লিভ ইন সঙ্গী তথা খুনে অভিযুক্ত তরুণী অমৃতা চৌহানের সঙ্গে তাঁর পরিবার সমস্ত সম্পর্ক ছিন্ন করেছিল এক বছর আগেই। দিল্লির ইউপিএসসি পরীক্ষার্থী রামকেশ মীনা হত্যাকাণ্ডে নয়া তথ্য উঠে এল। ২০২৪ সালের ৮ জুলাই সংবাদমাধ্যমে একটি বিজ্ঞাপন দিয়ে অমৃতার সঙ্গে পরিবারের সমস্ত সম্পর্কচ্ছেদের কথা ঘোষণা করা হয়। অশ্লীল আচরণ এবং দুর্ব্যবহারের অভিযোগ তুলে অমৃতাকে ত্যাজ্য বলে ঘোষণা করেছিলেন তাঁর বাবা।
সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত ওই বিজ্ঞাপনে বলা হয়েছিল, ‘‘আজ থেকে অমৃতার সঙ্গে চৌহান পরিবারের সব সম্পর্ক ছিন্ন করা হল। এখন থেকে ও যা কাজ করবে, তার সমস্ত দায় ওর নিজেরই। পরিবার এর জন্য কোনও দায় নেবে না।’’ ইউপিএসসি পরীক্ষার্থী রামকেশ হত্যাকাণ্ডে অমৃতা গ্রেফতার হওয়ার পরই পরিবারের সেই ঘোষণাপত্র প্রকাশ্যে এসেছে। বেশ কয়েকটি সূত্রের খবর, গত বছরে অমৃতা সম্পর্কে যে বিজ্ঞাপন দিয়েছিল তাঁর পরিবার, তার একটি প্রতিলিপি প্রমাণ হিসাবে আদালতেও জমা দিয়েছিল তারা।
দিল্লি পুলিশ সূত্রে খবর, গত মে মাস থেকে রামকেশের সঙ্গে লিভ ইন সম্পর্কে ছিলেন অমৃতা। তিনি ফরেন্সিক সায়েন্স নিয়ে স্নাতক করছিলেন। অমৃতা জানতে পারেন রামকেশ লুকিয়ে তাঁর ভিডিয়ো এবং ছবি তুলেছেন। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে দু’জনের সম্পর্কের টানাপড়েন শুরু হয়। রামকেশকে সেই সব ব্যক্তিগত ছবি এবং ভিডিয়ো মুছে ফেলতে বলেন অমৃতা। বার বার অনুরোধ করেন বলে পুলিশের কাছে দাবি করেছেন তিনি। কিন্তু রামকেশ সেগুলি মুছে ফেলতে অস্বীকার করেন। রামকেশকে ‘উচিত শিক্ষা’ দেওয়ার পরিকল্পনা করেন অমৃতা। যোগাযোগ করেন তাঁর প্রাক্তন প্রেমিক সুমিত কাশ্যপ এবং আরও এক যুবক সন্দীপ কুমারের সঙ্গে। ঘটনাচক্রে, অমৃতা, সুমিত এবং সন্দীপ— তিন জনই উত্তরপ্রদেশের মোরাদাবাদের বাসিন্দা। পুলিশ জানিয়েছে, ৫ অক্টোবর মোরাদাবাদ থেকে দিল্লি আসেন তিন জন। ওই রাতে দু’জন মুখ ঢেকে রামকেশের ফ্ল্যাটে ঢোকেন। তাঁদের পিছু পিছু যান এক মহিলা। পরে সিসিটিভি ফুটেজ পরীক্ষা করে পুলিশ জানতে পারে ওই মহিলা আর কেউ নন, অমৃতা।
রামকেশকে খুনের অভিযোগে ১৮ অক্টোবর অমৃতাকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তাঁকে জেরা করে দুই সঙ্গী সুমিত এবং সন্দীপের খোঁজ পায় পুলিশ। উত্তরপ্রদেশের মোরাদাবাদ থেকে ২১ অক্টোবর সুমিতকে গ্রেফতার করে পুলিশ। সন্দীপ গ্রেফতার হন ২৩ অক্টোবর।