Advertisement
E-Paper

আধারের দৌলতেই মূক-বধির ছেলে ফিরল বাড়িতে

উল্লেখ্য, এর আগে আধারের সৌজন্যে গত এপ্রিলে দু’বছর পর বাড়ি ফিরতে পেরেছিল লাতুরের এক প্রত্যন্ত গ্রামের ছেলে সঞ্জয় গাঁতে। একই ভাবে চলতি মাসের প্রথম সপ্তাহে মধ্যপ্রদেশের নরেন্দ্র তার পরিবারকে ফিরে পান এই আধারের সৌজন্যেই।

আর্যভট্ট খান

শেষ আপডেট: ২৩ জুলাই ২০১৭ ০৪:৪৬
ফেরা: বাবা অশোক যাদবের সঙ্গে দিলীপ। —নিজস্ব চিত্র।

ফেরা: বাবা অশোক যাদবের সঙ্গে দিলীপ। —নিজস্ব চিত্র।

মূক-বধির ছেলেকে ফিরে পেতে থানায় অভিযোগ করেছিলেন। নিরুদ্দেশ হওয়া ছেলের ছবি দিয়ে লিফলেট তৈরি করে বিলি করেছিলেন। ঠাকুর-দেবতার কাছে মানতও রেখেছিলেন। কিন্তু গত দেড় বছরে কোনও আশার আলো দেখতে পায়নি পরিবারটি। শেষ পর্যন্ত আধারেই আলো!

আধার কার্ডের সৌজন্যে দেড় বছর পরে বিহারের বাঁকা জেলার ফুলডুমরি গ্রামের বাসিন্দা অশোক যাদব ফিরে পেলেন তাঁর ছেলে দিলীপকে। গত কাল সন্ধ্যায় দুমকার চাইল্ড ওয়েলফেয়ার অফিস থেকে নিয়ে গেলেন তাঁর হারানো ছেলেকে।

উল্লেখ্য, এর আগে আধারের সৌজন্যে গত এপ্রিলে দু’বছর পর বাড়ি ফিরতে পেরেছিল লাতুরের এক প্রত্যন্ত গ্রামের ছেলে সঞ্জয় গাঁতে। একই ভাবে চলতি মাসের প্রথম সপ্তাহে মধ্যপ্রদেশের নরেন্দ্র তার পরিবারকে ফিরে পান এই আধারের সৌজন্যেই। দিলীপের ঘটনাটি ‘আধারে আলোর’ তৃতীয় ঘটনা। এবং তিনটি ক্ষেত্রেই হারিয়ে যাওয়া ছেলেরা মূক ও বধির।

কিন্তু কী ভাবে ফিরল দিলীপ? তার বাড়ির ঠিকানা খুঁজে পাওয়ার মরিয়া চেষ্টা চালিয়েছিল দুমকা চাইল্ড ওয়েলফেয়ার কমিটিও। দিলীপ লেখাপড়াও জানত না। তাই লিখেও কিছু জানাতে পারেনি। কমিটির চেয়ারম্যান অমরেন্দ্র যাদব বলেন, ‘‘অনেক চেষ্টা চালিয়েও আমরা ওর কাছ থেকে কিছুই জানতে পারিনি।’’

আরও পড়ুন: কথা বলে বিরোধ মেটাও, ভারত-চিন দু’পক্ষকেই পেন্টাগনের বার্তা

দিলীপকে দেড় বছর আগে দেওঘর থেকে উদ্ধার করে সেখানকার চাইল্ড ওয়েলফেয়ার কমিটি। তিন-চার মাস পর দিলীপ সেখান থেকে পালিয়ে দুমকায় চলে আসে। দুমকার লালঝাড়ি থানার পুলিশ দিলীপকে উদ্ধার করে ফের তাকে দুমকার চাইল্ড ওয়েলফেয়ার অফিসের হোমে দিয়ে আসে। ওই হোমেই দিন কাটতে থাকে দিলীপের। হোমের আধিকারিক অনিল ঝা বলেন, ‘‘ছেলেটি বাড়ি যাওয়ার জন্য খুব কান্নাকাটি করত। ফের পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টাও করেছে। হোমে তাকে চোখে চোখে রাখা হতো। ও পড়াশোনাও শুরু করেছিল।’’

সম্প্রতি হোমের আবাসিকদের আধার কার্ড বানানোর কর্মসূচি নেওয়া হয়। দিলীপের আধার কার্ড করতে গিয়ে ওর ফিঙ্গারপ্রিন্ট নেওয়ার সময় ‘আধার সিস্টেম’ জানায়, দিলীপের আধার কার্ড হয়ে গিয়েছে। নতুন করে করা যাবে না। অমরেন্দ্রবাবু জানান, এটা জানার পরেই তারা এক সাইবার এক্সপার্টকে ডাকেন। ওই এক্সপার্টই দিলীপের আধার তথ্য বের করে দেন। জানা যায় দিলীপের বাবার নাম, বাড়ির ঠিকানা।

ছেলেকে ফিরে পেয়ে আনন্দে আত্মহারা অশোকবাবু। তাঁর কথায়, ‘‘যেন নতুন করে জন্ম হল ছেলের।’’ তাঁর আর্জি, প্রত্যেক বাবা-মা’ই যেন তাঁদের ছেলেমেয়েদের আধার কার্ড করিয়ে রাখেন। তবে দিলীপ এই হোমের স্কুলেই পড়তে চায়। সে কারণে কয়েকদিন গ্রামে পরিবারের সঙ্গে কাটিয়ে সে ফের ফিরে আসবে এই হোমেই। তবে হারিয়ে যাওয়া ছেলে হিসেবে আর নয়।

Aadhaar card Dumb-deaf Child Welfare রাঁচী
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy