ভিড়: শুক্রবার ধানবাদের একটি শো-রুমে। ছবি: চন্দন পাল।
গত জন্মদিনেই রাঁচীর ডোরান্ডার কলেজ ছাত্র রাজীব সিংহ বাবার কাছে মোটরবাইকের আব্দার জানিয়েছিলেন। নানা অজুহাতে ছেলের সেই আব্দার নাকচ করে দিয়েছিলেন অমর সিংহ। কিন্তু গত কাল সিদ্ধান্ত পাল্টে সেই বাবাই ছেলেকে জিজ্ঞেস করেন, ‘‘কী রে তোর মোটরবাইক লাগবে না? চল আজ কিনে দেব।’’ অবাক ছেলে!
বৃহস্পতিবার থেকেই রাজীবের বাবার মতো অনেকেই রাঁচী ও দুর্গাপুরের বিভিন্ন শো রুমে বাইক কেনার জন্য ভিড় জমিয়েছিলেন। যাঁরা সিদ্ধান্তহীনতায় ভুগে বৃহস্পতিবারটাকে নষ্ট করেছেন, তাঁরা শুক্রবার শো-রুমে কিনতে গিয়ে দেখছেন অনেক শো-রুমেরই ‘স্টক’ শেষ। দুর্গাপুরের বেনাচিতির একটি শো-রুমের কর্ণধার চন্দন দত্ত যেমন জানান, ‘‘ভোর থেকে লম্বা লাইন পড়েছিল। কিন্তু অনেকেই হতাশ হয়ে ফিরে যাচ্ছেন। কারণ অত গাড়ি শো-রুমে মজুত নেই।’’
সু্প্রিম কোর্টের নির্দেশ, দূষণজনিত কারণে ভারত স্টেজ-থ্রি (বিএস-৩) মডেলের কোনও মোটরবাইক বা স্কুটার ৩১ মার্চের পরে আর শো-রুম থেকে বিক্রি করা ও রেজিস্ট্রেশন করা যাবে না। সুপ্রিম কোর্টের এই নির্দেশে রাঁচী, জামশেদপুর, ধানবাদ, বোকারো, ডালটনগঞ্জের মতো শহরে মোটরবাইকের শো-রুমগুলিতে পড়েছে ছাড় দেওয়ার ধুম। স্কুটার ও মোটরবাইকের মডেলের উপরে ১২ হাজার থেকে ২২ হাজার টাকা পর্যন্ত ছাড় পাওয়া যাচ্ছে। সঙ্গে বিনা খরচে এক বছরের বিমাও।
কাঁকের একটি শো-রুমের কর্মী অবিনাশ কুমার। তাঁর কথায়, ‘‘গত কাল, এক দিনেই আমরা ৬০টি মোটরবাইক ও ৩০টি স্কুটার বিক্রি করেছি। আমরা এখন আর অগ্রিম বুকিং নিচ্ছি না। শুধু নগদে আর কার্ড পেমেন্টে কেনাবেচা চলছে।’’ আজ সকাল থেকে দুপুরের মধ্যে ৩০টি মোটরবাইক বিক্রি হয়েছে ওই শো-রুমেই।
একই অবস্থা ধানবাদের একটি মোটরবাইকের শো-রুমে। এই শো-রুমের মালিক, সুজিত মজুমদার বলেন, ‘‘পরিস্থিতি নোট বাতিলের কথাকে মনে করিয়ে দিচ্ছে। এ বার হচ্ছেন লাভবান। মোটরবাইক-স্কুটার মিলিয়ে গত কাল ১৫০টি বিক্রি করেছি।’’ রাত ১২টা পর্যন্ত তাঁকে শো-রুম খুলে রাখতে হয় বলে জানান। এমন ছাড় পেয়ে খুশি গ্রাহকেরাও। দুর্গাপুরের বাসিন্দা মোনালি ভৌমিক নামে এক জন স্কুটি কিনতে এসেছিলেন। তিনি ১৪ হাজার টাকা ছাড় পেয়েছেন। তাঁর কথায়, ‘‘এমনটা হতে পারে, ভাবিনি!’’
(সহ প্রতিবেদন: সুব্রত সীট)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy