রবিবার নরেন্দ্র মোদীর রেডিও বার্তা ‘মন কি বাত’-এর ধাঁচেই এ বার ‘টক টু একে’ শুরু করলেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীবাল। আজ প্রথম অনুষ্ঠানেই নিশানায় রাখলেন সেই মোদীকেই। আর সঙ্গে তাঁর সেনাপতি অমিত শাহকে।
দিল্লি সরকারের যাবতীয় সাফল্য নিজের আর যাবতীয় ব্যর্থতা নরেন্দ্র মোদীর কাঁধে ঠেলে দিয়ে বললেন, কেন্দ্র ও তাঁর সরকারের মধ্যে সম্পর্ক এখন অনেকটা ভারত-পাকিস্তানের মতো। নরেন্দ্র মোদী তাঁর সরকারকে শয্যাশায়ী করে তোলার চেষ্টা করছেন। আর অমিত শাহের বিরুদ্ধে কেজরীবালের বিস্ফোরক অভিযোগ, সিবিআই আসলে চালাচ্ছেন বিজেপি সভাপতি। তবে মানহানি মামলা থেকে বাঁচতে সুকৌশলে বলেছেন, ‘‘শুনছি অমিত শাহ না কি সিবিআইয়ের খুঁটিনাটি পরিচালনা করছেন, যে সিবিআই আগে তাঁর পিছনে পড়ত।’’ এর মধ্যেই ঘোষণা করলেন, শীতে আবার জোড়-বিজোড় প্রথা চালু করতে পারেন তিনি।
কেজরীবাল মানেই বিতর্ক। ফলে তাঁর এই অভিনব উদ্যোগের পরতে পরতেও যে বিতর্ক থাকবে, তা একেবারেই অপ্রত্যাশিত নয়। ফলে নিজের তৈরি ওয়েবসাইটের মাধ্যমে জনগণের সঙ্গে টানা দু’ঘন্টা সরাসরি কথা বলার মধ্যেও নিজের ছাপ রেখে গেলেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী। প্রথম ৫০ মিনিট শুধু বলে গেলেন তাঁর সততার কথা, কী করে কম খরচে বিভিন্ন প্রকল্প করছেন, শিক্ষা ও স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে কত জোর দিয়েছেন, তার সুদীর্ঘ ফিরিস্তি। তার পরেই তাঁর সরকারে ‘না হওয়া’ যাবতীয় কাজের দায় চাপিয়ে দিলেন মোদী সরকার আর বিজেপির ঘাড়ে।
আরও পড়ুন: কাল থেকে সংসদ, যে যার হিসেবে ছক সাজাচ্ছেন মোদী থেকে সনিয়া
তাঁর নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি মতো দিল্লিতে ওয়াই-ফাই হয়নি কেন? তার জবাবে বললেন, সিবিআইয়ের হাতে ‘সৎ’ সচিবের গ্রেফতারির কথা। কারণ, তিনিই দেখছিলেন ওয়াই-ফাইয়ের কাজ। আইন-শৃঙ্খলাও তাঁর হাতে নেই, দিল্লিতে জল জমার দায়ও বিজেপি শাসিত পুরসভার। তিনি কাজ করতে পারছেন না, কারণ মোদী সরকার তাঁর অফিসারদের বদলি করে দিচ্ছেন অন্যত্র। সব ‘জনমুখী’ বিল আটকে রাখছে কেন্দ্র। আর অকারণে ভুয়ো মামলায় গ্রেফতার করা হচ্ছে তাঁর দলের বিধায়কদের। সে কারণে জনতার কাছে তাঁর আবেদন, সামনের বছর পুরসভার নির্বাচনেও আম আদমি পার্টিকে জিতিয়ে আনতে। আর একটি জনমত সমীক্ষা করবেন দিল্লিকে পূর্ণ রাজ্যের মর্যাদা দেওয়ার লক্ষ্যে। প্রতি মাসেই এমন জনতার দরবার করতে চান তিনি।
বিজ্ঞাপনের জন্য কাঁড়ি কাঁড়ি অর্থ খরচের সাফাইও দেন তিনি। বলেন, আরএসএস প্রচার করছে বিজ্ঞাপনের জন্য ৫৩৬ কোটি টাকা খরচ হয়েছে। কিন্তু গত বছর বিজ্ঞাপনে খরচ হয়েছে ৭৫ কোটি টাকা। তাঁর যুক্তি, দিল্লি সব সময়ই গোটা দেশের নজরে থাকে। গোটা দেশের মানুষ বসবাস করেন দিল্লিতে। তাই দিল্লি সরকারের বিজ্ঞাপন দেওয়া হয় বিভিন্ন রাজ্যেও। দিল্লি বিজেপির সভাপতি সতীশ উপাধ্যায় কেজরীবালের এই প্রয়াসকে ‘নাটক’ অ্যাখ্যা দিয়ে বলেন, ‘‘দিল্লির আসল সমস্যা নিয়ে একটি প্রশ্নেরও জবাব দেননি তিনি। গোটা দেশ থেকে সাজানো প্রশ্ন ও টেলিফোন নিয়ে আসর বসিয়েছিলেন। সাহস থাকলে তিনি খোলা স্টেডিয়ামে দিল্লির মানুষের মুখোমুখি হোন।’’ আম আদমি পার্টির পাল্টা কটাক্ষ, আগে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী রেডিও ও নিজের পছন্দের সংবাদমাধ্যম ছেড়ে মানুষের মুখোমুখি হোন। দু’বছরে কেন একটিও সাংবাদিক সম্মেলন করেননি প্রধানমন্ত্রী। প্রশ্ন আপের।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy