গরমের সঙ্গে টেক্কা দিচ্ছে লোডশেডিং। তাতে নাজেহাল বরাকের জনজীবন। কখন যে বিদ্যুৎ চলে যাবে, তা নিয়েই আশঙ্কায় থাকছেন সাধারণ মানুষ। পরিস্থিতি কবে ঠিক হবে তার সদুত্তর নেই বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থার কর্তাদের কাছেও।
এ সবের জেরে বরাকে বিদ্যুৎ বণ্টন নিয়ে সংশ্লিষ্ট সংস্থার বিরুদ্ধে বৈমাত্রেয়সুলভ আচরণের অভিযোগ উঠছে। কাঠগড়ায় তোলা হয়েছে তরুণ গগৈ সরকারকেও। চাহিদার অর্ধেক পরিমাণ বিদ্যুৎও বরাককে দেওয়া হয় না বলে ক্ষোভ জানাচ্ছেন উপত্যকার বাসিন্দারা।
চৈত্র মাস থেকেই গরমের দাপট বাড়তে শুরু করে। বৈশাখ মাসে পারদ উঠেছে আরও উপরে। তার সঙ্গে প্রচণ্ড ঘাম। তার উপর লোডশেডিংয়ের দাপটে প্রচণ্ড সমস্যায় পড়েছেন এলাকার মানুষ। করিমগঞ্জের হালও একই। কোনও রাতে ঝড়বৃষ্টি হলেই উধাও হয় বিদ্যুৎ। রাতে তা আর ফেরে না। এ রকমই কাণ্ড ঘটেছিল ৮ এপ্রিল। ঝড়বৃষ্টির জেরে লোডশেডিং হয়ে যায় সে দিন। বিদ্যুৎ ফেরে পরের দিন রাত ১১টায়। বাদ যায়নি ১লা বৈশাখও। দফায় দফায় বিদ্যুৎ গিয়েছে। বরাক বঙ্গভাষী অধ্যুষিত। চৈত্র সংক্রান্তি ও বাংলা নববর্ষে উৎসবে মাতেন বরাকবাসী। করিমগঞ্জের মানুষও ভেবেছিলেন হয়তো দু’দিন লোডশেডিং-মুক্ত থাকবে উপত্যকা। কিন্তু তাঁদের আশা পূর্ণ হয়নি।
বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, ১লা বৈশাখ সকালে করিমগঞ্জ জেলায় ৮ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ দেওয়া হয়েছে। যেখানে করিমগঞ্জ শহরের চাহিদাই ৮ মেগাওয়াট। নিলামবাজারে ৩, পাথারকান্দিতে ৬ ও দুর্ল্লভছড়াতে ৬ মেগাওয়াট। অর্থাৎ চাহিদার তুলনায় তিন ভাগের এক ভাগ বিদ্যুৎ সে দিন সরবরাহ করা হয়।
একই ভাবে সে দিন বিকেল সাড়ে ৬টায় করিমগঞ্জ শহরে বিদ্যুতের চাহিদা ছিল ১৪ মেগাওয়াট, নিলামবাজারের ৫, পাথারকান্দিতে ১১ এবং দুর্ল্লভছড়াতে ৯ মেগাওয়াট। সেই জায়গায় বিদ্যুৎ সরবরাহ হয়েছে মাত্র ১২.৫। ফলে বছরের প্রথম তারিখেই সারা রাত লোডশেডিং ছিল। বৃহস্পতিবার করিমগঞ্জ জেলায় বিদ্যুৎ সরবরাহ হয়েছে মাত্র ৮ মেগাওয়াট। বিকেল ৬টায় ১৪ মেঘাওয়াট। চাহিদা কিন্তু একই ছিল।
এলাকাবাসীর বক্তব্য, নতুন বছরেও কংগ্রেস সরকার করিগমঞ্জ তথা বরাককে প্রয়োজনীয় বিদ্যুতের জোগান দিতে পারেনি। বরাকের ১৪টি বিধানসভা আসনের মধ্যে ১২টি রয়েছে শাসক কংগ্রেসের দখলে। কিন্তু বরাকের বিদ্যুৎ সমস্যা নিয়ে কোন বিধায়কই তেমন ভাবে পদক্ষেপ করেননি। অথচ করিমগঞ্জ জেলাসদর থেকে প্রতি মাসে ১ কোটি টাকার বিদ্যুতের বিল মেটানো হয়। এ নিয়ে বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থার কর্তৃপক্ষের বক্তব্য, অসমের নামরূপ, লাকুয়া তাপবিদ্যুৎ প্রকল্প, কার্বি-লংপি জলবিদ্যুৎ কেন্দ্র চালু থাকলেও বঙ্গাইগাঁও ও চন্দ্রপুর তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র বন্ধ রয়েছে। তা ছাড়া শিলচরের বাঁশকান্দি ও করিমগঞ্জের পাথারকান্দির আদমটিলা গ্যাসভিত্তিক বিদ্যুৎ প্রকল্পেও উৎপাদন হচ্ছে না। এ সবের জেরেই বিদ্যুৎ সরবরাহে সমস্যা হচ্ছে। কবে এই সমস্যা থেকে মুক্তি মিলবে, সেই জবাব অবশ্য কারও কাছেই মেলেনি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy