Advertisement
১৯ মে ২০২৪

নোটবন্দির পরেও বৃদ্ধির হার দেখে বিস্মিত শিল্পমহল

কেউই মুখ খুলছেন না। কিন্তু নরেন্দ্র মোদী সরকারের কাগজে-কলমে আর্থিক বৃদ্ধির হার দেখে বিস্মিত শিল্পমহলও।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৬ মার্চ ২০১৭ ০৩:৫২
Share: Save:

কেউই মুখ খুলছেন না। কিন্তু নরেন্দ্র মোদী সরকারের কাগজে-কলমে আর্থিক বৃদ্ধির হার দেখে বিস্মিত শিল্পমহলও।

বিরোধীরা প্রশ্ন তুলবেন, সেটা স্বাভাবিক। কিন্তু শিল্পমহলও বলছে, তাদের আয়-ব্যয়ের হিসেব অনুযায়ী, নভেম্বরের নোট নাকচের পরে মার খেয়েছে ব্যবসা। কমেছে লাভের অঙ্কও। অথচ মোদী সরকারের হিসেব বলছে, নোট নাকচের পরেও অক্টোবর থেকে ডিসেম্বরে বৃদ্ধির হার ৭ শতাংশে অটুট।

এক শিল্পপতির কথায়, ‘‘সরকারের দেওয়া ৭ শতাংশ বৃদ্ধির হারেই আমাদের লাভ কমেছে, ব্যবসা মার খেয়েছে। বৃদ্ধির হার কত হলে যে আমাদের লাভের অঙ্ক বাড়বে, সেটাই বুঝতে পারছি না!’’

গত ৮ নভেম্বর নরেন্দ্র মোদী ৫০০-১০০০ টাকার নোট বাতিল করেছিলেন। তার পর অধিকাংশ শিল্পসংস্থাই তাদের অক্টোবর-ডিসেম্বরের রিপোর্ট প্রকাশ করতে গিয়ে জানিয়েছে, নোট নাকচের ফলে ব্যবসা মার খেয়েছে। অম্বানী, টাটা, বিড়লা, মাহিন্দ্রা থেকে শুরু করে ডাবর, গোদরেজ কনজিউমার্স, হিন্দুস্থান ইউনিলিভার, বজাজ— কেউই ব্যতিক্রম নয়। সবথেকে ধাক্কা খেয়েছে ভোগ্যপণ্য শিল্প। সাবান-শ্যাম্পু থেকে বাইক-স্কুটার। যার সবথেকে বড় বাজার গ্রামে। বর্ষার দৌলতে ভাল চাষ হয়েছিল। গ্রামের মানুষের হাতে টাকা থাকায় বিক্রিবাটা ভাল হবে, এমনটাই আশা ছিল। কিন্তু সে গুড়ে বালি পড়েছে।

ডাবর জানিয়েছে, তাদের লাভের অঙ্ক অক্টোবর-ডিসেম্বরে ৭.৩ শতাংশ কমেছে। মুকেশ অম্বানীর রিলায়েন্স রিটেল জানিয়েছে, মানুষ খরচ করতে দোটানায়। আদিত্য বিড়লা গোষ্ঠীর আলট্রাটেক-এর সিমেন্ট বিক্রি কমেছে। টাটা গোষ্ঠীর টাইটান থেকে মাহিন্দ্রা অ্যান্ড মাহিন্দ্রা-র গাড়ির ব্যবসা— সবারই ছবিটা এক। সকলেরই বক্তব্য, নোটের জোগান কমে যাওয়ায় মানুষ ইচ্ছে মতো কেনাকাটা করতে পারেননি।

কোনও শিল্পপতিই অবশ্য নোট নাকচের বিরুদ্ধে সরাসরি মুখ খোলেননি। এক মাত্র ব্যতিক্রম বজাজ অটো-র কর্তা রাজীব বজাজ। তাঁর বক্তব্য, নোট নাকচের পরিকল্পনা রূপায়ণে শুধু যে গাফিলতি ছিল, তা-ই নয়। এর ভাবনাটাই ভুল ছিল। শিল্প সংস্থাগুলি সকলেই বলেছে, নোট নাকচের ফলে দীর্ঘ মেয়াদে লাভ হবে বলেই তারা আশা করছে। কারণ ডিজিটাল লেনদেন বাড়বে। কিন্তু সকলেই নিজেদের আর্থিক রিপোর্টে নোট নাকচের জেরে ব্যবসায় ধাক্কার কথা স্বীকার করে নিয়েছে।

অর্থাৎ, প্রশ্ন উঠেছে সরকারের দাবি নিয়েই। প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী পি চিদম্বরমও বলেছেন, ‘‘পরিসংখ্যান দফতরের বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়েই প্রশ্ন তুলে দিয়েছে মোদী সরকার।’’ মুখ্য পরিসংখ্যানবিদ টি সি এ অনন্ত নিজেই বলেছেন, নোট বাতিলের প্রভাব মাপার মতো যথেষ্ট পরিসংখ্যান নেই। কংগ্রেসের অভিযোগ, উত্তরপ্রদেশ ভোটের মধ্যে বৃদ্ধির হার প্রকাশ করে ফায়দা নিতে চেয়েছে বিজেপি সরকার। যদিও সরকারের যুক্তি, ২৮ ফেব্রুয়ারি বৃদ্ধির হার প্রকাশ হবে, আগে থেকেই ঠিক ছিল। তার সঙ্গে ভোটের সম্পর্ক নেই।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Growth Demonetisation
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE