
সুপ্রিম কোর্টে ওয়াকফ সংশোধনী আইন নিয়ে চলছে মামলা। ছবি: পিটিআই।
পরবর্তী শুনানি পর্যন্ত ঘোষিত ওয়াকফ সম্পত্তিতে বদল ঘটানো যাবে না। কেন্দ্রকে জানিয়ে দিল সুপ্রিম কোর্ট। পাশাপাশি শীর্ষ আদালতের নির্দেশ, ওয়াকফ বোর্ড বা পর্ষদেও নিয়োগ করা যাবে না পরবর্তী শুনানি পর্যন্ত। কেন্দ্রও জানিয়েছে, সুপ্রিম কোর্ট যে অন্তর্বর্তী নির্দেশ দিয়েছে, তা তারা মানবে। মামলার পরবর্তী শুনানি ৫ মে।
বৃহস্পতিবার শুনানির শুরুতে প্রথমে সওয়াল করেছিলেন কেন্দ্রের সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা। তিনি জানান, কেন্দ্রের কাছে প্রচুর তথ্য জমা পড়েছে। সেখানে দেখা যাচ্ছে, বহু জমি ওয়াকফ জমি হিসাবে নথিভুক্ত রয়েছে। নিজেদের সম্পত্তি নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে বহু মানুষের মনে। এর পরেই সুপ্রিম কোর্টের কাছে রিপোর্ট জমা দেওয়ার জন্য সময় চায় কেন্দ্র। তার ভিত্তিতে কেন্দ্রকে এক সপ্তাহ সময় দিয়েছে শীর্ষ আদালত। নতুন ওয়াকফ আইনের সাংবিধানিক বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে মামলা হয়েছিল। তার প্রেক্ষিতে কেন্দ্রকে জবাব দিতে বলেছে সুপ্রিম কোর্ট। এর পরেই বিচারপতি বলেন, ‘‘আমরা আগেই বলেছি, এই আইনে কিছু ভাল দিক অবশ্যই রয়েছে। এই পুরোপুরি স্থগিত করে দেওয়ার কথা কখনওই বলা হয়নি। কিন্তু আমরা চাই না, এখন যা পরিস্থিতি, তা বদলে যাক। বিষয়টি এখনও আদালতে বিচারাধীন। পরিস্থিতি যাতে না বদলায়, সেটা আমাদের নিশ্চিত করতে হবে।’’
মামলাকারীদেরও উদ্দেশে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ, পাঁচটি পিটিশন বাছাই করা হোক। ওই পাঁচটি পিটিশনকে প্রধান পিটিশন হিসাবে গণ্য করে শুনানি হবে।
ওয়াকফ মামলায় পরবর্তী শুনানি আগামী ৫ মে। ওই দিনে প্রয়োজনে কোনও নির্দেশ দেওয়া হলেও হতে পারে বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন প্রধান বিচারপতি।
সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ, ১৯৯৫ সালের আইনে নথিভুক্ত ওয়াকফ সম্পত্তিতে কোনও বদল ঘটানো যাবে না। পাশাপাশি, নিয়োগ করা যাবে না ওয়াকফ বোর্ড বা পর্ষদেও।
নতুন ওয়াকফ আইনের সাংবিধানিক বৈধতাকে চ্যালেঞ্জ করে মামলা হয়েছিল সুপ্রিম কোর্টে। এ নিয়ে কেন্দ্রকে সাত দিনের মধ্যে নিজেদের বক্তব্য জানাতে বলল শীর্ষ আদালত।
পরবর্তী শুনানির পর্যন্ত ওয়াকফ বোর্ড এবং পর্ষদে নিয়োগ করা যাবে না। নির্দেশ দিল সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতির বেঞ্চ।
নয়া আইনের সমর্থনে সওয়াল করলেন কেন্দ্রের সলিসিটর জেনারেল। জবাবে প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘‘কিছু ভাল দিক অবশ্যই রয়েছে। তবে পরিস্থিতি বদলে যাক, চাই না।’’
সুপ্রিম কোর্টে ওয়াকফ মামলার শুনানি শুরু হল। শুরুতেই সওয়াল করলেন কেন্দ্রের সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা।
প্রধান বিচারপতি বলেছিলেন, ‘‘আমাদের সামনে তিনটি পথ। এক, আমরা পিটিশন শুনব। দুই, হাই কোর্টে পাঠিয়ে দেব। তিন, হাই কোর্টে পড়ে থাকা পিটিশনও গ্রহণ করে আমরাই সিদ্ধান্ত নেব।’’ সুপ্রিম কোর্ট তিনটি অন্তর্বর্তী নির্দেশ নিয়ে আলোচনাও করে। সেগুলি হল, এক, কোর্ট যে সম্পত্তিকে ওয়াকফ বলে ঘোষণা করবে, তাকে ‘ওয়াকফ নয়’ বলে ধরা যাবে না। দুই, যে ওয়াকফ সম্পত্তি নিয়ে বিবাদ রয়েছে, তা নিয়ে জেলাশাসক প্রয়োজনীয় প্রক্রিয়া চালাতে পারবেন। কিন্তু সেই বিধান কার্যকর করা যাবে না। তিন, ওয়াকফ বোর্ড এবং ওয়াকফ কাউন্সিলের সদস্যদের মুসলিম হতেই হবে। শুধু যাঁরা পদাধিকার বলে ওয়াকফে যোগ দেবেন, তাঁরা ভিন্ধর্মের হতে পারেন। শেষ পর্যন্ত এই অন্তর্বর্তী নির্দেশ তারা দেয়নি।
নতুন আইনে ওয়াকফ বোর্ডের সদস্য হতে পারবেন অমুসলিমেরাও। তা নিয়ে সুপ্রিম কোর্ট প্রশ্ন তুলেছিল, হিন্দুদের সম্পত্তি সংক্রান্ত বোর্ডে কি কোনও মুসলিমকে সদস্য হতে দেবে সরকার?
নতুন আইনকে কেন্দ্র করে এ রাজ্যের মুর্শিদাবাদে অশান্তির ঘটনা ঘটেছে। নির্দিষ্ট করে সে প্রসঙ্গ না উঠলেও অশান্তির ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছিলেন প্রধান বিচারপতি। বলেছিলেন, ‘‘যে ভাবে হিংসা হচ্ছে, তা খুবই উদ্বেগজনক। যখন সুপ্রিম কোর্টের সামনে বিষয়টি বিবেচনাধীন রয়েছে, তখন হিংসা হওয়া উচিত নয়।’’
বুধবার সব মামলাকে একসঙ্গে জুড়ে শুনানি হয়েছিল প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খন্নার নেতৃত্বাধীন তিন বিচারপতির বেঞ্চে।
মামলাকারীদের মধ্যে রয়েছেন বিহারের আরজেডি সাংসদ মনোজ ঝা, বাংলার তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্র, সিপিএম রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম, আইএসএফ বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকি, ভরতপুরের তৃণমূল বিধায়ক হুমায়ুন কবীর।
মোদী সরকারের ওয়াকফ সংশোধনী আইনের সাংবিধানিক বৈধতাকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টে অন্তত ৭২টি মামলা হয়েছিল। বিভিন্ন মুসলিম সংগঠনের পাশাপাশি বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও বিরোধী দলের সাংসদ, নেতারা সুপ্রিম কোর্টে মামলা করেছিলেন। বেশ কিছু বিজেপিশাসিত রাজ্য আবার এর পক্ষে সুপ্রিম কোর্টে হাজির হয়েছিল।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy