পহেলগাঁওয়ে জঙ্গিহানার প্রত্যাঘাত করেছে ভারত। মঙ্গলবার গভীর রাতে পাকিস্তান ও পাক অধিকৃত কাশ্মীরের ন’টি জায়গায় হামলা চালিয়েছে ভারতীয় সেনা। এই অভিযানের নাম দেওয়া হয়েছে ‘অপারেশন সিঁদুর’। এ বার সেই হামলার ভিডিয়োই প্রকাশ্যে আনল সেনা।
বুধবার দুপুরে পাকিস্তান ও পাক অধিকৃত কাশ্মীরের একাধিক জায়গায় হামলার ভিডিয়ো প্রকাশ্যে এনেছে ভারতীয় সেনা। সেগুলিতে দেখা যাচ্ছে, আকাশপথে লক্ষ্যের দিকে এগোচ্ছে বায়ুসেনার যুদ্ধবিমানগুলি। তার পর নিখুঁত হিসাব কষে ছোড়া হচ্ছে ক্ষেপণাস্ত্র। পরমুহূর্তেই বিস্ফোরণে কেঁপে উঠছে মাটি। ভারতের প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের দাবি, পাকিস্তান এবং পাক অধিকৃত কাশ্মীরের ন’টি জায়গায় জঙ্গি পরিকাঠামো লক্ষ্য করে ‘প্রিসিশন স্ট্রাইক’ করা হয়। এই ন’টি জায়গার মধ্যে চারটি পাকিস্তানে এবং পাঁচটি পাক অধিকৃত কাশ্মীরে। বহাওয়ালপুর, মুরিদকে এবং সিয়ালকোট, মূলত এই তিনটি এলাকার জঙ্গিঘাঁটিগুলি গুঁড়িয়ে দেওয়াই ছিল সেনার মূল লক্ষ্য। ওই সব জায়গায় বসেই ভারতে সন্ত্রাসবাদী হানার ছক কষা হয়েছিল বলে দাবি ভারতের। বহাওয়ালপুরের উপকণ্ঠে এনএইচ-৫ যেখান দিয়ে গিয়েছে, সেখানে প্রায় ১৫ একর জমি জুড়ে রয়েছে জৈশ-ই-মহম্মদ (জেইএম)-এর প্রধান প্রশিক্ষণ এবং প্রচারকেন্দ্র। মঙ্গলবার রাতে ২০১৯ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি পুলওয়ামায় সন্ত্রাসী হামলায় যুক্ত ওই জঙ্গিগোষ্ঠীর ঘাঁটিতে আক্রমণ করে ভারত। অন্য দিকে, লশকর-এ-ত্যায়বার অন্যতম ঘাঁটি মুরিদকেতেও আছড়ে পড়ে ভারতের ক্ষেপণাস্ত্র।
রাত ১টা ৪ মিনিটে হামলা হয় কোটলিতে, ১টা ৭ মিনিটে গুলপুরে। তারও চার মিনিটের মাথায় বিস্ফোরণে কেঁপে ওঠে মেহমুনা জোয়াও। এর পর একে একে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয় মুজফ্ফরাবাদের সওয়াই নালা, বরনালা, সরজল, চক আমরু এবং বাগের জঙ্গিঘাঁটি। ইতিমধ্যে ‘অপারেশন সিঁদুর’-এর পর পাকিস্তানে ধ্বংসের ছবি এবং ভিডিয়োও প্রকাশ্যে এসেছে। সেই ছবিগুলি থেকে স্পষ্ট, কী ভাবে পাকিস্তানের একাধিক ইমারত গুঁড়়িয়ে দিয়েছে ভারতীয় সেনা। ভারতের দাবি, ওই ইমারতগুলি জঙ্গিদের ঘাঁটি ছিল। সেগুলিতে প্রশিক্ষণ দেওয়া হত। গোয়েন্দা সূত্রে খবর, বিভিন্ন প্রযুক্তির ব্যবহার এবং প্রচুর সূত্র কাজে লাগিয়ে ওই ন’টি জায়গা চিহ্নিত করেছিল ভারতীয় গুপ্তচর সংস্থা। সেই তথ্য সেনার হাতে তুলে দেওয়া হয়। শুরু হয় ‘অপারেশন সিঁদুর’-এর তোড়জোড়। তার পরেই মঙ্গলবার রাতে সুযোগ বুঝে প্রত্যাঘাত করে ভারত।