অরবিন্দ কেজরীওয়াল। —ফাইল চিত্র।
দিল্লিতে রামায়ণের সুন্দরকাণ্ড পাঠ তো মুম্বইয়ে আরতি। পুণেতে রামের বিরাট কাট আউট তো আমদাবাদে বাজি ফাটছে নিরবচ্ছিন্ন। অযোধ্যার রাম উৎসব যেন আজ ছড়িয়ে গেল দেশ জুড়ে।
জনতার এই উৎসব থেকে নিজেদের বিযুক্ত রেখে চলতি আবেগের বিপরীতে হাঁটতে চাইলেন না কংগ্রেস-সহ কোনও বিরোধী দলের নেতাই। অরবিন্দ কেজরীওয়াল থেকে শশী তারুর, অখিলেশ সিংহ যাদব থেকে উদ্ধব ঠাকরে সবাই নিজেদের মতো করে রাম ভজনায় মাতলেন। অন্য দিকে, অযোধ্যা থেকে ফিরেই দিল্লিতে লোককল্যাণ মার্গে নিজের বাসভবনে ‘রামজ্যোতি’ (ব্রোঞ্জের প্রদীপদানে আলো) জ্বালালেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।
দিল্লিতে গত কয়েক দিন ধরেই প্রস্তুতি চলছিল বাইশে জানুয়ারিকে উৎসবময় করার। দীপাবলির দিনের মতোই বাজি ফেটে গিয়েছে দিনভর। রাস্তার মোড়ে মোড়ে লঙ্গর, অস্থায়ী মন্দির এবং রামের বিরাট ছবি। আলোকিত সরকারি অফিস, স্থানীয় আবাসন। দিল্লির ৭০টি বিধানসভা নির্বাচনী ক্ষেত্রে আপ-এর পক্ষ থেকে শোভাযাত্রা, সুন্দরকাণ্ড পাঠের আয়োজন করা হয়েছিল নিখুঁত ভাবে। রবিবার থেকে শুরু হয়েছে দিল্লি সরকারের শিল্প, সংস্কৃতি এবং ভাষা দফতরের পরিচালনায় রামলীলার অনুষ্ঠান। দিল্লির বেশির ভাগ রাস্তায় কমলা রংয়ের বেলুন আর পতাকায় সাজানো হয়েছে। পার্কে ফুল দিয়ে তৈরি রামের মুখ। এই শৈত্যপ্রবাহকে অগ্রাহ্য করে ভোর থেকে বিভিন্ন মন্দিরের সামনে দীর্ঘ লাইন। অভিজাত খান মার্কেট ভিড়ে ভিড়াক্কার, সেখানে বড় স্ক্রিনে রামলালার ‘প্রাণপ্রতিষ্ঠা’ দেখার জন্য।
গোদাবরী নদীর তীরে আজ মহাআরতির ব্যবস্থা করে উদ্ধবপন্থী শিবসেনা। রামমন্দির আন্দোলনের ইতিহাসের সঙ্গে জড়িয়ে থাকা ঠাকরে পরিবারের সদস্য উদ্ধবের আজ অযোধ্যার অনুষ্ঠানে না যাওয়াকে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করা হচ্ছে। বিশেষ করে মহারাষ্ট্রে যখন তাঁর হিন্দুত্বের পরিচয় রাজনৈতিক চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়েছে, তখনই তিনি এই ঝুঁকি নিয়েছেন। আমদাবাদের কলোনিগুলির সামনে বিরাট স্ক্রিন লাগিয়ে রামমন্দিরের অনুষ্ঠানের সম্প্রচার চলেছে সকাল থেকে। সঙ্গে দিনভর রামধুন। বাইক এবং গাড়িতে উড়েছে রামের ছবি দেওয়া পতাকা, যে ভাবে স্বাধীনতা দিবসে তিরঙ্গা দেখা যায়।
শশী তারুরের মতো কংগ্রেসের কিছু নেতা তাঁদের এক্স হ্যান্ডলে রাম ভজনা করেছেন, এটা বোঝাতে যে তাঁরা রামমন্দিরের আবেগের বিরোধী নন। রাজনৈতিক মহলের মতে, লোকসভা ভোটের আগে হিন্দুত্বের এই উন্মাদনা শেষ পর্যন্ত জনমানসকে কত দূর ভাসাবে, তা নিয়ে নিঃসন্দেহ হতে পারছে না বিরোধী শিবির।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy