E-Paper

চোখের জল, প্রার্থনায় গণকবর ২৩ জনের

ইম্ফলে কর্মরত ফ্লোরেন্স হাংসিং ও অলিভিয়া চোংলোইকে তাঁদের ঘর থেকে টেনে বের করে আনে মেইতেই মহিলা বাহিনী। পুরুষদের নির্দেশ দেয় ধর্ষণ করে তাদের হত্যা করার।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৬ ডিসেম্বর ২০২৩ ০৮:৩৭
Manipur Violence.

হিংসা বিধ্বস্ত মণিপুর। —ফাইল চিত্র।

মাত্র সাত বছরের টংসিং হাংসিং সময় থাকতেই আসাম রাইফেলসের শিবিরে পালিয়ে এসেছিল মায়ের সঙ্গে। কিন্তু ৪ জুন শিবিরের ভিতরে গুলি লাগে তার মাথায়। সেই অবস্থায় আধাসেনার গাড়িতে ছেলে এবং আরও এক মহিলাকে নিয়ে টংসিংয়ের মা রওনা হয়েছিলেন ইম্ফলের হাসপাতালের উদ্দেশে। ভরসা ছিল কুকিকে বিয়ে করলেও তিনি নিজে মেইতেই খ্রিস্টান। তাই তাঁকে হয়তো ছেড়ে দেবে ক্ষিপ্ত মেইতেই জনতা। কিন্তু পুলিশের গাড়িকে তাড়িয়ে, অ্যাম্বুল্যান্স থামিয়ে ছোট্ট টংসিং-সহ তিন জনকে জীবন্ত পুড়িয়ে মারা হয়। দেশ কাঁপানো সেই ঘটনার পরে ৬ মাস কেটেছে। এত দিন পরে স্ত্রী ও সন্তানের অবশিষ্ট দেহাংশকে কবর দিতে পারলেন যোশুয়া হাংসিং।

ইম্ফলে কর্মরত ফ্লোরেন্স হাংসিং ও অলিভিয়া চোংলোইকে তাঁদের ঘর থেকে টেনে বের করে আনে মেইতেই মহিলা বাহিনী। পুরুষদের নির্দেশ দেয় ধর্ষণ করে তাদের হত্যা করার। ১৮ বছরের এল তৌথাং, ১৯ বছরের এস সিংসিট, লেটমিনচিং হাওকিপদের তারুণ্য কাটারই সময় পেল না মাথায় ঢোকা তপ্ত শিসের ধাক্কায়। মৃত্যুর পরে কেটে গিয়েছে সাত মাসের উপরে। অবশেষে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে ইম্ফলের হাসপাতাল থেকে কুকি এলাকায় এসে পৌঁছনোর পরে দেহগুলির সৎকার হল শুক্রবারে। কুকি বিধায়ক, গোষ্ঠীপতিরা সাম্মানিক শালে ঢেকে দিলেন কফিনগুলি। বৃহস্পতিবারে আসা ১৯টি দেহ ও ইতিমধ্যেই কাংপোকপিতে থাকা চারটি দেহ-সহ মোট ২৩টি দেহ গণকবর দেওয়া হল ফাইজাং এলাকায়। দেওয়া হল গান স্যালুট। পালিত হল ১২ ঘণ্টার বনধ্।

তবে চূড়াচাঁদপুরে পাঠানো ৪১টি দেহ ও আগে থেকে মর্গে জমা ৩৫টি দেহ কোথায় গণকবর দেওয়া হবে সেই সিদ্ধান্ত এখনও ঝুলে। কুকি যৌথ মঞ্চ কোটু জানায়, এই ভাবে ঘরের ছেলেমেয়েরা যে ঘরে ফিরবে, তা ভাবতে পারেনি আত্মীয়রা। সুপ্রিম কোর্টের হস্তক্ষেপে অন্তত এত দিনে দেহগুলিকে যে সৎকার করা গেল, সেটাই শান্তি। তাদের বক্তব্য, নিহতদের সামনে রেখে আমরা পৃথক প্রশাসনের দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত ঐক্যবদ্ধ সংগ্রামের অঙ্গীকার করছি।’

এ দিকে মায়ানমারের দিকে সংঘর্ষ বাড়ায় মণিপুরের কামজংয়ের আরও ২০৬০ জন শরণার্থী প্রবেশ করেছে। বর্তমানে জেলার পাঁচটি ত্রাণ শিবিরে আশ্রয় নিয়েছেন ৪০৫২ জন শরণার্থী। তাঁদের বায়োমেট্রিক সংগ্রহ করার কাজ চলছে। পুলিশ জানায়, চার-পাঁচ দিন আগে জঙ্গি ও পিডিএফ শিবিরের উপরে যুদ্ধবিমান ও কপ্টার থেকে বোমাবর্ষণ করে মায়ানমার সেনা।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Manipur Violence Mass Burials Manipur

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy