Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪
Lok Sabha Election 2019

মোদীকে ‘বিভাজক গুরু’ আখ্যা দিল টাইম ম্যাগাজিন

বিরোধীরা একজোট হলেও দ্বিতীয় বার নরেন্দ্র মোদীর ক্ষমতায় আসা আটকানো যাবে না বলে ইতিমধ্যেই জানিয়ে দিয়েছেন বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহ।

নরেন্দ্র মোদীকে নিয়ে এই প্রচ্ছদই ছেপেছে ‘টাইম’ পত্রিকা।

নরেন্দ্র মোদীকে নিয়ে এই প্রচ্ছদই ছেপেছে ‘টাইম’ পত্রিকা।

সংবাদ সংস্থা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১০ মে ২০১৯ ১৮:৩২
Share: Save:

মেরুকরণের রাজনীতি নিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বিরুদ্ধে আগেই সরব হয়েছিলেন বিরোধীরা। নির্বাচনের মধ্যে এ বার আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমেও একই অভিযোগ উঠল। গত পাঁচ বছর ধরে ভারতে বেড়ে চলা অসহিষ্ণুতা নিয়ে নরেন্দ্র মোদী ও তাঁর সরকারের সমালোচনা করতে গিয়ে মোদীকে সরাসরি ‘বিভাজক গুরু’ (ডিভাইডার ইন চিফ) বলে উল্লেখ করেছে তারা।

ভারতের লোকসভা নির্বাচন নিয়ে ২০ মে-র সংখ্যায় বিশেষ প্রতিবেদন ছেপেছে আন্তর্জাতিক পত্রিকা টাইম। তার প্রচ্ছদে নরেন্দ্র মোদীকে ‘বিভাজক গুরু’ বলে উল্লেখ করা হয়েছে। ফের একবার মোদী সরকার ক্ষমতায় এলে বিশ্বের বৃহত্তম গণতন্ত্রের পক্ষে তা সহ্য করা সম্ভব হবে কি না, তা নিয়েও সন্দেহ প্রকাশ করা হয়েছে।

তুরস্ক, ব্রাজিল, ব্রিটেন এবং আমেরিকার মতো গণতান্ত্রিক দেশগুলির মতো যত দিন যাচ্ছে ভারতেও জনমোহিনী রাজনীতি ক্রমশ জনপ্রিয় হয়ে উঠছে বলে ওই প্রতিবেদনে দাবি করেছেন সাংবাদিক আতিশ তাসির। তিনি লেখেন, ‘‘বিশ্বের গণতান্ত্রিক দেশগুলির মধ্যে ভারতই প্রথম জনমোহিনী রাজনীতির ফাঁদে পা দেয়।’’ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর আমলে ভারতের বুনিয়াদি শর্ত, দেশ গঠনের কারিগর, সংখ্যালঘু সম্প্রদায়, দেশের প্রাতিষ্ঠানিক মর্যাদা, বিশ্ববিদ্যালয়, কর্পোরেট দুনিয়া এবং সংবাদমাধ্যম— সব ক্ষেত্রেই অবিশ্বাসের বাতাবরণ তৈরি হয়েছে বলেও দাবি করা হয় ওই প্রতিবেদনে।

আরও পড়ুন: এখানে এক জনের গায়েও হাত দিতে দেব না, আশোকনগরে এনআরসি নিয়ে চ্যালেঞ্জ মমতার​

নরেন্দ্র মোদীর আমলে সংখ্যালঘুদের উপর অত্যাচার বেড়েছে বলেও দাবি করেছেন ওই সাংবাদিক। তাঁর কথায়, ‘‘মোদীর জমানায় সব শ্রেণির সংখ্যালঘু মানুষ, সে উদারপন্থী হোক বা নিম্নবর্গের মুসলিম অথবা খ্রিস্টান, সকলকেই হিংসার শিকার হতে হয়েছে।’’

‘অচ্ছে দিন’-এর প্রতিশ্রুতি দিয়ে ক্ষমতায় এলেও, গত পাঁচ বছরে নরেন্দ্র মোদী কিছুই করে দেখাতে পারেননি বলে ইতিমধ্যেই নির্বাচনী প্রচারে তোপ দেগেছেন বিরোধীরা। তা নিয়েও মোদী সরকারের সমালোচনা করেছে টাইম। তাদের দাবি, ‘‘যে অলৌকিক অর্থনৈতিক সংস্কারের প্রতিশ্রুতি দিয়ে মোদী ক্ষমতায় এসেছিলেন, তা পূরণ করতে তিনি ব্যর্থ হয়েছেন। একই সঙ্গে ভারতে বিষাক্ত ধর্মীয় জাতীয়তাবাদের বাতাবরণ তৈরিতেও সাহায্য করেছেন তিনি।’’

বিরোধীরা একজোট হলেও দ্বিতীয় বার নরেন্দ্র মোদীর ক্ষমতায় আসা আটকানো যাবে না বলে ইতিমধ্যেই জানিয়ে দিয়েছেন বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহ। কিন্তু মোদী ক্ষমতায় এলেও ২০১৪-র সেই ‘ম্যাজিক’ তাঁর পক্ষে তৈরি করা সম্ভব নয় বলে মত ওই সাংবাদিকের। তিনি লিখেছেন, ‘‘২০১৪-র নির্বাচনে মসিহা হিসাবে উঠে এসেছিলেন নরেন্দ্র মোদী। মানুষকে অগণিত স্বপ্ন দেখিয়েছিলেন। আশা জাগিয়েছিলেন মানুষের মনে। উজ্জ্বল ভবিষ্যতের স্বপ্ন দেখিয়েছিলেন। কিন্তু মসিহা থেকে এখন তিনি প্রতিশ্রুতি পূরণে ব্যর্থ সাধারণ রাজনীতিকে পরিণত হয়েছেন, যিনি ফের ক্ষমতায় আসতে মরিয়া।’’

আরও পড়ুন: কিছুই বদলায়নি মন্দসৌরে, ঋণের বোঝা নিয়ে মাত্র ২ টাকায় পেঁয়াজ বেচতে বাধ্য হচ্ছেন কৃষক​

বিজেপি বিরোধীদেরও তীব্র সমালোচনা করে ওই প্রতিবেদনে লেখা হয়েছে, ‘‘মোদীর ভাগ্য ভাল যে বিরোধী পক্ষ দুর্বল। কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন বিরোধী জোট একেবারেই সুশৃঙ্খল নয়। মোদীকে পরাজিত করতে তেমন নির্দিষ্ট নির্বাচনী ইস্যুও নেই তাদের হাতে।’’

২০১৪-য় প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হওয়ার পরের বছর টাইম পত্রিকার প্রচ্ছদে জায়গা পেয়েছিলেন নরেন্দ্র মোদী। ২০১২-য় গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রী থাকাকালীনও একবার তাঁকে নিয়ে প্রচ্ছদ ছাপা হয়েছিল। কিন্তু সরাসরি এমন আক্রমণ এই প্রথম।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE