Advertisement
১৭ এপ্রিল ২০২৪
China

‘নিজেকে রাজা মনে করছেন চিনফিং, ফলে আরও আগ্রাসী হয়ে উঠছে চিন’

সব কিছু দেখেও হাতে হাত রেখে বসে থাকা ঠিক হবে না বলে জানান নিকি।

শি চিনফিং। —ফাইল চিত্র।

শি চিনফিং। —ফাইল চিত্র।

সংবাদ সংস্থা
ওয়াশিংটন শেষ আপডেট: ২৯ জুলাই ২০২০ ১১:৩৭
Share: Save:

লাদাখ সীমান্তে চিনের সঙ্গে সংঘর্ষ নিয়ে ইতিমধ্যেই ভারতের পাশে দাঁড়িয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। চিনের আগ্রাসী মনোভাবকেই সঙ্ঘাতের জন্য দায়ী করেছে তারা। এ বার চিনের বিরুদ্ধে একই অভিযোগ তুললেন রাষ্ট্রপুঞ্জে প্রাক্তন মার্কিন রাষ্ট্রদূত নিকি হ্যালি। তাঁর অভিযোগ, প্রেসিডেন্ট শি চিনফিংয়ের আমলেই চিন আরও বেশি আগ্রাসী হয়ে উঠেছে। অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাস বেড়ে গিয়েছে তাদের। তবে এই মনোভাব নিয়ে খুব বেশি দিন তারা চলতে পারবে না বলেও দাবি করেছেন নিকি।

প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা (এলএসি) পেরিয়ে ভারতীয় ভূখণ্ডে ঢুকে পড়া নিয়ে সম্প্রতি লাদাখে চিনা বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষ বাধে ভারতীয় জওয়ানদের। বাণিজ্য চুক্তি থেকে কোভিড-১৯ অতিমারি, গত কয়েক মাসে চিনের সঙ্গে মার্কিন প্রশাসনের সম্পর্কে ফাটল ধরেছে। কফিনে সর্বশেষ পেরেক পুঁতেছে দূতাবাস বিতর্ক। তা নিয়ে একটি মার্কিন সংবাদমাধ্যমে নিকি জানান, আগে মাথা ঠান্ডা রেখে, কৌশলী পদক্ষেপ করত চিন। বন্ধ দরজার পিছনে নিজেদের কাজ করিয়ে নিত। কিন্তু এখন তাদের চরিত্র বদলেছে।

নিকি বলেন, ‘‘যে মুহূর্ত থেকে প্রেসিডেন্ট শি চিনফিং নিজেকে কার্যত রাজা বলে ঘোষণা করেছেন, তখন থেকেই চিন অনেক বেশি আগ্রাসী হয়ে ওঠে। নিজেদের নিয়ে মারাত্মক রকমের আত্মবিশ্বাসী হয়ে পড়েছে। মুখের উপর আঙুল তুলে অন্য দেশগুলিকে বলতে শুরু করেছে, আমাদের কথা মতো ভোট দিতে হবে। গুরুত্বপূর্ণ পদ ও নেতৃত্ব পেতে রাষ্ট্রপুঞ্জেও অত্যন্ত আগ্রাসী হয়ে উঠেছে তারা। কথায় কথায় সবাইকে ছোট করতে শুরু করে।’’

আরও পড়ুন: লকডাউনের তৃতীয় দিনেও ধরপাকড় পুলিশি কড়াকড়িতে ঘরবন্দি রাজ্যবাসী

সড়ক ও রেল পথে আঞ্চলিক সংযোগ গড়ে তুলতে ৭০টি দেশকে নিয়ে যে বেল্ট অ্যান্ড রোড প্রকল্প গড়ে তুলছে চিন। তার পরিকাঠামো গড়ে তুলতে ছোট দেশগুলির উপর চিন বিপুল অঙ্কের ঋণের বোঝা চাপিয়ে দিচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন নিকি। তাঁর কথায়, ‘‘ওই দেশগুলির সঙ্গে কখনও একাত্মই হতে পারবে না চিন। বেল্ট অ্যান্ড নিয়ে চিন যখন প্রথম উদ্যগী হয়েছিল, তখনও তাদের আচরণ পছন্দ হয়নি ওই দেশগুলির। কিন্তু যত সময় যাচ্ছে চিন আরও বেশি আগ্রাসী হয়ে উঠছে।’’

২০১৮ সালে রাষ্ট্রপুঞ্জে নিজের পদ থেকে ইস্তফা দেন নিকি। তাঁর মতে, চিনের এই আচরণ খুব বেশি দিন টিকবে না। নিকি বলেন, ‘‘কিন্তু এ ভাবে কোনও কিছুই দীর্ঘ দিন চলতে পারে না। কারণ দেশের মানুষকে স্বাধীন হতে না দিলে, একটা সময় সকলে সরকারের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করবেন। এই মুহূর্তে হংকংয়ের উপর চাপ বাড়াচ্ছে তারা। তাইওয়ানেও তাদের ক্ষমতা বাড়াতে দেখেছি আমরা। দক্ষিণ চিন সাগর এবং ভারতের উপরও নজর পড়েছে। নিজেদের রাজা বলে ভাবতে শুরু করেছে তারা।’’

তবে সব কিছু দেখেও হাতে হাত রেখে বসে থাকা ঠিক হবে না বলে জানান নিকি। সম্প্রতি হিউস্টনের চিনা দূতাবাসের মাধ্যমে বৌদ্ধিক সম্পত্তি চুরি যাওয়া নিয়ে, দু’দেশের মধ্যে তিক্ততা আরও বেড়েছে। তবে এ ব্যাপারে মার্কিন নাগরিকদেরই আরও সতর্ক হতে হবে বলে জানান নিকি। তাঁর মতে, মার্কিন সরকারকে পাল্টা চাপ বাড়াতে হবে চিনের উপর। নিকি বলেন, ‘‘ওদের বুঝতে দিতে হবে যে, সামরিক শক্তি বাড়িয়ে চলেছি আমরা। তাই আমাদের সঙ্গে লড়তে এলে বেকায়দায় পড়তে হবে। চিনের সঙ্গে ব্যবসা করতে যাওয়া মার্কিন সংস্থাগুলিকে বুঝতে হবে যে, চিনা বাহিনীর সঙ্গে কাজ করতে চলেছে তারা, যাতে কিনা দেশের জাতীয় নিরাপত্তা বিঘ্নিত হতে পারে। মার্কিন নাগরিকদের বিষয়টি বোঝাতে হবে।’’

আরও পড়ুন: মুম্বইয়ের বস্তির ৫৭ শতাংশ বাসিন্দাই করোনা আক্রান্ত! জানাল সমীক্ষা​

বৌদ্ধিক সম্পত্তি চুরি যাওয়া নিয়ে সম্প্রতি হিউস্টনের ওই চিনা দূতাবাসটি বন্ধ করার নির্দেশ দেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তাঁর সেই সিদ্ধান্তে সমর্থন জানিয়ে নিকি বলেন, ‘‘ওই দূতাবাসগুলিতে যে বেআইনি কাজকর্ম চলে, তা নিয়ে প্রশ্নের অবকাশ নেই। তাই হিউস্টনের দূতাবাসটি বন্ধ করে দেওয়ায় খুশি আমি। কারণ চরবৃত্তি-সহ যাবতীয় বেআইনি কাজকর্মের কেন্দ্রস্থলে পরিণত হয়েছিল সেটি, আমার মনে হয়, দূতাবাসে যখন আধিকারিকদের লুকিয়ে রাখা হয়, তার অর্থ নিশ্চই সেখানে কোনও অবৈধ কাজকর্ম চলছিল।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE