হিমন্তবিশ্ব শর্মা
এক দিকে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর নিরন্তর কটাক্ষ, অন্য দিকে সংবাদমাধ্যমের লাগাতার সমালোচনার মুখে পড়ে শিক্ষা দফতরের ভার ছেড়ে দিতে চাইলেন শিক্ষামন্ত্রী হিমন্তবিশ্ব শর্মা।
গত কাল মাধ্যমিক পরীক্ষার সমাজবিজ্ঞান ও অসমীয়া প্রশ্নপত্র ‘ফাঁস’ হওয়ার জেরে দু’দফায় পরীক্ষার দিন বদল করল মধ্য শিক্ষা বোর্ড বা সেবা। প্রথমে সেবা অধ্যক্ষ রমেশচন্দ্র জৈন জানিয়েছিলেন, নির্দিষ্ট দিনে, ৭ মার্চই হবে অসমীয়া পরীক্ষা। ২৩ ফেব্রুয়ারির বদলে ৮ মার্চ হবে সমাজবিজ্ঞানের পরীক্ষা। তিনি দাবি করেন, প্রশ্নপত্র ফাঁস হয়নি। ভুল রঙের প্যাকেট পরীক্ষা কেন্দ্রে যাওয়ায় সাময়িক সমস্যা ও বিভ্রান্তি হয়েছিল মাত্র। কিন্তু সকলের সন্দেহ নিরসনের জন্যই নতুন প্রশ্নপত্র তৈরি করে পরীক্ষা নেওয়া হবে। তাই সমাজবিজ্ঞান পরীক্ষা পিছোতে হচ্ছে। কারণ সমাজবিজ্ঞানের নতুন প্রশ্নপত্র দু’দিনে ছাপা সম্ভব নয়।
জৈনের মতোই বাক্সা ও হোজাইয়ের জেলাশাসকরাও রিপোর্ট দিয়ে জানান, দু’টি স্কুলে প্রশ্নপত্রের ভুল প্যাকেট গিয়েছিল। প্রধানশিক্ষক তা দেখেই ফেরত পাঠিয়েছেন। প্রশ্ন ফাঁস হয়নি। কিন্তু বিভিন্ন স্থানে প্রশ্ন ফাঁসের প্রতিবাদে বিক্ষোভ শুরু হয়েছে। বিক্ষোভ চলেছে আজও। এ দিন কৃষকমুক্তি সংগ্রাম সমিতি ও এনএসইউআই সমর্থকরা সেবা দফতরে চড়াও হয়। রাজধানী মসজিদের সামনে শিক্ষামন্ত্রীর কুশপুতুল পোড়ায় আমসু। প্রতিবাদ হয় ধুবুরিতেও। বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমেও সমালোচিত হন শিক্ষামন্ত্রী।
প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তরুণ গগৈ হিমন্তর তীব্র সমালোচনা করে বলেন, ‘‘যেখানে গোলমাল সেখানেই হিমন্ত। আমাদের আমলেও হিমন্ত অনেক সমস্যায় ফেলেছে। ও কথায় যত দক্ষ, কাজে তেমন নয়। রিপুন বরা, শরৎ বরকটকিদের সময় এমন গণ্ডগোল হয়নি।’’ তিনি প্রশ্ন ফাঁসের ঘটনার বিচারবিভাগীয় তদন্ত দাবি করেন। এই দ্বিমুখী সমালোচনার মুখে দাঁড়িয়ে হিমন্ত এ দিন সাংবাদিক সম্মেলন করে বলেন, ‘‘আমায় নিয়ে যখন এত সমস্যা, তখন আমি সংবাদমাধ্যমের কাছেই আত্মসমর্পণ করছি। যা করেছি ভালর জন্য করেছি। কিন্তু দায়িত্ব থেকে অব্যহতি চেয়ে মুখ্যমন্ত্রীকে জানাব।’’
তিনি এ দিনও জোর দিয়ে জানান, প্রশ্ন ফাঁস হওয়ার কোনও ঘটনাই ঘটেনি। তবু অপপ্রচারের জেরে ও মানুষের সন্দেহ দূর করতেই নতুন প্রশ্নপত্র তৈরি হবে। তাঁর অভিযোগ, সংবাদমাধ্যম ও রাজনৈতিক নেতাদের একাংশ তাঁর ভাবমূর্তি নষ্ট করতে গিয়ে খামোকা ছাত্রছাত্রীদের
কষ্ট দিচ্ছে। তিনি জানান, সকলের দাবি মেনে হাইকোর্টের বিচারপতিকে দিয়ে ঘটনার তদন্ত করানোও যেতে পারে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy