Advertisement
০৬ ডিসেম্বর ২০২৩

গুরমিতকে নিয়ে মুখ খুলবেন অনেক নির্যাতিতা, দাবি ডেরা সদস্যদেরই

স্বঘোষিত ধর্মগুরুর বিশ বছরের সাজা ঘোষণা হতেই তাঁর গোপন গুফার রহস্য নিয়ে মুখ খুলছেন অনেকে। বলছেন, ভয়ে এত দিন চুপ ছিলেন তাঁরা। এক সময়ে ডেরা সচ্চা সৌদায় গুরমিতের গাড়িচালক ছিলেন খাট্টা সিংহ।

গুরমিত রাম রহিম। —ফাইল চিত্র।

গুরমিত রাম রহিম। —ফাইল চিত্র।

সংবাদ সংস্থা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ৩০ অগস্ট ২০১৭ ০৪:৩৮
Share: Save:

বিলাসবহুল ‘গুফা’ থেকে অন্ধকার জেল। কোটি কোটি টাকার সম্পত্তি থেকে দূরে, দিনে চল্লিশ টাকা মজুরির সশ্রম কারাদণ্ডে দিন কাটা শুরু হল গুরমিত রাম রহিম সিংহের। রাতগুলো কাটছে জেগে। এখনও পর্যন্ত।

স্বঘোষিত ধর্মগুরুর বিশ বছরের সাজা ঘোষণা হতেই তাঁর গোপন গুফার রহস্য নিয়ে মুখ খুলছেন অনেকে। বলছেন, ভয়ে এত দিন চুপ ছিলেন তাঁরা। এক সময়ে ডেরা সচ্চা সৌদায় গুরমিতের গাড়িচালক ছিলেন খাট্টা সিংহ। ‘বাবা’-র ভয়ে দশ বছর পালিয়ে বেড়ানো খাট্টা আজ বলেছেন, ‘‘আরও অনেক নির্যাতিতা মুখ খুলবেন।’’ প্রাক্তন গাড়িচালকের দাবি, ডেরার সদর দফতরে তাঁর ভাইঝিও নির্যাতিতা হয়েছিলেন। তিনিও সামনে আসবেন। যে মহিলার অভিযোগে গুরমিতের সাজা হয়েছে, তিনিও আজ বলেছেন— ‘‘সুবিচার হয়েছে।’’

দশ বছর ডেরায় ‘সেবাদার’ ছিলেন গুরদাস সিংহ। তাঁর বিস্ফোরক অভিযোগ, ‘‘হানিপ্রীত বলে যে মহিলা গুরমিতের দত্তক কন্যা বলে পরিচিত, তাঁর সঙ্গে আসলে অবৈধ সম্পর্ক ছিল গুরমিতের।’’ অবশ্য হানিপ্রীতের প্রাক্তন স্বামী বিশ্বাস গুপ্ত ২০১১ সালেই সাংবাদিক বৈঠকে অভিযোগ করেছিলেন, ‘গুফা’য় হানিপ্রীতের সঙ্গে আপত্তিকর অবস্থায় গুরমিতকে দেখেছিলেন তিনি। এ-ও বলেছিলেন, বাইরে যাওয়া হলে তাঁকে থাকতে হতো হোটেলের আলাদা ঘরে। হানিপ্রীত থাকতেন গুরমিতের সঙ্গে।

বিশ্বাসের দাবি, এই সব ঘটনার পরেই তিনি ডেরা ছেড়ে পঞ্চকুলায় চলে আসেন। অথচ গুরমিতের উল্টো চাপে তাঁকে ও তাঁর বাবা মহেন্দ্র পাল গুপ্তকে ডেরায় গিয়ে সকলের সামনে ক্ষমা চাইতে হয়। পরে বিশ্বাসের সঙ্গে বিবাহ-বিচ্ছেদ হয় হানিপ্রীতের। হানিপ্রীত হয়ে ওঠেন গুরমিতের ছায়াসঙ্গী। এমনকী জেলেও তাঁকে সঙ্গে রাখতে চেয়েছিলেন গুরমিত।

প্রশ্ন হল, এত জন মহিলা যদি নির্যাতিতা হন, তা হলে এত দিন তাঁরা সামনে এলেন না কেন? তাঁদের বাবা-মায়েরাও তো ডেরায় ছিলেন, তাঁরাও কেন সরব হলেন না?

গুরদাসের বক্তব্য— ডেরার সাধ্বীদের মধ্যে দু’টি ভাগ আছে। একদল ব্রহ্মচারী, আর একদল সদব্রহ্মচারী। ব্রহ্মচারীরা সকলের সঙ্গে কথা বলতে পারেন। কিন্তু সদব্রহ্মচারীরা নিজের বাবা-মায়ের সঙ্গেও একান্তে কথা বলতে পারতেন না। ফোন ব্যবহারও ছিল বারণ। এঁদের সঙ্গেই কুকর্ম করতেন ধর্মগুরু। গুরদাসের দাবি, সাধ্বীদের গুফায় নিয়ে যাওয়ার কোড ছিল ‘মাফি দেনা’। কেউ আপত্তি তুললে তাঁকে শায়েস্তা করার জন্য ছিল বিশেষ ‘মন সুধার বাহিনী’। অর্থাৎ মন বদল করানোর বাহিনী। তারা প্রতিবাদিনীকে মারধর করত। ভয় দেখাত। গুরদাসের দাবি, গত কাল থেকেই অনেক মহিলা তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করছেন। তাঁরাও গুরমিতের মুখোশ খুলতে চান।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
Follow us on: Save:
Advertisement

Share this article

CLOSE