Advertisement
০৪ মে ২০২৪

সড়ক-সংযোগে ব্রাত্য করে পাকিস্তানকেই চাপ দিল্লির

পাকিস্তানকে বাইরে রেখে প্রায় নিঃশব্দে দক্ষিণ এশিয়ার একটি বিস্তীর্ণ অঞ্চলে নিজেদের পণ্য এবং যাত্রী চলাচল নিশ্চিত এবং মসৃণ করল নয়াদিল্লি। বাংলাদেশ, নেপাল এবং ভুটানের সঙ্গে ভারত এই সপ্তাহের গোড়ায় যাত্রী ও পণ্যবাহী যান চলাচল চুক্তিটি সেরে ফেলায় আঞ্চলিক রাজনীতিতে পাকিস্তানকে কিছুটা কোণঠাসা করে ফেলা সম্ভব হল বলেও মনে করা হচ্ছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৯ জুন ২০১৫ ০৩:২৩
Share: Save:

পাকিস্তানকে বাইরে রেখে প্রায় নিঃশব্দে দক্ষিণ এশিয়ার একটি বিস্তীর্ণ অঞ্চলে নিজেদের পণ্য এবং যাত্রী চলাচল নিশ্চিত এবং মসৃণ করল নয়াদিল্লি। বাংলাদেশ, নেপাল এবং ভুটানের সঙ্গে ভারত এই সপ্তাহের গোড়ায় যাত্রী ও পণ্যবাহী যান চলাচল চুক্তিটি সেরে ফেলায় আঞ্চলিক রাজনীতিতে পাকিস্তানকে কিছুটা কোণঠাসা করে ফেলা সম্ভব হল বলেও মনে করা হচ্ছে।

দক্ষিণ এশিয়ার একটি বড় অংশ এবং ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের উন্নয়নের প্রশ্নে এই চুক্তি অত্যন্ত উপযোগী এবং গুরুত্বপূর্ণ বলেই মনে করা হচ্ছে। গত নভেম্বরে কাঠমান্ডুর সার্ক সম্মেলনে সংশ্লিষ্ট দেশগুলির মধ্যে এই চুক্তিটি হওয়ার কথা ছিল। সার্কভুক্ত যে সব দেশ স্থলসীমান্ত ভাগ করে নেয়, তাদের মধ্যে অবাধে পণ্যবাহী যান চলাচল সবার জন্যই অর্থনৈতিক উন্নয়নের দরজা খুলে দেবে— এমনটাই ঘোষণা করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। কিন্তু ভারত চাইলেও গোটা বিষয়টিতে জল ঢেলে দেয় ইসলামাবাদ। অন্য রাষ্ট্রগুলি এই চুক্তির খসড়া নিয়ে পুরোপুরি প্রস্তুত হয়ে সার্ক-এ গেলেও পাকিস্তান জানিয়ে দেয় তারা এ বিষয়ে মনঃস্থির করতে পারছে না। তাদের আরও সময় প্রয়োজন। মোদী সে সময় বলেছিলেন, ‘‘আমরা সবাইকে সঙ্গে নিয়ে এগোতে চাই। তবে কেউ যদি অনিচ্ছুক হয়, তাকে বাদ রেখেই বাকিরা এগোক!’’ তখনই স্থির হয়ে গিয়েছিল— সার্ক-এর ছাতায় যদি না-ই করা যায়, তা হলে ইসলামাবাদকে বাদ রেখে বাকি ইচ্ছুক দেশগুলির মধ্যে আলাদা করে এই যোগাযোগ ব্যবস্থা শুরু করে দেওয়া হবে।

ঘটনা হল, সার্ক-এর দেশগুলির মধ্যে এ ধরনের কোনও বহুপাক্ষিক উদ্যোগও খুবই অভিনব। বিদেশসচিব এস জয়শঙ্কর মার্চে তাঁর সার্ক যাত্রার সময় পৃথক পৃথক ভাবে আলোচনা করেন সংশ্লিষ্ট রাষ্ট্রপ্রধানদের সঙ্গে। ইতিমধ্যেই ভারতের সঙ্গে নেপাল এবং বাংলাদেশের দ্বিপাক্ষিক যান চলাচল চুক্তি স্বাক্ষর হয়েছে। কিন্তু এখন বিষয়টি বহুপাক্ষিক হয়ে যাওয়ায় সামগ্রিক ভাবে বাণিজ্য বাড়ার ক্ষেত্রে তা বড় ভূমিকা নিতে পারবে বলে আশা করা হচ্ছে। এই চুক্তির আওতাভুক্ত দেশগুলির মধ্যে যাত্রিবাহী বাস, পণ্যবাহী ট্রাক ও ব্যক্তিগত ব্যবহারের গাড়ি চলতে পারবে। শুল্ক ও অভিবাসন কর্তৃপক্ষের যাবতীয় আইন কানুন সম্পন্ন হবে নিজ নিজ দেশের আইন অনুযায়ী।

কূটনৈতিক সূত্রের বক্তব্য, অনেকটা ইউরোপীয় ইউনিয়নের আদলেই নতুন এই চুক্তিটি করা হয়েছে। বাংলাদেশ এবং ভারতের মধ্যে ইতিমধ্যেই যাত্রী ও পণ্যবাহী যানবাহন চলাচল করছে। এই নতুন চুক্তির ফলে এক দেশ, অন্য দেশের ভূমি ব্যবহার করে তৃতীয় দেশেও পণ্য নিয়ে যেতে পারবে। একই
ভাবে ভারতের ভূখণ্ডের ওপর দিয়ে ভুটান ও নেপালে যেতে পারবে বাংলাদেশের গাড়ি। চুক্তিতে বলা হয়েছে এই চারটি দেশের বাইরে অন্য কোনও দেশ চাইলে এই অবাধ যান চলাচল প্রক্রিয়ায় যুক্ত হতে পারে। তবে তার জন্য চার দেশের ঐকমত্যের প্রয়োজন রয়েছে। এই চারটি দেশের যে কোনও একটি দেশ এ ব্যাপারে দ্বিমত পোষণ করলে নতুন রাষ্ট্রের অন্তর্ভুক্তি আটকে যাবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE