কিলোমিটার প্রতি ৭৫ পয়সা। তা মেটালে ব্যক্তিগত কাজের জন্যও চালক-সহ সরকারি গাড়ি ব্যবহার করতে পারেন ত্রিপুরার আমলা বা তাঁর আত্মীয়রা!
উত্তর-পূর্বের ওই রাজ্যে কয়েক দশক ধরে এমনই কাণ্ড ঘটছে। প্রশাসনিক সূত্রে খবর, অর্থ দফতরের পুরনো একটি নির্দেশিকার জেরেই ওই নিয়ম চালু হয়েছে।
কী সেই নির্দেশ? প্রশাসনিক সূত্রে জানা গিয়েছে, সরকারি কোনও আধিকারিক বা তাঁর আত্মীয় কিলোমিটার প্রতি ৭৫ পয়সা ভাড়া দিলে, ব্যক্তিগত কারণে সরকারি গাড়ি ব্যবহার করতে পারবেন। অর্থাৎ, কেউ ওই গাড়ি নিয়ে ১০ কিলোমিটার ঘুরলে তাঁকে ভাড়া দিতে হবে সাড়ে ৭ টাকা!
রাজ্যের মুখ্যসচিব যশপাল সিংহ সরকারি নিয়মের ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে বলেন, ‘‘ব্যক্তিগত কারণে কোনও সরকারি গাড়িতে মাসে সর্বোচ্চ ২০০ কিলোমিটার ঘোরা যাবে। ১৯৯০ সাল থেকে ওই নিয়ম চালু রয়েছে।’’
উল্লেখ্য, ২০১৫ সালে রাজ্যের তৎকালীন অর্থমন্ত্রী ভানুলাল সাহা সাংবাদিক বৈঠকে জানিয়েছিলেন, কোষাগারের টাকা বাঁচাতে ত্রিপুরা সরকার ব্যয় সংকোচ করার পথে এগিয়েছে। সে কারণে সরকারি গাড়ি ব্যবহারে নিয়ন্ত্রণের কতাও জানিয়েছিলেন ভানুবাবু।
কিন্তু পরিস্থিতি যে তাতে বদলায়নি, সম্প্রতি তার প্রমাণ মেলে। বিলোনিয়া অঞ্চলে বন দফতরের এক ডিএফও-র বিরুদ্ধে সরকারি গাড়ি ব্যক্তিগত কারণে ব্যবহারের অভিযোগ ওঠে। রাজ্য সরকার তা নিয়ে তদন্তের নির্দেশ দেয়। সেই সময় বনকর্তা (সিসিএফ) সনাতন তালুকদার সহকর্মীর পাশে দাঁড়িয়ে জানিয়েছিলেন, সরকারি গাড়ি ব্যক্তিগত কাজে ব্যবহারের নিয়ম ত্রিপুরায় রয়েছে। তা সবাই জানেন।
প্রশ্ন উঠেছে, এক দিকে রাজ্যের কোষাগার সামলানোর জন্য অর্থ দফতরের ‘ব্যয় সঙ্কোচ নীতি’, অন্য সরকারি কর্তাদের সুবিধায় ব্যক্তিগত কারণে গাড়ি ব্যবহারের নিয়ম একইসঙ্গে চালু রাখা হয়েছে কেন? এ বিষয়ে মুখ্যসচিব কোনও মন্তব্য না করেননি। তবে ত্রিপুরার বনমন্ত্রী নরেশ জামাতিয়ার বলেন, ‘‘কী ভাবে ওই নিয়ম এখনও রয়েছে, সেটাই বিস্ময়ের।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy