Advertisement
E-Paper

‘বাড়িতে আগুন লাগিয়েছিল মাদকাসক্ত ছেলে, চুপ ছিলাম লজ্জায়’! পুত্রমৃত্যু, পুত্রবধূর সঙ্গে ‘ঘনিষ্ঠতা’ বিতর্কে দাবি প্রাক্তন পুলিশকর্তার

পুত্রের রহস্যমৃত্যুতে এফআইআর দায়ের হয়েছে প্রাক্তন পুলিশকর্তার বিরুদ্ধে। খুনের মামলায় নাম রয়েছে তাঁর স্ত্রী এবং পুত্রবধূর বিরুদ্ধেও।

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ২২ অক্টোবর ২০২৫ ১২:১৫
Ex-Punjab DGP Mohammad Mustafa\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\'s claim amid twists in son Aqil Akhtar death case sparks row dgtl

(বাঁদিকে) প্রাক্তন আইপিএস অফিসার মহম্মদ মোস্তাফা। (ডান দিকে) পুত্র আকিল আখতার। —ফাইল চিত্র।

স্কুলজীবন থেকে পুত্র নেশাগ্রস্ত ছিলেন। নেশা করে বাড়ির সকলের উপরে অত্যাচার করতেন। মানসিক ভাবে সুস্থও ছিলেন না। বিতর্কে জড়িয়ে সদ্যোমৃত পুত্র আকিল আখতার সম্পর্কে এমনই মন্তব্য করলেন তাঁর বাবা তথা পঞ্জাব পুলিশের প্রাক্তন ডিজি মহম্মদ মুস্তাফা।

পুত্রের রহস্যমৃত্যুতে এফআইআর দায়ের হয়েছে মুস্তাফার বিরুদ্ধে। খুনের মামলায় নাম রয়েছে তাঁর স্ত্রী এবং পুত্রবধূ এবং কন্যারও। কারণ, মৃত্যুর আগে একটি ভিডিয়োয় আকিল দাবি করেছিলেন, তাঁর স্ত্রীর সঙ্গে বাবার অবৈধ সম্পর্ক রয়েছে (ভিডিয়োর সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার ডট কম)। আশঙ্কা করেছিলেন, এই ‘সত্য’ প্রকাশ্যে আনার জন্য তাঁকে খুন করা হতে পারে। ওই ভিডিয়ো প্রকাশ্যে আসার সঙ্গে সঙ্গে মঙ্গলবার মুখ খোলেন পঞ্জাবের প্রাক্তন ডিজি। তাঁর দাবি, পুত্রের মৃত্যুকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র হচ্ছে তাঁর এবং তাঁর পরিবারের বিরুদ্ধে। ২০২১ সালে পুলিশজীবন থেকে অবসর নেওয়ার পর কংগ্রেসে যোগ দেন মুস্তাফা। স্ত্রী রাজ়িয়া সুলতানা মালেরকোটলার তিন বারের বিধায়ক। ২০১৭ থেকে ২০২২ সাল পঞ্জাবের মন্ত্রীও ছিলেন। তাঁদের একমাত্র পুত্র আকিলের মৃত্যু হয় গত বৃহস্পতিবার। হরিয়ানার পঞ্চকুলার বাড়ি থেকে তাঁর দেহ উদ্ধারের পর তদন্তে নামে হরিয়ানা পুলিশ।

মুস্তাফা এবং তাঁর পরিবারের দাবি, মাত্রাতিরিক্ত ওষুধ খেয়ে মৃত্যু হয়েছে আকিলের। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশও তাতে মান্যতা দিয়ে জানিয়েছিল, আকিলের নানা রকম শারীরিক সমস্যা ছিল। কিন্তু তদন্তে নেমে আকিলের কয়েকটি ভিডিয়ো পায় পুলিশ। তাতে মোড় ঘুরে যায় তদন্তের। খুনের অভিযোগ দায়ের হয় প্রাক্তন ডিজি, তাঁর স্ত্রী এবং পুত্রবধূর বিরুদ্ধে। মৃত্যুর সপ্তাহখানেক আগে একটি ভিডিয়োবার্তায় আকিল বলেছিলেন, ‘‘আমি আমার বাবার সঙ্গে আমার স্ত্রীর সম্পর্কের কথা জানতে পেরেছি। আমি অনেক চাপের মধ্যে রয়েছি। মানসিক ভাবে বিধ্বস্ত... প্রতিদিন অনুভব করছি যে, ওরা আমাকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসাবে।’’

ওই ভিডিয়োটির সত্যতা যাচাই করছে পুলিশ। এর মধ্যে ছেলের নানা ‘কুকর্ম’ নিয়ে মুখ খুলেছেন অভিযুক্ত প্রাক্তন আইপিএস অফিসার। তাঁর দাবি, গত ১৮ বছর ধরে মাদক সেবন করছিলেন আকিল। বিয়ের পর মাদকের নেশা আরও বেড়ে যায়। নেশা করে স্ত্রীর উপর শারীরিক এবং মানসিক নির্যাতন করতেন পুত্র। তাঁর আরও দাবি, যে ভিডিয়ো নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়েছে, সেটি মাদক সেবনের পরেই তৈরি করেছিলেন পুত্র।

অন্য দিকে, আকিল পরিবারের অন্যান্য সদস্যের বিরুদ্ধেও গুরুতর অভিযোগ করেছিলেন। তাঁর সেই ভিডিয়ো উদ্ধারের পর ভিত্তিতে বাবা-মা এবং স্ত্রীর বিরুদ্ধে বেশ কিছু গুরুতর ধারায় মামলা রুজু করেছে হরিয়ানা পুলিশ। এর অনতিবিলম্বে সাংবাদিক বৈঠক করেন মুস্তাফা বলেন, ‘‘প্রায় ১৮ বছর ধরে মাদক সেবন করছিল ছেলে। এর ফলে ওর মানসিক অবস্থা খারাপ হয়ে গিয়েছিল। প্রায়শই স্ত্রীকে মারধর করত।’’ ছেলের ছোটবেলা থেকে যুবক হয়ে ওঠার সময়ে নানা ঘটনার কথা সামনে এনেছেন পঞ্জাবের প্রাক্তন ডিজি। তিনি বলেন, “দেহরাদূনের ওয়েলহ্যাম বয়েজ় স্কুলে দশম শ্রেণিতে পড়ার সময় থেকেই ও মাদকাসক্ত হয়ে পড়েছিল। আমার বদলির চাকরি। চণ্ডীগড়ের একাধিক স্কুল থেকে ছেলেকে বহিষ্কার করা হয়। ২০০৭ সাল থেকে ছেলের এই আসক্তি দূর করার জন্য চিকিৎসকের শরণাপন্ন হই আমরা। তার পর কিছু দিন ভাল ছিল। কিন্তু আবার মাদকাসক্ত হয়ে পড়ে ছেলে।’’ মুস্তাফা আরও বলেন, ‘‘মানসিক অসুস্থতার কারণে নানা জিনিস কল্পনা করতে শুরু করেছিল আকিল। নেশার টাকার জোগাড় করতে স্ত্রী এবং মাকে হয়রানি করত। এমনকি, একবার আমাদের বাড়িতে আগুনও ধরিয়ে দিয়েছিল। আমরা ছেলের বিরুদ্ধে একাধিক বার পুলিশে অভিযোগ দায়ের করেছি। কিন্তু যত হোক, নিজেরই রক্ত তো, শেষমেশ অভিযোগ প্রত্যাহার করে নিতাম।’’ তিনি জানান, ২০০৮ সালে মাকে পিটিয়ে জখম করেছিলেন আকিল। পরিবারের মানসম্মানের কথা ভেবে তখন বিষয়টি চেপে যান সকলে।

প্রাক্তন ডিজি-র দাবি, তাঁর ছেলে মানসিক ভাবে অসুস্থ ছিলেন। প্রায়শই এমন কথা বলতেন, যা কোনও বাবা সহ্য করবেন না। ছেলে ভিডিয়ো তৈরি করতেন। তাতে বাড়ির মহিলাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ করতেন। তাঁদের চরিত্র নিয়ে কথা বলতেন। কিন্তু নিজেই বুঝতে পারতেন না যে, তিনি কী করছেন বা কী বলছেন। মুস্তাফার অভিযোগ, এখন রাজনৈতিক স্বার্থসিদ্ধি করতে অনেকেই অনেক কথা বলছেন। তাঁদের মানসম্মান ধুলোয় মিশিয়ে দেওয়া হচ্ছে। প্রাক্তন পুলিশকর্তা হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, ‘‘যাঁরা ভিত্তিহীন অভিযোগের প্রেক্ষিতে এফআইআর দায়ের করেছেন, জঘন্য সমস্ত ইঙ্গিত করছেন, আগামিদিনে তাঁরাই কড়া শাস্তি পাবেন।’’

Crime Haryana Murder charge
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy