তেজস্বী যাদব (বাঁ দিকে) এবং দয়ানিধি মারান। —ফাইল চিত্র।
ডিএমকে সাংসদের মন্তব্যে এ বার ইন্ডিয়ার অন্দরেই উঠল বিতর্কের ঝড়। জোট শরিক হলেও এমকে স্ট্যালিনের দলের কড়া সমালোচনা করল লালুপ্রসাদ যাদবের আরজেডি। ঘটনার সূত্রপাত ভাইরাল হওয়া একটি ভিডিয়োকে ঘিরে। সেই ভিডিয়োয় তামিলনাড়ুর শাসকদল ডিএমকে-র অন্যতম শীর্ষনেতা তথা সাংসদ দয়ানিধি মারানকে বলতে শোনা যায়, “যাঁরা বিহারে শুধু হিন্দি পড়েন, তাঁরাই তামিলনাড়ুতে এসে বাড়ি বানানোর কাজ করেন, শৌচাগার পরিষ্কার করেন।”
দয়ানিধির এই মন্তব্য ঘিরে বিতর্ক শুরু হয়ে যায়। বিহারের শাসকজোটের অন্যতম শরিক আরজেডি-র তরফে উপমুখ্যমন্ত্রী তেজস্বী যাদব বলেন, “এটা নিন্দনীয়। অন্য রাজ্যের নেতারা যে দলেরই সদস্য হোন না কেন, তাঁদের এই ধরনের মন্তব্য থেকে বিরত থাকা উচিত।” একই সঙ্গে লালু-পুত্রের সংযোজন, “এই দেশ একটাই। আমরা অন্য রাজ্যের মানুষদেরও সম্মান করি। আশা করি সেই সম্মানটা আমরাও ফিরে পাব।”
বিতর্কের মুখে ডিএমকে-র তরফে অবশ্য বলা হচ্ছে, মূল বিষয় থেকে নজর ঘোরাতে বিজেপি পুরনো ওই ভিডিয়োকে সমাজমাধ্যমে ছড়িয়ে দিয়েছে। উল্লেখ্য যে, তামিলনাড়ুর বন্যা পরিস্থিতির প্রেক্ষিতে কেন্দ্রীয় অর্থসাহায্য নিয়ে সম্প্রতি বাগ্যুদ্ধ চলে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন এবং স্ট্যালিন-পুত্র উদয়নিধি স্ট্যালিনের বিরুদ্ধে। দুর্যোগ পরিস্থিতিতেও কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধে বিমাতৃসুলভ আচরণ করার অভিযোগ তোলে ডিএমকে। বিতর্কের আবহে ডিএমকে-র বক্তব্য, একটি বিতর্ককে ধামাচাপা দিতে পুরনো ভিডিয়ো প্রকাশ্যে এনে নতুন বিতর্কে ইন্ধন জোগাচ্ছে বিজেপি।
তবে বিরোধী জোটের একটি সূত্রের খবর যে, ডিএমকে নেতাদের মন্তব্যে বার বার অস্বস্তিতে পড়তে হচ্ছে ‘ইন্ডিয়া’র নেতাদের। এর আগে দেশ থেকে ‘সনাতন ধর্মকে মুছে ফেলা’র ডাক দিয়ে বিতর্কে জড়িয়েছিলেন উদয়নিধি। এই নিয়ে বিজেপির আক্রমণের মুখে রীতিমতো সাফাই দিতে হয়েছিল অন্য বিরোধী নেতাদের। এ বার উদয়নিধির দলেরই আর এক নেতার মন্তব্যে বিতর্কের সূত্রপাত হল।
বিতর্কিত ভিডিয়োটিতে দেখা যাচ্ছে, ভাষা নিয়ে কথা বলতে বলতে হঠাৎই দয়ানিধি বলতে শুরু করেন, “যে হেতু তাঁরা (বিহারের লোকজন) ইংরেজিতে পড়াশোনা করেন, তাই তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থায় মোটা বেতন পান। তাঁরা বলেন হিন্দি! হিন্দি!” তার পরেই তিনি দাবি করেন যে, যাঁরা বিহারে হিন্দিতে পড়াশোনা করেন, তাঁরা তামিলনাড়ুতে শৌচাগার পরিষ্কার করেন। এই নিয়ে বিতর্ক শুরু হতেই বিরোধী জোটের ফাটল আরও চওড়া করতে উদ্যোগী হয়েছে বিজেপি। দলের নেতা অমিত মালবীয় নিজের এক্স হ্যান্ডলে লেখেন, “এই নিয়ে নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করুন নীতীশ কুমার এবং রাহুল গান্ধী।” দয়ানিধির ওই মন্তব্যই যদি বিরোধী জোটের অঘোষিত অবস্থান হয়, তবে ‘ইন্ডিয়া’র বিভেদমূলক নীতি প্রকাশ্যে চলে এল বলে আক্রমণ শানিয়েছে বিজেপি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy