Advertisement
০২ মে ২০২৪
Bhupesh Baghel

Bhupesh Baghel: এখনই চড়ান, স্মৃতির জেদে উড়ল মুখ্যমন্ত্রী বঘেলের হেলিকপ্টার

বছর দশেকের স্মৃতি বর্মা দেখিয়ে ছেড়েছে, লেখাপড়া করতে করতে হেলিকপ্টারও চড়া যায়!

মুখ্যমন্ত্রী ভূপেশ বঘেলের কপ্টারে স্কুলের পড়ুয়ারা।

মুখ্যমন্ত্রী ভূপেশ বঘেলের কপ্টারে স্কুলের পড়ুয়ারা। নিজস্ব চিত্র

সন্দীপন চক্রবর্তী
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৭ মে ২০২২ ০৭:৫৩
Share: Save:

লেখাপড়া করে যেই, গাড়ি-ঘোড়া চড়ে সেই। ছড়ার ছলে বাংলায় এক কালে শিশুদের শেখানো হত এমন মন্ত্র। বছর দশেকের স্মৃতি বর্মা দেখিয়ে ছেড়েছে, লেখাপড়া করতে করতে হেলিকপ্টারও চড়া যায়!

ইংরেজি মাধ্যম স্কুলের দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্রী স্মৃতি। কথাবার্তায় চটপটে। ছত্তীসগঢ়ে নিজের স্কুলে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ভূপেশ বঘেলকে পেয়ে কপ্টারে চড়ার বায়না ধরেছিল সে। মুখ্যমন্ত্রী বোঝানোর চেষ্টা করেছিলেন, একটু বড় হলে কপ্টারে চড়ানোর ব্যবস্থা করা যাবে। কোনও মতেই মানতে রাজি ছিল না স্মৃতি। তার জেদের কাছে নতিস্বীকার করে শেষমেশ নিজের কপ্টার স্মৃতি ও তার বন্ধুদের ঘুরে আসার জন্য ছেড়ে দিয়েছেন বঘেল। এক চক্কর ঘুরে আবার রঘুনাথ নগরের মাঠে নেমে এসে স্মৃতি বেজায় খুশি। এই খুশিই তাঁর প্রাপ্তি বলে মানছেন বঘেলও।

স্মৃতির এই কাহিনির আগে অবশ্য একটু প্রাক্-কথন আছে। চলতি মাসের গোড়ার দিকে ছত্তীসগঢ়ের কংগ্রেস সরকার ঘোষণা করেছে, দশম ও দ্বাদশ শ্রেণির পরীক্ষায় প্রতি জেলায় যারা মেধাতালিকার শীর্ষে থাকবে, তাদের হেলিকপ্টার সফর করানো হবে। ভবিষ্যতের পড়াশোনার জন্য যা প্রকল্প থাকার, সে সব ব্যবস্থা তো আছেই। কপ্টার-সফর বাড়তি পুরস্কার। মাসে বেশ কয়েক দিন করে মুখ্যমন্ত্রী বঘেল জেলায় জেলায় ঘুরে বেড়ান। স্থানীয় পঞ্চায়েতের সঙ্গে কথা বলেন, গ্রামের বাসিন্দাদের সঙ্গে খাটিয়ায় বসেন, সরকারি প্রকল্পের খোঁজ নেন, কোথায় উন্নয়নের কী ঘাটতি আছে, জানতে চান। স্কুলে গিয়ে পড়ুয়া ও শিক্ষকদের সঙ্গে কথা বলাও তাঁর অভ্যাস। এই কর্মসূচির নাম ‘ভেট-মুলাকাত’। রাজ্যবাসীর উদ্দেশে মুখ্যমন্ত্রী নিজে বলে থাকেন ‘ভূপেশ তুহার দোয়ার’। অনেকটা বাংলার ‘দুয়ারে সরকার’-এর আদল! এই রকম ‘ভেট-মুলাকাতে’ গিয়েই স্মৃতির সঙ্গে সামনা-সামনি হয়েছিলেন বঘেল।

স্বামী আত্মানন্দ ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলে গিয়ে ক্লাসে ঢুকে মুখ্যমন্ত্রী কথা বলছিলেন পড়ুয়া ও শিক্ষক-শিক্ষিকাদের সঙ্গে। ছিলেন মুখ্যমন্ত্রীর দফতরের অফিসারেরাও।

ছেলেমেয়েরা যেমন মুখ্যমন্ত্রীকে প্রশ্ন করে, তাঁর গরমের ছুটি কবে পড়বে? এ সবের মাঝেই দ্বিতীয় শ্রেণির স্মৃতি বলে, টপারদের কপ্টারে চড়ানোর কথা সে বাড়িতে শুনেছে। স্মৃতি বলে, ‘‘আমিও ক্লাসের টপার। আমিও কপ্টারে চড়ব!’’ মুখ্যমন্ত্রী হেসে বোঝানোর চেষ্টা করেন, নিশ্চয়ই চড়বে। তবে দশম শ্রেণিতে ভাল রেজাল্ট করলে তখন। এত দেরি সইতে চায়নি স্মৃতি। সে বলে, ‘‘সে তো অনেক দেরি! আমাদের এখনই চড়াতে হবে।’’

এমন জেদের মুখে মুখ্যমন্ত্রী তাঁর আধিকারিকদের নির্দেশ দেন স্মৃতি ও তার বন্ধুদের কপ্টারে ঘুরিয়ে আনতে। স্মৃতির সঙ্গে পঞ্চম শ্রেণির হংসিকা জয়সওয়াল, তৃতীয় শ্রেণির অংশু প্রজাপতির মতো কয়েক জনকে রঘুনাথ নগরের উপর দিয়ে আকাশ-পথে সফর করিয়ে নিয়ে আসেন আধিকারিকেরাই। সেই সময়টা স্কুলেই বসে ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। বঘেলের কথায়, ‘‘আবদার না শুনে আমরা চলে এলে বাচ্চাদের মন খারাপ হত। ওদের কথা শোনা হয়েছে বলে খুব খুশি হয়েছে বাচ্চারা। এটাই আমাদেরও সব চেয়ে বড় খুশির কারণ।’’ তিনিই জানাচ্ছেন, সরগুজা জেলার কিছু স্কুল-পড়ুয়া মুখ্যমন্ত্রীর কাছে আক্ষেপ করেছে, তারা কখনও জঙ্গলে বেড়াতে যায়নি। এই কথা শুনে মুখ্যমন্ত্রী তাঁর দফতরকে নির্দেশ দিয়েছেন, পড়ুয়াদের একটি দলকে রায়পুরে এনে রেখে জঙ্গল-সাফারি করিয়ে দিতে হবে। কয়েক জনকে দু’দিন ‘অতিথি’ হিসেবে রাখা হবে মুখ্যমন্ত্রীর আবাসেও।

বঘেলকে দুয়ারে পেয়ে স্বপ্নের উড়ান পাচ্ছে ছোটদের কিছু শখ-আবদার!

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Bhupesh Baghel
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE