সব ঠিকঠাক থাকলে আগামী বছরের গোড়াতেই পাহাড়ে পুরসভা ও পঞ্চায়েত ভোট হতে চলেছে। তার আগে একাধিক সম্প্রদায়ের জন্য উন্নয়ন বোর্ড গড়ে ও কালিম্পংকে আলাদা জেলা করে পাহাড়েও নিজেদের ঘর অনেকটা গুছিয়ে নিয়েছে তৃণমূল। ফলে কিছুটা হলেও উদ্বেগ বেড়েছে মোর্চার অন্দরে। তাই তারা ফিরে গেল পুরনো গোর্খাল্যান্ডের দাবিতে। এবং সেটাও নয়াদিল্লিতে, রীতিমতো মঞ্চ বেঁধে।
সোমবার থেকে মোর্চার এই পাঁচ দিনের কর্মসূচি শুরু হল যন্তরমন্তরে। প্রথম দু’দিন ধর্না। তার পরের দু’দিন ভুখ হরতাল। শেষ দিন রাজঘাট থেকে যন্তরমন্তর পর্যন্ত মিছিল। আগামিকাল দিল্লি এসে এই আন্দোলনে যোগ দেবেন মোর্চা প্রধান বিমল গুরুঙ্গ।
প্রশ্ন হল, হঠাৎ আবার গোর্খাল্যান্ডকে সামনে রেখে আন্দোলন কেন মোর্চার? দিল্লিতেই বা তাঁরা মঞ্চ বাঁধলেন কেন?
পাহাড় রাজনীতির সঙ্গে ওয়াকিবহালরা বলছেন, একাধিক উন্নয়ন বোর্ড এবং নতুন জেলার চাপে মোর্চা এখন দিশেহারা। গত বিধানসভা ভোটের সময়েই দেখা গিয়েছে, ভাঙন ধরেছে মোর্চার ভোটে। তার উপরে আন্দোলনের ক্ষেত্রে তৈরি হয়ে পারিপার্শ্বিক চাপ। একে তো পাহাড়েও বন্ধের রাজনীতি প্রায় অকেজো করে দিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তার উপরে পর্যটন মরসুমে আন্দোলনের ডাক দিয়ে ব্যবসায়ীদের ক্ষোভের মুখেও পড়তে হয়েছে মোর্চা নেতৃত্বকে। এমনকী, পুজোর আগে ডাকা বন্ধকেও পরে প্রতীকী বলে ব্যাখ্যা করে গুরুঙ্গকে বলতে হয়েছে, পর্যটকদের নিরাপত্তার দায়িত্ব তাঁর।
এর মধ্যে নোট বাতিলের আন্দোলনকে পাহাড়েও পৌঁছে দিতে চাইছে তৃণমূল। দলীয় নেতাদের বক্তব্য, পাহাড়ের মানুষের কি অসুবিধা হচ্ছে না? তাঁরাও তবে আন্দোলনের শরিক! সেই প্রচারও উদ্বেগ বাড়াচ্ছে মোর্চার। আর মদন তামাঙ্গ হত্যা মামলায় চার্জশিটে নাম থাকার খাঁড়া তো মাথার উপরে আছেই। সম্প্রতি সিবিআই অবশ্য হাইকোর্টে বলেছে, গুরুঙ্গদের জেরা করার প্রয়োজন নেই। তবু আশঙ্কা যাচ্ছে না।
পাহাড়ের অনেকেই বলছেন, পাহাড়ে এখন আন্দোলন করতে না পেরেই দিল্লি যেতে হয়েছে গুরুঙ্গদের। নোট বাতিল নিয়ে বিজেপি-তৃণমূলের এই টানাপড়েনের মধ্যে রাজ্য ভাগের দাবি নিয়ে কেন্দ্র কী পদক্ষেপ করে, সে দিকেই তাকিয়ে আছে মোর্চা। মোর্চা নেতা রোশন গিরির বক্তব্য, বিজেপি গোর্খাল্যান্ডের দাবি নিয়ে অতীতেও নরম মনোভাব দেখিয়েছে। আশা করা হচ্ছে, এ বারও সঙ্গে থাকবে। যা জানার পরে পাহাড়ে তৃণমূলের অন্যতম নেতা বিন্নি শর্মার প্রতিক্রিয়া, ‘‘ভোট এলেই ঝুলি থেকে গোর্খাল্যান্ডের তাস দেখিয়ে আর কাজ হবে না। মানুষ এ বার যোগ্য জবাব দেবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy