Advertisement
E-Paper

হেমন্ত করকরে নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য, সাধ্বী প্রজ্ঞার বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু কমিশনের

জনতার উদ্দেশে সাধ্বী বলেন, ‘‘আপনারা বিশ্বাস করবেন না। কিন্তু আমি  বলেছিলাম তোর সর্বনাশ হবে (‘তেরা সর্বনাশ হোগা’)। তার সওয়া এক মাসের মধ্যেই জঙ্গিরা তাঁকে হত্যা করে।’’

হেমন্ত করকরেকে নিয়ে সাধ্বী প্রজ্ঞার বিতর্কিত মন্তব্য ঘিরে নানা মহলে সামলোচনার ঝড়।

হেমন্ত করকরেকে নিয়ে সাধ্বী প্রজ্ঞার বিতর্কিত মন্তব্য ঘিরে নানা মহলে সামলোচনার ঝড়।

সংবাদ সংস্থা

শেষ আপডেট: ১৯ এপ্রিল ২০১৯ ১৪:১৮
Share
Save

২৬/১১-র মুম্বই জঙ্গি হামলায় নিহত হয়েছিলেন মুম্বই পুলিশের তৎকালীন অ্যান্টি টেররিস্ট স্কোয়াডের (এটিএস) প্রধান হেমন্ত করকরে। কিন্তু অন্য কথা বলছেন সদ্য বিজেপিতে যোগ দেওয়া সাধ্বী প্রজ্ঞা তথা প্রজ্ঞা সিংহ ঠাকুর। হেমন্ত করকরের মৃত্যু হয়েছিল তাঁর ‘অভিশাপে’— বলছেন প্রজ্ঞা। বৃহস্পতিবার ভোপালে একটি অনুষ্ঠানে তিনি বলেছিলেন, ‘‘আমি বলেছিলাম, তুই ধ্বংস হয়ে যাবি। তার পর দু’মাসও কাটেনি...।’’

অভিযোগ পেয়ে সাধ্বীর বিরুদ্ধে এই বিতর্কিত মন্তব্যের তদন্ত শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছেন মধ্যপ্রদেশের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক। অন্য দিকে ঘটনার তীব্র নিন্দা করেছে আইপিএস অফিসারদের সংগঠন। তবে, গোটা বিষয়ে সাধ্বীর থেকে দূরত্বই রাখল বিজেপি। দলের বক্তব্য, বিজেপি করকরেকে সব সময় শহিদ হিসাবেই মর্যাদা দিয়ে এসেছে। ব্যক্তিগত কারণে এই মন্তব্য করে থাকতে পারেন সাধ্বী বলেই বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছে বিজেপি।

মালেগাঁও বিস্ফোরণে অন্যতম অভিযুক্ত সাধ্বী প্রজ্ঞার এই মন্তব্য ঘিরে অন্যান্য মহলেও শুরু হয়েছে তুমুল বিতর্ক। সন্ত্রাসীদের সঙ্গে লড়তে গিয়ে শহিদ এক সাহসী পুলিশ অফিসারের সম্পর্কে এই রকম মন্তব্য করা কতটা শিষ্টাচারের পরিচায়ক, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন অনেকেই। আবার টুইটারে অনেকেরই মত, এই কথা বলে কার্যত জঙ্গিদেরই সমর্থন করেছেন লোকসভা ভোটে ভোপাল কেন্দ্রে বিজেপির সম্ভাব্য প্রার্থী।

হেমন্ত করকরের সঙ্গে সাধ্বী প্রজ্ঞার ‘সম্পর্ক’ পুলিশ মহলে অজানা নয়। ২০০৮ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর মালেগাঁও বিস্ফোরণের তদন্ত করেছিলেন হেমন্ত করকরে। সাধ্বী প্রজ্ঞা, লেফটেন্যান্ট কর্নেল শ্রীকান্ত পুরোহিত-সহ অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে বিস্ফোরণে ষড়যন্ত্রের চার্জশিট দিয়েছিলেন মুম্বই পুলিশের তৎকালীন এটিএস প্রধান করকরে। তার ভিত্তিতেই সাধ্বী-সহ অভিযুক্তরা গ্রেফতার হন।

আরও পডু়ন: এখনও উত্তপ্ত চোপড়া, তৃণমুল-বিজেপি সংঘর্ষের মাঝে গুলিবিদ্ধ স্কুলপড়ুয়া

আরও পডু়ন: শেষ টাওয়ার লোকেশন শান্তিপুর... কৃষ্ণনগরে ইভিএমের দায়িত্বপ্রাপ্ত অফিসার নিখোঁজ ঘিরে রহস্য

এ দিনের অনুষ্ঠানে সেই প্রসঙ্গই টেনে আনেন সাধ্বী। তাঁর কথায়, ‘‘তদন্তকারী দল হেমন্ত করকরেকে ডেকে পাঠিয়ে বলে, প্রমাণ না পেলে ওঁকে (সাধ্বী) ছেড়ে দিন। কিন্তু করকরে বলেছিলেন, ‘ওঁর বিরুদ্ধে প্রমাণ জোগাড় করতে আমি সব কিছু করব। কিন্তু ওঁকে ছাড়ব না।’ এটা ছিল ওঁর হিংসা। উনি ছিলেন দেশদ্রোহী, ধর্মবিরোধী।’’ এর পর জনতার উদ্দেশে সাধ্বী বলেন, ‘‘আপনারা বিশ্বাস করবেন না। কিন্তু আমি বলেছিলাম তোর সর্বনাশ হবে (‘তেরা সর্বনাশ হোগা’)। তার সওয়া এক মাসের মধ্যেই জঙ্গিরা তাঁকে হত্যা করে।’’

সাধ্বী যখন এই কথা বলছেন, তাঁর পিছনে থাকা সাধু-সন্তরা কার্যত উচ্ছ্বাসে ফেটে পড়েছেন। হাততালি দিয়ে সমর্থন করেছেন তাঁর বক্তব্য। কিন্তু সোশ্যাল মিডিয়ায় এই ভিডিয়ো ছড়িয়ে পড়তেই শুরু হয় উল্টো প্রতিক্রিয়া। তীব্র সমালোচনা শুরু করেন নেটিজেনরা। কেউ বলছেন, ‘পাকিস্তানই আপনার ভাবনা বুঝতে পারে।’ টুইটারে #রিমুভসাধ্বীপ্রজ্ঞা নামে আন্দোলন শুরুর ডাক দেওয়া হয়েছে এবং তাতে অনেকে সমর্থনও করেছেন।

শুধু সোশ্যাল মিডিয়াতেই নয়, সক্রিয় হয়েছে নির্বাচন কমিশনও। মধ্যপ্রদেশের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক জানিয়েছেন, ভোপালের বিজেপি প্রার্থী প্রজ্ঞা সিংহ ঠাকুরের বিরুদ্ধে হেমন্ত করকরে নিয়ে মন্তব্যের অভিযোগ জমা পড়েছে। বিষয়টি খতিয়ে দেখার খতিয়ে দেখার প্রক্রিয়া চলছে। অন্য দিকে ভোপালে তাঁর বিরুদ্ধে কংগ্রেসের প্রার্থী হচ্ছেন দিগ্বিজয় সিংহ এ নিয়ে মন্তব্য করতে চাননি।

মালেগাঁও বিস্ফোরণের এক নম্বর অভিযুক্ত সাধ্বীকে ২০১৫ সালে ক্লিন চিট দিয়েছিল জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা এনআইএ। তদন্তকারীদের যুক্তি ছিল, সাধ্বীর বিরুদ্ধে কোনও প্রমাণ পাওয়া যায়নি। কিন্তু আদালত তাতে সায় দেয়নি। আদালত বলেছিল, এটা মেনে নেওয়া কঠিন। কারণ বিস্ফোরণে সাধ্বীর মোটরসাইকেল ব্যবহার হয়েছিল। তবে তুলনায় কঠোর মহারাষ্ট্র কন্ট্রোল অব অর্গানাইজড ক্রাইম অ্যাক্ট (মোকা) আইনে দোষী সাব্যস্ত না করে আনলফুল অ্যাকটিভিটিজ প্রিভেনশন অ্যাকটিভিটজ (ইউএপিএ) ধারায় শাস্তি ঘোষণা করে আদালত। ২০১৭ সালে জামিনে মুক্তি পান সাধ্বী।

এর পর লোকসভা ভোটের মুখে কিছু দিন আগেই বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন তিনি। ভোপাল কেন্দ্রে তাঁকেই প্রার্থী ঘোষণা করেছে দল।

Sadhvi Pragya Malegaon Blast Hemant Karkare Bhopal

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

{-- Slick slider script --}}