শেখ হাসিনা ভারতে বসে উস্কানি দিচ্ছেন বলে দাবি করছে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার। এ নিয়ে রবিবার একটি বিবৃতিও জারি করেছে ঢাকা। এ বার সেই বিবৃতির পাল্টা দিল নয়াদিল্লিও। ভারত সরকার বিবৃতি দিয়ে জানিয়ে দিল, বাংলাদেশি জনতা ভারতের কাছে বন্ধুবৎসল। বাংলাদেশের সাধারণ জনতার স্বার্থের পরিপন্থী কোনও কাজে ভারতের মাটি ব্যবহার করে করতে দেওয়া হয় না।
ঢাকায় নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনার প্রণয় বর্মাকে রবিবার তলব করে বাংলাদেশের বিদেশ মন্ত্রক। পরে এ বিষয়ে একটি বিবৃতিও প্রকাশ করে সে দেশের অন্তর্বর্তী সরকার। বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস সমাজমাধ্যম পাতাতেও তা পোস্ট করেন। এ বার সেই বিবৃতির প্রেক্ষিতে পাল্টা বিবৃতি প্রকাশ করল দিল্লি। ভারতীয় বিদেশ মন্ত্রক জানাল, বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার রবিবার যে সব দাবি করেছে, তা স্পষ্ট ভাবে প্রত্যাখ্যান করছে দিল্লি।
ওই বিবৃতিতে নয়াদিল্লি আরও জানিয়েছে, ভারত সবসময় বাংলাদেশে শান্তিপূর্ণ পরিবেশে অবাধ, সুষ্ঠু, অন্তর্ভুক্তিমূলক এবং বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচনের পক্ষে। এ বিষয়ে ভারত সরকার যে ধারাবাহিক ভাবে নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করে আসছে, তা-ও জানানো হয়েছে দিল্লির বিবৃতিতে। নয়াদিল্লি স্পষ্ট করে দিয়েছে, “বাংলাদেশের বন্ধুবৎসল জনতার স্বার্থবিরোধী কোনও কাজে কখনোই ভারতীয় ভূখণ্ডকে ব্যবহার করতে দেওয়া হয় না। আমরা আশা করি, বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার (বাংলাদেশের) অভ্যন্তরীণ আইনশৃঙ্খলা নিশ্চিত করবে। শান্তিপূর্ণ নির্বাচন আয়োজনের জন্য সমস্ত প্রয়োজনীয় পদক্ষপ করবে।”
বস্তুত, রবিবারই এক বিবৃতিতে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার ভারতীয় দূতকে তলব নিয়ে মন্তব্য করেছে। বিবৃতিতে তারা বলেছে, “ভারতীয় হাইকমিশনারকে ডেকে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে সাজাপ্রাপ্ত শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান কামালকে বাংলাদেশের কাছে প্রত্যর্পণের অনুরোধ পুনর্ব্যক্ত করেছে। হাইকমিশনারকে জানানো হয়েছে যে ভারতে অবস্থানকারী পলাতক অপরাধী শেখ হাসিনা বাংলাদেশের শান্তি স্থিতিশীলতা ও নিরাপত্তা বিঘ্ন করা ও আসন্ন নির্বাচন বানচাল করার অসাধু উদ্দেশ্যে ক্রমাগত ভাবে উস্কানিমূলক বক্তব্য দিয়ে যাচ্ছেন ও তাঁর দলের সমর্থকদের সন্ত্রাসী কার্যকলাপ চালানোর জন্য নির্দেশনা দিচ্ছেন।”
আরও পড়ুন:
ঢাকার ওই বিবৃতিতে এ-ও বলা হয়েছে, “ভারত সরকারকে অনুরোধ করা হয়েছে যেন তারা অনতিবিলম্বে তাঁর এবং ভারতে পলাতক তাঁর সাঙ্গ-পাঙ্গদের এ সকল ফ্যাসিস্ট টেররিস্ট কর্মকাণ্ড বন্ধ করে দেয়। ভারতীয় হাইকমিশনারকে অনুরোধ জানানো হয়েছে যে শরিফ ওসমান হাদীর হত্যাচেষ্টাকারীরা বাংলাদেশ থেকে ভারতে পালিয়ে যাওয়ার প্রচেষ্টা রোধে ভারত সরকার যেন বাংলাদেশের সাথে সহযোগিতা করে এবং তারা ভারতে পালিয়ে যেতে সক্ষম হলে তাদেরকে যেন ভারতীয় কর্তৃপক্ষ অবিলম্বে পাকড়াও করার উদ্যোগ নেয় এবং বাংলাদেশের কাছে তাদেরকে প্রত্যর্পণ করে।”