Advertisement
৩০ এপ্রিল ২০২৪
Hathras Gangrape

সিবিআইয়ে ভরসা কী, বলছেন ভাই

যোগী আদিত্যনাথের প্রশাসনের উপরে আর ভরসা নেই পরিবারটির। ভরসা নেই পুলিশ-প্রশাসন কিংবা সিবিআই তদন্তেও।

পরিবারের হাতে না দিয়ে এ ভাবেই শেষকৃত্য করা হয় হাথরসের নির্যাতিতার। ছবি পিটিআই।

পরিবারের হাতে না দিয়ে এ ভাবেই শেষকৃত্য করা হয় হাথরসের নির্যাতিতার। ছবি পিটিআই।

চৈতালি বিশ্বাস
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৫ অক্টোবর ২০২০ ০৪:১২
Share: Save:

সিবিআই তদন্তে ভরসা রাখতে পারছেন না। সরাসরি সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করতে চায় হাথরসের নির্যাতিতার পরিবার। রবিবার সন্ধের দিকে ফোনে কথা বললেন নির্যাতিতার ভাই। জানালেন, ‘‘আইনজীবী সীমা কুশওয়াহাজি আমাদের বাড়ি এসেছেন। ওঁর সঙ্গে কথাবার্তা চলছে। অন্যায়ের বিচার চেয়ে আমরা সরাসরি সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করব।সিবিআই তদন্ত চাই না।’’

এ দিনই সকালে সিট-এর তরফ থেকে পরিবারের সদস্যদের বয়ান সংগ্রহ করা হয়েছে। তবে যোগী আদিত্যনাথের প্রশাসনের উপরে আর ভরসা নেই পরিবারটির। ভরসা নেই পুলিশ-প্রশাসন কিংবা সিবিআই তদন্তেও। ওই যুবক জানালেন, পুলিশের ঘরে বন্ধ করে রাখা, সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলতে না দেওয়া, পরিবারের সদস্যদের মারধর করা— এ সবের আতঙ্ক থেকে এখনও বেরোতে পারেননি ওঁরা। গত তিন-চার দিনের ধকলে ক্লান্ত, মানসিক ভাবে বিপর্যস্ত। তার সঙ্গে লোকজনের আনাগোনা লেগে রয়েছে সারা দিন।

বোনের বিষয়ে সংবাদমাধ্যমের সামনে মুখ না খোলার জন্য প্রথম দিন থেকেই পুলিশ-প্রশাসনের চাপ ছিল। তার সঙ্গে আবার নতুন করে যোগ হয়েছে গ্রামের উচ্চবর্ণের চোখরাঙানি। ভীম আর্মির নেতা চন্দ্রশেখর আজাদের কাছে নিজের ভয়ের কথা জানিয়েছেন মেয়ের মা। বলেছেন, গ্রাম ছেড়ে বেরিয়ে ওই দলিত নেতার বাড়িতে থাকতে চান। তরুণীর ভাই বলছেন, ‘‘অভিযুক্তের একজনের নামের সঙ্গে আমার নামের মিল আছে। গ্রামের ঠাকুরদের তরফ থেকে হুমকি এসেছে সরাসরি আমার নাম করে। বলা হচ্ছে— এ সবের জন্য সেই অভিযুক্তের গায়ে যদি কোনও কারণে আইনের হাত পড়ে, তা হলে নাকি আমাকেও দেখে নেওয়া হবে।’’

আরও পড়ুন: হাথরস-কাণ্ডে ধর্ষণের অভিযোগ মুছতে পিআর সংস্থার দ্বারস্থ যোগী

আরও পড়ুন: হাথরসে সভা ঠাকুরদের, পাশে বিজেপি

ইতিমধ্যেই দলিত পরিবারের মেয়েকে ঠাকুর পরিবারের ছেলের ধর্ষণের অভিযোগকে ‘মিথ্যা’ বলে দাবি করে জনসভা হয়েছে হাথরসের বুলগড়হী গ্রামে। এ দিন দলিত নেতা চন্দ্রশেখর গ্রামে এসে পরিবারটির পাশে দাঁড়ানো নিয়েও চাপা অশান্তি তৈরি হয়। গ্রামের ঠাকুরদের তরফ থেকে সরাসরি অসন্তোষ প্রকাশ করা হয়— সিবিআই তদন্তের আশ্বাসের পর, সিট তদন্ত করার পরেও কেন তিনি গ্রামে এসে রাজনীতি করছেন। নির্যাতিতার ভাই হতাশ গলায় বলছেন, ‘‘এ রকম চলতে থাকলে আমাদের গ্রাম ছেড়েই চলে যেতে হবে। এখানে টিকতে পারব না। দশ-বারো জনের পরিবার নিয়ে কোথায় যাব, তা-ও জানি না।’’

এ দিন রাতে হাথরস থেকে ফেরার পথে সীমা কুশওয়াহা ফোনে বলেন, ‘‘তরুণীর মা তাঁদের প্রাণসংশয় হতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন। একই সঙ্গে ন্যায়বিচার যাতে হয়, সে জন্য এই মামলা দিল্লিতে স্থানান্তরিত করার বন্দোবস্ত করার জন্যও আমাকে অনুরোধ করেছেন তিনি।’’

সীমা আরও বলেন, ‘‘এদিন দুপুর থেকে আমি ওঁদের সঙ্গে দেখা করার জন্য চেষ্টা করেছি। কিন্তু আমাকে পুলিশ অকারণ দেরি করায়। আমার হয়ে যে যুবক স্থানীয় পুলিশের সাথে যোগাযোগ রক্ষা করছিলেন, তাঁকে বলা হয়, এডিএম সাহেবের সাথে বাকবিতণ্ডায় জড়ালে কী ফল হয়, একটু বুঝুক। বাধ্য হয়ে গাড়িতেই অপেক্ষা করেছি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Hathras Gangrape Uttar Pradesh CBI Hathras
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE