Advertisement
E-Paper

মহড়াই সার বিরোধীদের, এখন কে যে কোথায়

ফলের ধাক্কায় সুনসান এত দিন সংবাদমাধ্যমের ক্যামেরার ঝলকানির সামনে থাকা রাজধানীর বিরোধী পরিসর।  

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৪ মে ২০১৯ ০৩:১৯
ফাইল চিত্র।

ফাইল চিত্র।

চটজলদি দিল্লি আসার জন্য সব রকম প্রস্তুতি নেওয়া ছিল। মনে করা হয়েছিল লখনউ, পশ্চিমবঙ্গ, মহারাষ্ট্র, উত্তরপ্রদেশ, কাশ্মীর—বিভিন্ন প্রান্ত থেকে বিমানের ঢল নামবে রাজধানীতে। তার পর কনস্টিটিউশন ক্লাবে নিজেদের মধ্যে একদফা বৈঠক সেরে সোজা অভিযান করা হবে রাষ্ট্রপতি ভবন।

এই চিত্রনাট্যের জন্য মহড়া দেওয়া হয়েছে গত কয়েক মাস ধরে। কখনও কনস্টিটিউশন ক্লাবে, কখনও যন্তরমন্তর, কখনও সংসদের অ্যানেক্স হলে। বিরোধী ঐক্যের চেহারাকে তুলে ধরতে বারবার করা হয়েছে সাংবাদিক সম্মেলন। কুড়ি-বাইশ জন নেতা গোল হয়ে বসে ছবিও তুলেছেন বার্তা দেওয়ার জন্য। কিন্তু আজ ভোটনাট্যের যবনিকা উঠে যাওয়ার পর রাজধানীতে তাঁদের কারও মুখ দেখা যাচ্ছে না। কোনও বৈঠক, আলোচনা, সমন্বয়, ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার নামগন্ধও স্বাভাবিক ভাবেই নেই। ফলের ধাক্কায় সুনসান এত দিন সংবাদমাধ্যমের ক্যামেরার ঝলকানির সামনে থাকা রাজধানীর বিরোধী পরিসর।

রাজনৈতিক শিবির বলছে, এই তথাকথিত বিরোধী জোটকে প্রাসঙ্গিক রাখতে চন্দ্রবাবু নায়ডুকে চরকি পাক থেকে দেখা গিয়েছে গত দু মাসে। কখনও অন্ধ্র ভবনে সভা করেছেন। যোগ দিয়েছেন মুলায়ম সিংহ যাদব থেকে শরদ যাদবের মতো নেতারা। কখনও ছুটে গিয়েছেন পশ্চিমঙ্গ থেকে কর্নাটক। যন্তরমন্তরে জনসভা হয়েছে, সেখানে মঞ্চ থেকে আগুনে বক্তৃতা দিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, অরবিন্দ কেজরীবাল, আনন্দ শর্মারা। ব্যক্তিগত উদ্যোগে কংগ্রেস এবং ইউপিএ শরিকদের সঙ্গে তৃণমূল, জেডি(এস), মায়াবতীর সেতু গড়ার চেষ্টা করেছেন চন্দ্রবাবু। কংগ্রেসের পাশে থেকে বিভিন্ন বিরোধী কর্মসূচির আয়োজনও করেছেন। এমনকি শরদ পওয়ারের বাড়ি মধ্যরাতের বৈঠকে স্থির হয়েছিল বিরোধীদের ন্যূনতম অভিন্ন কর্মসূচির কথাও।

আজ ফলাফলের দিন কী ভূমিকা চন্দ্রবাবু নায়ডুর? টিডিপি শিবির জানাচ্ছে অন্ধ্রপ্রদেশের বিধানসভায় হেরে গিয়ে রাজ্যপাল ইএসএল নরসিংহনের কাছে পদত্যাগপত্র জমা দেওয়া ছাড়া আজ কোনও গতিবিধিই নেই তাঁর। ভবিষ্যৎ পরিকল্পনাও নেই।

দিল্লি আসার জন্য প্রস্তুতি নেওয়া ছিল মমতা, মায়াবতী, অখিলেশ সিংহ যাদবদেরও। তৃণমূল, এসপি, বিএসপি-র পাশাপাশি এনসিপি-র প্রফুল্ল পটেল, জেডিইউ-এর শরদ যাদব, এনসি-র ওমর আবদুল্লা, সিপিএমের সীতারাম ইয়েচুরিরাও সম্প্রতি কনস্টিটিউশন ক্লাবে বৈঠক করে স্থির করেছিলেন কৌশল। স্থির হয়েছিল, বিজেপি এবং তার শরিকরা যদি সংখ্যাগরিষ্ঠতার থেকে (২৭২) একটি আসনও কম পায়, তা হলে সব বিরোধী নেতারা দ্রুত দিল্লি পৌঁছবেন। ২২টি বিরোধী দলনেতার সই করা চিঠি রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের কাছে পাঠানো হবে। সেখানে সরকার গড়ার দাবি করা হবে। গত কাল রাত পর্যন্ত এই মর্মে সবার মধ্যে মোবাইলে যোগাযোগ হয়েছিল। রাহুল গাঁধী-সহ জাতীয় স্তরের বিভিন্ন নেতার সঙ্গে কথা বলেছিলেন মমতা। চন্দ্রবাবুকে মায়াবতী জানিয়েছিলেন, তিনি পাখির চোখ দেখছেন প্রধানমন্ত্রিত্বের পদ।

আজ জনতার রায়ে সমস্ত বিরোধী নেতারা স্তব্ধ। দিল্লিতেও বিরোধীদের টিকির দেখা নেই। তৃণমূলের হয়ে গত কয়েক মাস দিল্লিতে অবিরাম যিনি বিরোধীদের সঙ্গে বিভিন্ন কর্মসূচিতে অংশ নিয়েছেন সেই ডেরেক ও ব্রায়েন জানিয়ে দিয়েছেন, সংখ্যা নেই। ফলে কোনও বিরোধী বৈঠক নেই। যৌথ কর্মসূচি তো দূরস্থান! বরঞ্চ বিরোধী নেতারা যে যার ডেরায় বসে খতিয়ে দেখছেন নিজেদের ব্যর্থতার কারণ।

Congress TDP Election Results 2019
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy