বিধান ভবনে খড়্গের ছবিতে লেপে দেওয়া হল কালি, পরে দুধ দিয়ে ধুয়ে মোছা হল কালির প্রলেপ। নিজস্ব ছবি।
পশ্চিমবঙ্গে দলের সদর অফিসে কালি লেপে দেওয়া হয়েছিল সর্বভারতীয় সভাপতির ছবিতে। আর বিকেলে সেই সভাপতির ছবিই দুধ দিয়ে ধোয়া হল। রবিবার এমনই ঘটনা ঘটেছে প্রদেশ কংগ্রেসের সদর দফতর বিধান ভবনে। তৃণমূলের সঙ্গে সম্পর্ক নিয়ে ‘টানাপড়েনে’র আবহে শনিবারই প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরীকে নিশানা করেছিলেন কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খড়্গে। তা নিয়ে কংগ্রেসের অন্দরে তো বটেই, রাজ্য-রাজনীতিতে শোরগোলের মধ্যে রবিবার কলকাতায় প্রদেশ কংগ্রেস ভবনে খড়্গের ছবিতে লেপে দেওয়া হল কালো কালি! চাপে পড়ে কংগ্রেস নেতৃত্ব জানায়, এই ঘটনার নেপথ্যে তৃণমূলের হাত রয়েছে। শাসকদল অবশ্য সেই অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
বিধান ভবন যে এলাকায় পড়ে তা মধ্য কলকাতা সাংগঠনিক জেলা কংগ্রেসের অন্তর্গত। মধ্য কলকাতা কংগ্রেস নেতৃত্বের দাবি, ভোরের দিকে বিধান ভবনে থাকা কংগ্রেস সভাপতির ছবিতে কালি লাগিয়ে দেওয়া হয়। সঙ্গে কালো কালি দিয়ে লেখা হয়, ‘তৃণমূলের দালাল’। এত সকালে ঘটনা ঘটায় জানা যায়নি কে তা ঘটিয়েছেন। তবে মধ্য কলকাতা কংগ্রেসের অভিযোগ, প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীরের সঙ্গে এআইসিসির শীর্ষ নেতৃত্বের ভুল বোঝাবুঝি তৈরি করতেই এই ঘটনা ঘটিয়েছে তৃণমূল। এন্টালি বিধানসভার মধ্যেই পড়ে বিধান ভবন। এন্টালি বিধানসভার মধ্যেই পড়ে বিধান ভবন। কংগ্রেসের আনা অভিযোগ প্রসঙ্গে তৃণমূল বিধায়ক স্বর্ণকমল সাহা বলেন, ‘‘আমাদের ছেলেদের কি মাথা খারাপ হয়েছে যে এ সব কাজ করতে যাবে। ওদের দলের অর্ন্তদ্বন্দ্বের কারণেই এমন ঘটনা ঘটেছে। মল্লিকার্জুন খড়্গের কথা অধীরবাবু মানতে পারছেন না। এই ঘটনা তারই ফল। ভোটের সময় আমাদের লোকজন ভোট নিয়ে ব্যস্ত, ওদের পার্টি অফিসে আমাদের লোকেরা কি করতে যাবে?’’
খড়্গের ছবিতে কালি লাগানোর খবর চাউর হতেই সক্রিয় হয় মধ্য কলকাতা জেলা কংগ্রেস। তাদের উদ্যোগেই খড়্গের ছবি দুধ দিয়ে ধুইয়ে কালি মোছা হয়। পরে কংগ্রেসের তরফে এই ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়ে এন্টালি থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়। উল্লেখ্য, ভোটপর্বের মাঝেই শনিবার প্রদেশ কংগ্রেসের সঙ্গে কংগ্রেস হাইকমান্ডের মতবিরোধ প্রকাশ্যে চলে এসেছে। দেশে বিরোধী জোট ‘ইন্ডিয়া’ সরকারে এলে তৃণমূল কী ভাবে সমর্থন করবে, তা নিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মন্তব্যে বিতর্ক দানা বেঁধেছিল সম্প্রতি। তাতে মমতাকে বিঁধেছিলেন অধীর। সেই বিতর্কে খড়্গে মমতার পাশে দাঁড়িয়ে অধীরকেই কড়া বার্তা দিয়েছেন। মুম্বইয়ে শনিবার বিজেপি-বিরোধী জোট এমভিএ-র সভার পরে এই নিয়ে প্রশ্ন হওয়ায় খড়্গে বলেছেন, ‘‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তার পরে আবার বিবৃতি দিয়েছেন, সরকার তৈরি হলে তিনি তাতে যোগ দেবেন। উনি তো ‘ইন্ডিয়া’ জোটের সঙ্গেই রয়েছেন।’’ প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতির বক্তব্য নিয়ে ফের প্রশ্ন হওয়ায় খড়্গের মন্তব্য, ‘‘অধীর চৌধুরীর প্রসঙ্গে এটাই বলি, তিনি দলের সিদ্ধান্ত নেওয়ার কেউ নন। সিদ্ধান্ত আমরা নেব, দলের হাইকমান্ড নেবে। হাইকমান্ডের তৈরি করা রাস্তা যদি কেউ অনুসরণ করতে না চায়, তবে তাকে বেরিয়ে যেতে হবে!’’ তারপরেই এই ঘটনা ঘটায় কংগ্রেসের অভ্যন্তরেই অর্ন্তদ্বন্দ্ব নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।
কংগ্রেস সভাপতি খাড়গে যতই কড়া বার্তা দিন, পশ্চিমবঙ্গে দলের অস্তিত্ব রক্ষায় যেটা প্রয়োজন সে পথেই তিনি হাঁটবেন বলেও রবিবার স্পষ্ট করে দিয়েছেন অধীর। তিনি বলেছেন, ‘‘এই বাংলায় যে মহিলা আমাদের খতম করেছেন, তাঁর সঙ্গে দোস্তি করতে পারি না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy