অতিভারী বৃষ্টিপাতের জেরে কেরলের একাধিক জেলার নিচু এলাকাগুলিতে জল জমে বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। রবিবার দেশের আবহাওয়া দফতর (আইএমডি)-র তরফে রাজ্যের ছ’টি জেলা— এর্নাকুলাম, ইডুক্কি, মলপ্পুরম, কোজিকোডে, কন্নুর এবং কাসারাগড়ে অরেঞ্জ অ্যালার্ট জারি করেছে। জেলার অন্য আটটি জেলায় জারি হয়েছে ইয়োলো অ্যালার্ট। উপকূলবর্তী এলাকা থেকে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে স্থানীয়দের। প্রশাসনের তরফে আগামী ৪৮ ঘণ্টা মৎসজীবীদের সমুদ্রে যেতে বারণ করা হয়েছে।
আবহাওয়া দফতরের তরফে জানানো হয়েছে, একই সময়ে কেরল উপকূলের কাছে দু’টি নিম্নচাপ তৈরি হওয়ার কারণেই এই অতিভারী বৃষ্টিপাত হয়ে চলেছে সেই রাজ্যে। শনিবার আবহাওয়া দফতর জানিয়েছিল, কুমারকোম উপকূল এবং সংলগ্ন দক্ষিণ-পশ্চিম বঙ্গোপসাগরের উপরে একটি সুস্পষ্ট নিম্নচাপ অঞ্চল তৈরি হয়েছে। আগামী ৪৮ ঘন্টার মধ্যে এই নিম্নচাপ তীব্রতর হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। একই সময়ে, শনিবার রাতের মধ্যে দক্ষিণ-পূর্ব আরব সাগর এবং লক্ষদ্বীপে একটি নতুন নিম্নচাপ তৈরি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলেও জানিয়েছিল আইএমডি।
ইতিমধ্যে, টানা বৃষ্টিপাতের জেরে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ইডুক্কি জেলা। শনিবার সেখানে রাস্তাঘাট ধসে যাওয়ায় যান চলাচল ব্যাহত হয়। নেই বিদ্যুৎ, ইন্টারনেট পরিষেবাও বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। এখনও পর্যন্ত বৃষ্টিপাতের জেরে দুর্ঘটনায় ৬৬ বছরের এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে।
রাতভর অতিভারী বৃষ্টিপাতের জেরে কুমিলি এলাকা জলমগ্ন হয়ে পড়ায় স্থানীয়দের একাংশ গৃহবন্দি হয়ে পড়েছেন। ভেসে গিয়েছে বহু গাড়ি। পাশাপাশি, কুট্টার এবং অলিয়ারকে সংযোগকারী চাপথ সেতু ভেঙে পড়েছে।
এর্নাকুলম স্টেশনে সংস্কারের কাজ চলছিল। রাতভর বৃষ্টির জেরে স্টেশনে জল জমে বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। ব্যাহত হয়েছে ট্রেন চলাচলও। ভারী বৃষ্টির জেরে মলপ্পুরমে কৃষি জমিতে জল জমায়, শষ্যে নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। পাশাপাশি, কোচির বেশ কিছু এলাকাতেও বন্যা পরিস্থিতিতৈরি হয়েছে।
এরই মধ্যে তামিলনাড়ুর বেশ কিছু এলাকাতেও ভারী বৃষ্টিপাত হচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে, মুল্লাপেরিয়ার বাঁধের জলাধারে জলস্তর বৃদ্ধি পাওয়ায়, শনিবার তামিলনাড়ু জলসম্পদ দফতর ১৩টি ‘স্পিলওয়ের শাটার’ খুলে দেয়। পেরিয়ার নদীতে ৯৪০৩ কিউসেক জল ছাড়া হয়। তামিলনাড়ু সরকার যদিও এই নিয়ে কেরলকে শনিবারই সতর্ক করেছিল। কেরল সরকারের তরফে নদীর কাছাকাছি থাকা বাসিন্দাদের নিরাপদে সরে যেতে নির্দেশ দেওয়া হয়। রবিবারও ফের জলাধার থেকে ১৪০০ কিউসেক জল ছাড়া হয়েছে। পাশাপাশি, কেরলের আরও তিনটি জলাধার থেকে জল ছাড়া হয়েছে।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)