মোহনদাস কর্মচন্দ গাঁধীর হত্যাকারী নাথুরাম গডসেকে দেশভক্ত বলে ফের বিতর্কে জড়ালেন ভোপালের বিজেপি প্রার্থী প্রজ্ঞা সিংহ ঠাকুর ওরফে সাধ্বী প্রজ্ঞা। দলের চাপে শেষ পর্যন্ত ক্ষমা চেয়েছেন তিনি। তাতে অবশ্য বিজেপির অস্বস্তি কাটেনি। প্রজ্ঞার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া উচিত বলে জানিয়েছেন মধ্যপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী কমল নাথ।
সম্প্রতি নাথুরাম গডসেকে ‘স্বাধীন ভারতের প্রথম হিন্দু জঙ্গি’ বলায় দক্ষিণী অভিনেতা ও রাজনীতিবিদ কমল হাসনকে নিয়ে জলঘোলা কিছু কম হয়নি। এর উত্তরে ‘হিন্দু কখনও জঙ্গি হতে পারে না’ বলে মন্তব্য করেছিলেন খোদ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। বৃহস্পতিবার আরও এক ধাপ এগিয়ে গডসেকে ‘দেশভক্ত’ বলে বসলেন সাধ্বী প্রজ্ঞা। এ দিন শেষ দফা ভোটের প্রচারে মালওয়া গিয়েছিলেন নেত্রী। সেখানে তিনি বলেন, ‘‘নাথুরাম গডসে দেশভক্ত ছিলেন, দেশভক্ত আছেন এবং দেশভক্ত থাকবেন। যাঁরা তাঁকে সন্ত্রাসবাদী বলছেন, তাঁদের ভেবে দেখা উচিত। এই ভোটেই তাঁরা উপযুক্ত জবাব পাবেন।’’
প্রজ্ঞার এই মন্তব্যে আজ নতুন করে বিতর্ক ছড়ায়। ন্যাশনাল কনফারেন্স নেতা ওমর আবদুল্লা টুইট করে বলেন, ‘‘জাতির জনকের খুনি যদি দেশপ্রেমী হন তা হলে মহাত্মা গাঁধীকে রাষ্ট্রদ্রোহী বলতে হয়।’’ সরব হয় কংগ্রেসও। ভোপালের কংগ্রেস প্রার্থী দিগ্বিজয় সিংহ এ দিন বলেন, ‘‘নাথুরাম গডসেকে মহিমান্বিত করাটা মোটেই দেশপ্রেমের পরিচয় নয়। তা রাষ্ট্রদ্রোহের নামান্তর। রাজ্য বিজেপি, মোদীজি, অমিতজি এর জবাব দিন। দেশবাসীর কাছে ক্ষমা চান।’’ কংগ্রেসের অন্য নেতারাও এর প্রতিবাদ জানান। প্রজ্ঞার মন্তব্যে সোশ্যাল মিডিয়ায় ব্যঙ্গের ঝড় ওঠে। এক টুইটার ব্যবহারকারীর বক্তব্য, ‘‘মোদী, শাহ আর বিজেপির পর্দা ফাঁস হয়ে গিয়েছে। আসল চেহারা বেরিয়ে পড়েছে।’’
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
মালেগাঁও হামলায় নাম জড়ানো প্রজ্ঞার নানা মন্তব্যকে ঘিরে আগেও অস্বস্তিতে পড়েছে বিজেপি। বাবরি মসজিদ ধ্বংস এবং মুম্বই হামলায় হত মহারাষ্ট্র সন্ত্রাস দমন শাখার অফিসার হেমন্ত কারকারেকে নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্যের জেরে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাইতে হয়েছে তাঁকে। প্রজ্ঞার এ দিনের মম্তব্যকেও সমর্থন করেনি দল। উল্টে তাঁর সঙ্গে দূরত্ব বাড়িয়েছে তারা। মধ্যপ্রদেশের বিজেপি নেতা লোকেন্দ্র পরাশর বলেছেন, ‘‘গাঁধীর খুনিকে কিছুতেই দেশপ্রেমী বলা যায় না।’’ প্রজ্ঞাকে ক্ষমা চাইতেও বলে দল। বিবৃতি দিয়ে প্রজ্ঞা বলেন, ‘‘আমি কাউকে আঘাত করতে চাইনি। আমার মন্তব্যে কেউ আঘাত পেয়ে থাকলে আমি ক্ষমাপ্রার্থী।’’ তাতে আক্রমণ থামেনি। কংগ্রেস নেত্রী প্রিয়ঙ্কা গাঁধী বঢরা টুইট করে বলেন, ‘‘প্রার্থীর থেকে দূরত্ব তৈরি করলেই হয় না। জাতীয়তাবাদের ধ্বজাধারী বিজেপি নেতারা নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করুন।’’