অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্তবিশ্ব শর্মা। —ফাইল চিত্র।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী তাঁকে বলেন ‘বারাক’। মোদীর দল বিজেপিরই ওজনদার নেতা হিমন্তবিশ্ব শর্মা কিন্তু বললেন ‘হুসেন’। ভারতের সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিয়ে আমেরিকার প্রাক্তন প্রেসিডেন্টের সাম্প্রতিক মন্তব্যের পরে তাঁর নামটি তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে ছেঁটে-কেটে নিলেন অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত। টুইটারে লিখলেন, ভারতেও অনেক ‘হুসেন ওবামা’ আছেন। এঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়াটাই তাঁদের অগ্রাধিকার!
প্রধানমন্ত্রী মোদী গত কাল আমেরিকার হোয়াইট হাউসের লনে দাঁড়িয়ে ভারতীয় গণতন্ত্রের জয়গান গেয়ে বলেছিলেন, ‘‘আমাদের সরকারে বৈষম্যের কোনও জায়গা নেই।’’ ঠিক একই সময়ে এক সাক্ষাৎকারে ওবামা বলেছিলেন, ‘‘আমার সঙ্গে মোদীর কথা হলে এটাই বলার থাকত যে, আজ আপনি সংখ্যালঘুদের না দেখলে দেশটা টুকরো হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হবে।’’ এর পরেই এক ভারতীয় সাংবাদিক টুইটারে প্রশ্ন রেখেছিলেন, ‘গুয়াহাটিতে কি ধর্মীয় ভাবাবেগে আঘাত করার অভিযোগে ওবামার বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের হয়েছে? অসম পুলিশ কি ওমাবাকে কোনও বিমান থেকে নামিয়ে গ্রেফতার করার জন্য ওয়াশিংটন রওনা হয়েছে?’
গত ফেব্রুয়ারিতে কংগ্রেস নেতা পবন খেরাকে দিল্লিতে বিমান থেকে নামিয়ে গ্রেফতার করেছিল অসম পুলিশ। গত বছর গ্রেফতার হয়েছিলেন গুজরাতের বিধায়ক জিগ্নেশ মেবাণী। অনেকের মতে, বিরোধী আওয়াজ তুললেই অসম পুলিশ যে কোনও প্রান্ত থেকে কাউকে গ্রেফতার করে আনতে পারে— এমনই ইঙ্গিত ছিল ওই টুইটে। হিমন্ত তার উত্তরে টুইটারেই লিখেছেন, ‘ভারতেই অনেক হুসেন ওবামা আছেন। ওয়াশিংটন পাড়ি দেওয়ার আগে তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়াটাই আমাদের অগ্রাধিকার হওয়া উচিত। অসম পুলিশ আমাদের নিজস্ব অগ্রাধিকার অনুযায়ী কাজ করবে।’
ওবামার সঙ্গে তাঁর হৃদ্যতার কথা এক সময়ে অভিনেতা অক্ষয়কুমারকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ফলাও করে বলেছিলেন মোদী। এমনকি তাঁর মুখে ‘দুই বন্ধুর বাক্যালাপের’ উদ্ধৃতি শুনে অনেকে প্রশ্ন তুলেছিলেন, ওবামা কি ইংরেজিতে মোদীকে ‘তুই’ বলেন? এ দিন সেই খোঁচা দিয়েই কংগ্রেস নেত্রী সুপ্রিয়া শ্রীনতে বলেছেন, ‘‘তা হলে ‘আমার বন্ধু বারাক’ আসলে ‘হুসেন ওবামা’! মোদীকে হোয়াইট হাউসে যে প্রশ্ন করা হয়েছিল, হিমন্ত তারই উত্তর দিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী, বিদেশ মন্ত্রক, ভারত সরকারের এই বিষয়ে অবস্থান কী?’’ কংগ্রেস মুখপাত্র জয়রাম রমেশের বক্তব্য, অসমের মুখ্যমন্ত্রী কোনও ছুটকো-ছাটকা নেতা নন। তিনি মোদীর ঘনিষ্ঠ। আমেরিকায় মোদীর মন্তব্য আদৌ আন্তরিক ছিল কি না, সেই প্রশ্ন তুলেছেন তিনি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy