকার’! সুপ্রিম কোর্টে কেন্দ্রের হলফনামা ঘিরে বিতর্ক বিহারে

বিহার সরকারের জাতগণনার পদক্ষেপ সংবিধানের মৌলিক অধিকার এবং ১৪ নম্বর অনুচ্ছেদের (সমতা ও সাম্যের অধিকার) পরিপন্থী বলে আদালতে অভিযোগ করেছে আবেদনকারী পক্ষ।

Census Act allows only Central government to conduct census, MHA tells Supreme Court on Bihar Caste Survey

প্রতিনিধিত্ব মূলক ছবি।

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৯ অগস্ট ২০২৩ ১৬:১৪
Share: Save:

কেন্দ্রীয় সরকার ছাড়া জনগণনার অধিকার নেই কারও। বিহারে জাতগণনা ঘিরে মামলায় হলফনামা দিয়ে সুপ্রিম কোর্টে এ কথা জানাল নরেন্দ্র মোদী সরকার। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের পেশ করা হলফনামায় বলা হয়েছে, ‘‘১৯৪১ সালের আমদসুমারি সংক্রান্ত আইন অনুযায়ী এক মাত্র কেন্দ্রই যে কোনও জনগণনা করতে পারে। তবে রাজ্যগুলি চাইলে কোনও সমীক্ষা করতে পারে।’’

কেন্দ্রের এই হলফনামার পরেই শুরু হয়েছে রাজনৈতিক বিতর্ক। মঙ্গলবার আরজেডি সাংসদ মনোজ ঝা বলেন, ‘‘কেন্দ্র উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে জাতগণনা বন্ধ করতে চাইছে।’’ আরজেডি প্রধান লালুপ্রসাদের ছেলে তথা বিহারের উপমুখ্যমন্ত্রী তেজস্বী যাদব বলেন, ‘‘বিজেপির অনগ্রসর বিরোধী মুখ এ বার প্রকাশ্যে চলে এল।’’ বিহারের শাসকজোট ‘মহাগঠবন্ধন’-এর আর এক শরিক জেডিইউর সর্বভারতীয় সভাপতি লালন সিংহের অভিযোগ, রাজ্য সরকারের প্রতিটি পদক্ষেপে বাধা দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোয় আঘাত হানছে বিজেপি। যদিও বিহার বিজেপির সভাপতি সম্রাট চৌধুরি বলেন, ‘‘আমরা অনগ্রসর বিরোধী নই। সংবিধান এবং আইন মেনে কোনও সমীক্ষায় বিজেপির আপত্তি নেই।’’

প্রসঙ্গত, গত নভেম্বরে আর্থিক ভাবে পিছিয়ে থাকা মানুষদের জন্য সরকারি চাকরি এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ১০ শতাংশ আসন সংরক্ষণের জন্য সুপ্রিম কোর্ট সিলমোহর দেওয়ার পরেই দেশ জুড়ে জাতভিত্তিক জনগণনার দাবি তুলেছিলেন বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ। বিহারে দ্রুত জেডি (ইউ)-আরজেডি-কংগ্রেস-বামেদের ‘মহাগঠবন্ধন’ সরকার শুরু করে জাতগণনা। বস্তুত, সুপ্রিম কোর্টের রায়ের আগেই গত ৬ জুন নীতীশ সরকার জাতগণনার বিষয়ে বিজ্ঞপ্তি জারি করেছিল।

এর পর বিহার সরকারের সেই পদক্ষেপকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে মামলা দায়ের হয়েছিল পটনা হাই কোর্টে। আবেদনকারী পক্ষের দাবি ছিল, নীতীশ সরকারের এই পদক্ষেপ ‘বৈষম্যমূলক এবং অসাংবিধানিক’। এই পদক্ষেপ সংবিধানের মৌলিক অধিকার এবং ১৪ নম্বর অনুচ্ছেদের (সমতা এবং সাম্যের অধিকার) পরিপন্থী বলে অভিযোগ আবেদনকারীদের। বিহারে জাতগণনার প্রথম পর্ব ৭ থেকে ২১ জানুয়ারি হয়েছিল। ১৫ এপ্রিল থেকে শুরু হওয়া দ্বিতীয় পর্ব ১৫ মে পর্যন্ত চলার কথা ছিল৷ কিন্তু তার আগে মে মাসে জাতগণনার উপর স্থগিতাদেশ দিয়েছিল পটনা হাই কোর্ট। কিন্তু এর পরে গত ১ অগস্ট পটনা হাই কোর্ট সেই স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার করায় জাতগণনার বিরোধীরা শীর্ষ আদালতের দ্বারস্থ হয়েছে।

সরকারি চাকরি এবং শিক্ষাক্ষেত্রে ওবিসিদের জন্য এখন ২৭ শতাংশ আসন সংরক্ষিত থাকে। কিন্তু ওবিসি সংগঠনগুলির দাবি, তাদের সংখ্যা মোট জনসংখ্যার ৫০ শতাংশের কাছাকাছি। জাতগণনায় তা প্রমাণিত হবে। স্বাভাবিক ভাবেই ওবিসিদের জন্য আরও বেশি সংরক্ষণের দাবি উঠবে। এই পরিস্থিতিতে সরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং চাকরিতে অসংরক্ষিত (জেনারেল) আসন আরও কমার সম্ভাবনা। সে ক্ষেত্রে মেধার উপর আঘাত আসবে বলে অভিযোগ জাতগণনার বিরোধী জনস্বার্থ মামলার আবেদনকারীদের।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE