প্রয়োজন নেই কোনও রেশন কার্ডের। লাগবে না কোনও নথিপত্র। বাংলাদেশ, পাকিস্তান বা আফগানিস্তান থেকে আসা অ-মুসলিম শরণার্থীরা আবেদন করলেই পাবেন ভারতীয় নাগরিকত্ব।
আজ নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল (সিএবি) নিয়ে বিতর্কের শুরুতে অমিত শাহ মূলত বাংলার শরণার্থীদের আশ্বস্ত করে বললেন, ‘‘স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে বলছি, রেশন কার্ড থাকুক না থাকুক, কোনও সমস্যা নেই। যে (অ-মুসলিম) শরণার্থীরা ভারতে শরণ নিয়েছেন তাঁরাই নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করতে পারবেন।’’ পাল্টা বক্তব্যে তৃণমূল সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের অভিযোগ, ‘‘ধর্মের নামে বিভাজনের রাজনীতি করছে বিজেপি। যার খেসারত দিতে হচ্ছে বাংলার মানুষকে। রেশন কার্ড বানাতে গিয়ে লাইনে দাঁড়িয়ে প্রাণ হারাচ্ছেন রাজ্যবাসী।’’
প্রশ্ন হল, এত রাজ্য থাকতে কেন পশ্চিমবঙ্গের নাম নিলেন শাহ? কেনই বা তুললেন রেশন কার্ডের প্রসঙ্গ? রাজ্য বিজেপি বলছে, নাগরিকত্ব বিলের প্রভাব যে সব রাজ্যের উপর সবচেয়ে বেশি পড়তে চলেছে তার অন্যতম পশ্চিমবঙ্গ। রাজ্যের বহু মানুষ ওই বিলটি পাশ হলে নাগরিকত্ব পাবেন। যার ফায়দা বিধানসভা ভোটে পাওয়ার আশা করছেন বিজেপি নেতৃত্ব। তাঁদের অভিযোগ, সেই কারণেই এনআরসি এবং সিএবি নিয়ে ভুয়ো প্রচার শুরু করেছে তৃণমূল। যার প্রভাব পড়েছে সাম্প্রতিক উপনির্বাচনে। তিনটি আসনই হারে বিজেপি। ভোট ব্যাঙ্কের সেই ধস ঠেকাতেই আজ বাংলার শরণার্থীদের উদ্দেশে আলাদা বার্তা দিতে মুখ খুলেছেন শাহ। এক দিকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে আশ্বাস দিয়েছেন, রেশন কার্ড তো দূরস্থান, শরণার্থী অ-মুসলিমদের নাগরিকত্ব পেতে কোনও কাগজই দরকার হবে না। শুধু আবেদনই যথেষ্ট। অন্য দিকে রাজ্যের পাঁচ বিজেপি সাংসদ, দিলীপ ঘোষ, লকেট চট্টোপাধ্যায়, সৌমিত্র খাঁ, রাজু বিস্তা ও শান্তনু ঠাকুর বিতর্কে যোগ দিয়ে তৃণমূল সরকারকে নিশানা করেছেন। তৃণমূল সাংসদদের লক্ষ্য করে শাহ প্রশ্ন তুলেছেন, আপনারা কি চান না যে বাঙালিরা নাগরিকত্ব পান?