Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

ভারতই প্রকৃত বন্ধু, মোদীকে ফোনে বলেছেন ট্রাম্প

নির্বাচনী প্রচারেই ইঙ্গিত দিয়ে রেখেছিলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। বলেছিলেন, ‘‘ভারতই হতে চলেছে সবচেয়ে ভাল বন্ধু।’’ ভারতের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ফোনে কথা বলার পরেও সেই বার্তাই দিলেন সদ্য নির্বাচিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট।

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ২৬ জানুয়ারি ২০১৭ ০২:৫৫
Share: Save:

নির্বাচনী প্রচারেই ইঙ্গিত দিয়ে রেখেছিলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। বলেছিলেন, ‘‘ভারতই হতে চলেছে সবচেয়ে ভাল বন্ধু।’’ ভারতের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ফোনে কথা বলার পরেও সেই বার্তাই দিলেন সদ্য নির্বাচিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট। হোয়াইট হাউস তার বিবৃতিতে সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছে, ‘‘মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ভারতকে প্রকৃত বন্ধু বলে মনে করেন। দুই নেতাই কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে লড়ার জন্য প্রতিজ্ঞাবদ্ধ।’’

কাল ভারতীয় সময় রাত সাড়ে এগারোটা নাগাদ নরেন্দ্র মোদীকে ফোন করেছিলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। দু’জনের মধ্যে কী কথা হয়েছে, তৎক্ষণাৎ জানা যায়নি। মোদী শুধু পর পর কয়েকটি টুইট করে জানিয়েছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্টের সঙ্গে সৌহার্দ্যপূর্ণ কথাবার্তা হয়েছে। দু’দেশের মধ্যে বন্ধুত্বের সম্পর্ক দৃঢ় করতে দুই রাষ্ট্রনেতাই একমত হয়েছেন। মোদী এ-ও জানিয়েছিলেন, ট্রাম্পকে ভারতে আসার জন্য আমন্ত্রণ জানিয়েছেন তিনি। পরে হোয়াইট হাউস কালকের কথোপকথন নিয়ে সংবাদমাধ্যমে একটি বিবৃতি পেশ করেছে। যেখানে বলা হয়েছে, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এ বছরের শেষের দিকে আমেরিকায় আসার জন্য প্রধানমন্ত্রী মোদীকে আমন্ত্রণ জানিয়ে রেখেছেন।

আর কী কী বিষয়ে কথা হয়েছে, দুই রাষ্ট্রনেতার? হোয়াইট হাউসের একটি সূত্র জানাচ্ছে, প্রতিরক্ষা, বাণিজ্য, নিরাপত্তার পাশাপাশি সন্ত্রাসবাদ নিয়েও আলোচনা হয়েছে মোদী-ট্রাম্পের। কথার পরে নিরাপত্তা সংক্রান্ত একটি মউ-ও সই হয়েছে দু’দেশের মধ্যে। কিন্তু পাকিস্তান, চিন, রাশিয়াকে বাদ দিয়ে ট্রাম্প মোদীকে আগে কেন ফোন করলেন, তার জন্য কপালে ভাঁজ পড়েছে অনেকেরই। তবে কূটনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে, ভারত-আমেরিকার সম্পর্ক বরাবরই মজবুত। আর সেটাকে আরও মজবুত করতেই এই পদক্ষেপ। নির্বাচনের আগে নিজের একের পর এক প্রচার সভাতেও ভারতকে বন্ধুত্বের বার্তা দিয়ে এসেছেন ট্রাম্প। গদিতে বসে সেই কথাই রাখলেন তিনি।

তবে ট্রাম্পের এই পদক্ষেপ নিঃসন্দেহে চাপে ফেলেছে ভারতের দুই পড়শি দেশ চিন আর পাকিস্তানকে। ভারত অবশ্য এখনই বিশেষ হইচই করতে চাইছে না। একটি সূত্র যদিও জানাচ্ছে, ট্রাম্প প্রথম থেকেই ইসলামি সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে যে ভাবে কথা বলে আসছেন, তা নিয়ে আশাবাদী সাউথ ব্লক।

পাক মদতপুষ্ট সন্ত্রাসে জেরবার ভারত এখন দেখতে চায়, সন্ত্রাসবাদ দমনে বাস্তবে ট্রাম্পের আমেরিকা তাদের কতটা সাহায্য করে। একই ভাবে প্রথম দিন থেকে বেজিংকেও চাপে রেখেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। তাঁর জমানায় দক্ষিণ চিন সাগরে সমুদ্র বাণিজ্যের একচ্ছত্র অধিপতি যে চিন হতে পারবে না, তার বার্তাও দিয়ে রেখেছেন ট্রাম্প। ফলে বাকি দুই পড়শির থেকে কিছুটা হলেও এখন আমেরিকার সঙ্গে বন্ধুত্বে এগিয়েই রয়েছে ভারত।

যদিও কাঁটাও রয়েছে বিস্তর। তার মধ্যে অন্যতম এইচ ওয়ান-বি ভিসা। ট্রাম্প এ নিয়ে কী নীতি নেন, তার দিকে চেয়ে রয়েছে ভারত এবং আমেরিকায় বসবাসকারী ভারতীয়রা। আসলে ট্রাম্পের ‘আমেরিকা ফার্স্ট’ নীতি নিয়েই যথেষ্ট উদ্বেগে রয়েছেন ভারতীয় শিল্পপতিদের একটা বড় অংশও। ট্রাম্প আজই ঘোষণা করে দিয়েছেন, নিজেদের স্টিল পাইপলাইন নিজেরাই বানাবে আমেরিকা। যা ভারতীয় সংস্থাগুলির জন্য খুব একটা ভাল খবর নয়। আমেরিকায় স্টিলের পাইপ সরবরাহকারী যে বিদেশি সংস্থাগুলি রয়েছে, তার মধ্যে অন্যতম ভারত। ট্রাম্পের এই সিদ্ধান্ত নিঃসন্দেহে ওই সংস্থাগুলির উপর প্রভাব ফেলতে চলেছে। আরও আছে। সারা বিশ্বে গর্ভপাতে সাহায্যকারী স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাগুলিকে আমেরিকা আর টাকা দেবে না বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট। ট্রাম্পের এই বিতর্কিত সিদ্ধান্তেও বেশ কিছু ভারতীয় স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা ধাক্কা খাবে বলে মনে করা হচ্ছে।

ফলে মোদী-ট্রাম্প প্রাথমিক আলোচনা পর্ব যতই মসৃণ হোক না কেন, ভবিষ্যতের রাস্তা আদৌ কতটা মসৃণ, তা বলবে ভবিষ্যৎই।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Narendra Modi Donald Trump
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE