প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর টুইট।
নির্ধারিত সময়ে ভারতের হাতে রাফাল তুলে দেওয়ার জন্য ফরাসি সরকার এবং প্রতিরক্ষা বিমান প্রস্তুতকারী সংস্থা দাসোকেও ধন্যবাদ জানান রাজনাথ। তবে রাফাল কেনার পুরো কৃতিত্বই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে দিয়েছেন রাজনাথ। তাঁর কথায়, ‘‘করোনা পরিস্থিতিতের মধ্যেও নির্দিষ্ট সময় অস্ত্রশস্ত্র সমেত রাফাল ভারতে পৌঁছে দেওয়ায় ফ্রান্স সরকার, দাসো অ্য়াভিয়েশন এবং অন্যান্য ফরাসি সংস্থাগুলিকেও ধন্যবাদ। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর জন্যই রাফাল যুদ্ধবিমান কেনা সম্ভব হল। দীর্ঘদিন এই প্রক্রিয়া আটকে থাকার পর ফ্রান্স সরকারের সঙ্গে কথাবার্তা চালিয়ে তিনিই রাফাল কেনার সঠিক সিদ্ধান্ত নেন। এই সাহসিকতা এবং চটজলদি সিদ্ধান্তের জন্য ওঁকে ধন্যবাদ জানাই।’’
রাজনাথ সিংহের টুইট।
সোমবার ফ্রান্স থেকে ভারতের উদ্দেশে রওনা দেয় পাঁচটি রাফাল যুদ্ধবিমান। সংযুক্ত আরব আমিরশাহির আল ডাফরায় ফরাসি বায়ুসেনা ঘাঁটি ছুঁয়ে এ দিন ভারতীয় আকাশসীমায় প্রবেশ করে তারা। সংযুক্ত আরব আমিরশাহি থেকে রওনা দেওয়ার পর থেকেই নৌবাহিনীর যুদ্ধজাহাজ আইএনএস কলকাতার সঙ্গে যোগাযোগ ছিল তাদের। ভারতীয় আকাশসীমায় ঢোকার পর দু’দিক থেকে তাদের নিরাপত্তা দেয় বায়ুসেনার দু’টি সুখোই বিমান।
রেডিয়ো বার্তা পাঠিয়ে বিমানগুলিকে স্বাগত জানায় আইএনএস কলকাতা। তাতে বলা হয়, ‘‘ভারত মহাসাগরে আপনাদের স্বাগত। আপন গরিমায় আকাশ স্পর্শ করুন। অবতরণ নিরাপদ হোক। আবহাওয়া অনুকূল থাকুক।’’ জবাবে রাফালের তরফে বলা হয়, ‘‘আপনাদের জন্যও আবহাওয়া অনুকূল থাকুক। হ্যাপি হান্টিং। ওভার অ্যান্ড আউট।’’ তার কিছু ক্ষণের মধ্যেই পাক সীমান্ত থেকে ২০০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত অম্বালা বায়ুসেনা ঘাঁটিতে পৌঁছয় ওই পাঁচটি বিমান। সেখানে জলকামান দেগে বিমানগুলিকে অভিবাদন জানানো হয়।
জলকামান দেগে অভিবাদন বিমানগুলিকে।
রাফাল এসে পৌঁছনোর আগেই নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তায় মুড়ে ফেলা হয়েছিল অম্বালা বায়ুসেনা ঘাঁটিকে। আশেপাশের এলাকাগুলিকেও সতর্ক করে দেওয়া হয়। অম্বালা বায়ুসেনা ঘাঁটি সংলগ্ন ধুলকোট, বলদেব নগর, গরনালা এবং পঞ্জখোরা গ্রামেও জারি করা হয় ১৪৪ ধারা। বাড়ির ছাদে উঠতে নিষেধ করা হয় গ্রামবাসীদের। ড্রোন ওড়ানো, ছবি তোলা এবং ভিডিয়ো রেকর্ড করার উপরও নিষেধাজ্ঞা বসানো হয়।
২০০৭ সালে ইউপিএ সরকারের আমলেই ফ্রান্সের দাসো অ্যাভিয়েশনের কাছ থেকে ১২৬টি রাফাল যুদ্ধবিমান কেনার চুক্তি হয়েছিল। কিন্তু নরেন্দ্র মোদীর ক্ষমতায় আসার পর দাসোর সঙ্গে নতুন করে চুক্তি হয় ভারতের। ঠিক হয় তাদের কাছ থেকে ৩৬টি রাফাল যুদ্ধবিমান কেনা হবে। সেই বাবদ ৫৯ হাজার কোটি টাকার চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। মোদী সরকারের এই চুক্তি নিয়ে সরব হয় কংগ্রেস-সহ বিরোধীরা। অভিযোগ ওঠে, ইউপিএ আমলের চুক্তি অনুযায়ী বিমান পিছু যেখানে ৫৭০ কোটি টাকা দাম পড়ছিল, নয়া চুক্তি করার পর বিমান পিছু দাম পড়ছে ১৬৭০ কোটি টাকা করে।
ভারতীয় আকাশসীমায় রাফাল, দু’দিকে দু’টি সুখোই। এই ভিডিয়োই টুইটারে পোস্ট করেন রাজনাথ সিংহ।
আরও পড়ুন: মুম্বইয়ের বস্তির ৫৭ শতাংশ বাসিন্দাই করোনা আক্রান্ত! জানাল সমীক্ষা
অনেক বেশি দামে চুক্তি করা এবং অনিল অম্বানীর সংস্থাকে বিমান তৈরির বরাত পাইয়ে দেওয়া নিয়ে সেই সময় বিরোধীদের অক্রমণের মুখে পড়ে মোদী সরকার। সেই বিতর্ক কাটিয়েই আজ ফ্রান্স থেকে ভারতে এসে পৌঁছল পাঁচটি রাফাল যুদ্ধবিমান।