আহমেদ পটেল।—ফাইল চিত্র।
রাজ্যসভায় তখন চলছে উপরাষ্ট্রপতি হামিদ আনসারির বিদায় সমারোহ। বক্তৃতা দিচ্ছেন সভার নেতা অরুণ জেটলি। পাশে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। হঠাৎই তাল কাটল বক্তৃতার।
আচমকাই একযোগে টেবিল চাপড়াতে শুরু করলেন বিরোধী সদস্যরা। কেউ কেউ উঠে দাঁড়ালেন। বক্তৃতা মাঝপথে থামাতে বাধ্য হলেন অর্থমন্ত্রী। কারণ, সকলের নজর কেড়ে রাজ্যসভার কক্ষে তখন পা রাখলেন আহমেদ পটেল। যুদ্ধে জেতা বীরের সম্মান নিয়ে।
যে কোনও মূল্যে তাঁকে হারাতে চেয়েও ব্যর্থ হয়েছেন অমিত শাহ। আজ সকালে বিজেপির সংসদীয় দলের বৈঠকে অবশ্য অমিতকে লাড্ডু খাওয়ান নরেন্দ্র মোদী। সভাপতি হিসেবে তিন বছর পূর্ণ করেছেন তিনি। মোদী বলেন, শাসক দলের সভাপতির কাজ করা খুবই কঠিন। অমিত শাহ বলেন, গুজরাতে কংগ্রেসের ৬১ জন বিধায়ক ছিলেন। আহমেদ পটেল মাত্র ৪৩ জনের সমর্থন পেয়েছেন। দু’জনের ভোট বাতিল হওয়ায় কান ঘেঁষে জিতেছেন। অমিতের দাবি, পরের বার পটেল আর জিততে পারবেন না। কারণ কংগ্রেসে ভাঙন স্পষ্ট। তা ছাড়া আদালতও এখন ভোটের বিষয়টি দেখবে।
আরও পড়ুন: আনসারির খোঁচা, পাল্টা বেঙ্কাইয়ার
বন্ধ ঘরে অমিত শাহ আত্মবিশ্বাস দেখালেও প্রকাশ্যে আজ বিজেপিকে তুলোধোনা করেন বিরোধীরা। রাজ্যসভায় গুলাম নবি আজাদ বলেন, ১৯৪২ সালে ৮ অগস্ট যে ভাবে ‘ভারত-ছাড়ো’ আন্দোলনের লড়াই শুরু হয়েছিল, ২০১৭ সালের ৮ অগস্ট রাতে সে ভাবেই আহমেদ পটেলকে লড়তে হয়েছে। সত্যের জয় হয়েছে শেষে।
আহমেদ পটেল নিজেও আজ সক্রিয় ছিলেন রাজধানীতে। তাঁর জয়ের পর রাহুল গাঁধীর নির্দেশে আজ দিল্লিতে সংসদ-ঘেরাও অভিযান করে যুব কংগ্রেস। সেখানেও যান আহমেদ পটেল। যন্তর-মন্তরে দাঁড়িয়ে বলেন, গোটা দেশ আজ পরিশ্রান্ত দু’জন লোকের জন্য— নরেন্দ্র মোদী আর অমিত শাহ। একটি প্রতিশ্রুতিও রাখতে পারেননি মোদী। জনতাই এঁদের উৎখাত করবে। আহমেদ বলেন, ‘‘গাঁধীজির স্লোগান ছিল ইংরেজ ভারত-ছাড়ো। আমরা বলছি, বিজেপি গদি ছাড়ো।’’
কংগ্রেস নেতাদের দাবি, পটেলের জয়ের পর দলে উদ্দীপনা বেড়েছে। গুজরাত বিধানসভাতেও দলের জয় নিশ্চিত। কিন্তু এরই মধ্যে আজ গুজরাতের দশ জন বিক্ষুব্ধ কংগ্রেস নেতা জানান, শীঘ্রই তাঁরা বিজেপিতে যোগ দেবেন। শঙ্করসিন বাঘেলার নাম তার মধ্যে না-থাকলেও তাঁর পুত্র যোগ দিচ্ছেন বিজেপিতে। কাল রাতে অমিত শাহের সঙ্গে বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত হয়েছে। অমিত শাহের সুরেই বাঘেলা আজ বলেন, রাজ্য নির্বাচন কমিশন কংগ্রেসের আপত্তি খারিজ করার পর দিল্লির হস্তক্ষেপ দরকার ছিল না। যদিও কংগ্রেসের অভিষেক মনু সিঙ্ঘভির বক্তব্য, পটেলের জয়ের পর বিজেপির উচিত সেটা মেনে নেওয়া। আদালতে আর এই জয়কে চ্যালে়ঞ্জ জানানো তাদের উচিত নয়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy