—ফাইল চিত্র।
প্রধানমন্ত্রীর নিদান মানতেই হবে! কিন্তু তাই বলে গোয়ার সঙ্গে মহাত্মা গাঁধীর সম্পর্ক খুঁজে বের করাটা কি সহজ কাজ!
কিন্তু উপায় নেই। নরেন্দ্র মোদী চান, এ বার প্রজাতন্ত্র দিবসের প্যারেডে দিল্লির রাজপথে যে সব ট্যাবলো নামবে, তার সবগুলিরই থিম হতে হবে ‘জাতির জনক’। এ বছরই গাঁধীর জন্মের সার্ধশতবর্ষ পূর্ণ হচ্ছে। এ বারই প্রথম প্রধানমন্ত্রীর ইচ্ছেয় সমস্ত ট্যাবলো একই থিমে বাঁধা পড়ছে।
প্রধানমন্ত্রী নিজে আমদাবাদের সবরমতী আশ্রমে গেলেই বারান্দায় বসে চরকা কাটেন। মুম্বইয়ে সিনেমার জাদুঘরেও গাঁধীমূর্তির পাশে বসে ছবি তোলেন। নিজেকে গাঁধীর যোগ্য উত্তরসূরি হিসেবেই তুলে ধরতে চান। তাই প্রজাতন্ত্র দিবসের ট্যাবলোর জন্যও গাঁধী-থিমই বাঁধা হয়েছে। দিল্লি, গুজরাত বা পশ্চিমবঙ্গের পক্ষে ব্যাপারটা মুশকিলের নয়। ১৯৪৭-এর ১৫ অগস্ট গাঁধী কলকাতাতেই বেলেঘাটায় সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার বিরুদ্ধে অনশন করছিলেন। দাঙ্গাকারীরা তাঁর সামনে অস্ত্র সমর্পণ করেন। সে দৃশ্যই ফুটে উঠবে পশ্চিমবঙ্গের ট্যাবলোতে। ট্যাবলো তৈরির দায়িত্বে থাকা শিল্পী বাপ্পাদিত্য চক্রবর্তী বলেন, ‘‘বেলেঘাটার অনশনের সঙ্গে শান্তিনিকেতনে রবীন্দ্রনাথের সঙ্গে আলাপচারিতায় দৃশ্যও তুলে ধরা হবে।’’ বাপ্পাদিত্যর পরিকল্পনাতেই দিল্লি সরকারের ট্যাবলোয় হাজির বিড়লা হাউস। যে বাড়িতে গাঁধীহত্যার ঘটনা ঘটে।
কিন্তু সিকিম বা অরুণাচল প্রদেশ কী করবে? যে কোনও উপায়ে গাঁধীর সঙ্গে সম্পর্ক তৈরির রাস্তা বের করতে হচ্ছে তথ্য-সংস্কৃতি দফতরগুলিকে। সিকিম তার জৈব চাষের সাফল্যকে তুলে ধরছে। দেখানো হচ্ছে, গাঁধীর আদর্শও তা-ই ছিল। অরুণাচলের ট্যাবলোর থিম ‘অন্তরের শান্তি’। তা-ও গাঁধীরই বাণী।
আর গোয়া? এত দিন ২৬ জানুয়ারির সকালে গোয়ার ট্যাবলো রাজপথে নামলে রংবেরঙের পোশাক আর নাচ দেখা যেত। এ বার গোয়ার সরকারি কর্তারা ‘বৈচিত্রের মধ্যে ঐক্য’ থিম বেছেছেন। বৈচিত্র ছাড়তে না পেরে তা দিয়েই গাঁধী-গোয়ার ঐক্য তৈরি করেছেন মনোহর পর্রীকর। যে সব রাজ্য বা কেন্দ্রীয় মন্ত্রকের সে সুযোগও নেই, তাঁরা গাঁধীর চশমাকে আশ্রয় করেছেন। মোদী তাঁর ‘স্বচ্ছ ভারত’ অভিযানের লোগো করেছেন গাঁধীর চশমা। অনেক রাজ্যই স্বচ্ছ ভারতকে থিম করেছে।
কেন্দ্রীয় মন্ত্রকগুলিরও একই দশা। ৬টি মন্ত্রকের ট্যাবলো নামবে রাজপথে। দক্ষিণ আফ্রিকায় তরুণ গাঁধীকে শ্বেতাঙ্গরা ট্রেন থেকে ফেলে দিয়েছিলেন। সেই ছবিই রেল মন্ত্রকের ট্যাবলোয়। কিন্তু বাকি মন্ত্রকগুলির জন্য ঝাঁটা-ঝাড়ুই ভরসা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy