তিনি ছিলেন রাজৌরির ‘মুখ’। আপদে-বিপদে সব সময়েই তাঁকে পাশে পেয়েছেন জম্মু-কাশ্মীরের রাজৌরি জেলার বাসিন্দারা। আর তাঁর এই দায়িত্ববোধের জন্যই প্রশাসনিক মহলে একজন দক্ষ এবং কর্মঠ অফিসার হিসাবে পরিচিত ছিলেন। শনিবার সকালে পাক গোলায় সেই অফিসারেরই মৃত্যু হল।
রাজকুমার থাপ্পা (৫৫)। তিনি রাজৌরির অতিরিক্ত জেলা উন্নয়ন কমিশনার (অ্যাডিশনাল ডিসট্রিক্ট ডেভেলপমেন্ট কমিশনার) ছিলেন। জম্মু-কাশ্মীর অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিসের ২০০১ ব্যাচের অফিসার। কাজের জন্য তিনি প্রশাসনিক মহলে বেশ সুনাম অর্জন করেছিলেন। রাজৌরির তৃণমূল স্তরে তাঁর যোগাযোগ ছিল যথেষ্ট। জেলার যে কোনও আপৎকালীন পরিস্থিতিতে ত্রাতার ভূমিকায় দেখা যেত রাজকুমারকে।
পহেলগাঁও কাণ্ডের জেরে ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে অস্থিরতা সৃষ্টি হয়েছে। নিয়ন্ত্রণরেখা সংলগ্ন এলাকা লক্ষ্য করে ক্রমাগত গোলাবর্ষণ করে চলেছে পাকিস্তান। তার মধ্যে রয়েছে জম্মু, পুঞ্চ, রাজৌরি, সাম্বা, আখনুর। পাল্টা জবাব দিচ্ছে ভারতীয় সেনাও। বাসিন্দারা কতটা নিরাপদে রয়েছেন, কোন কোন জায়গায় হামলা বেশি হচ্ছে, তা খতিয়ে দেখতে শুক্রবার উপমুখ্যমন্ত্রী সুরেন্দ্র কুমার চৌধরির সঙ্গে বেরিয়েছিলেন কমিশনার রাজকুমার। তার পর মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লার সঙ্গে ভিডিয়ো কনফারেন্সিংয়ে বৈঠকও করেন।
শনিবার নিজের বাসভবনেই ছিলেন রাজকুমার। প্রশাসনিক সূত্রের খবর, সেই সময় একটি পাক গোলা তাঁর বাড়িতে এসে আঘাত করে। আর তাতেই মৃত্যু হয় জম্মু-কাশ্মীরের শীর্ষ এই আধিকারিকের। তাঁর মৃত্যুতে শোকপ্রকাশ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী ওমর। তিনি বলেন, ‘‘আমরা একজন দক্ষ এবং দায়িত্ববান অফিসারকে হারালাম। শুক্রবারই রাজকুমার থাপ্পার সঙ্গে অনলাইনে বৈঠক করেছিলাম। কিন্তু কয়েক ঘণ্টা পরই শুনলাম আমাদের এই দক্ষ অফিসারের মৃত্যু হয়েছে।’’
প্রসঙ্গত, গত বছরের ডিসেম্বর এবং এ বছরের জানুয়ারির মধ্যে জেলার বাদহালে অজানা রোগে মৃত্যু হচ্ছিল বাসিন্দাদের। ১৭ জনের রহস্যজনক ভাবে মৃত্যু হয়েছিল। সেই পরিস্থিতি সামলাতে গুরুত্বপূর্ণ এবং অগ্রণী ভূমিকা নিয়েছিলেন রাজকুমার। যে কোনও পরিস্থিতিতে সর্বাগ্রে ছুটে যেতেন এবং পরিস্থিতি সামাল দিতেন তিনি। আর সে কারণে স্থানীয়দের কাছেও তিনি ‘মসিহা’ হয়ে উঠেছিলেন।