নরেন্দ্র মোদী।-ফাইল চিত্র।
সন্ত্রাসবাদ খতম হবে, উবে যাবে মাওবাদী সমস্যাও। গত নভেম্বরে নোট বাতিলের সময় এমন স্বপ্নই দেখিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।
আট মাস পরে প্রধানমন্ত্রীর সেই প্রতিশ্রুতি নিয়ে প্রশ্নের মুখে পড়লেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের কর্তারা। সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে প্রশ্ন উঠল, নোট বাতিলের ফলে সন্ত্রাসবাদের সমস্যা কতটা মিটল? মাওবাদীরাই বা কতটা মুশকিলে পড়েছে?
বিরোধী সাংসদরা যে এই প্রশ্ন তুলবেন, তা জানাই ছিল। বস্তুত একের পর এক জঙ্গি হামলার পরে মোদীর ওই বক্তব্য নিয়ে নানা মহলে বিদ্রুপ চলছেই। কিন্তু বিজেপির সাংসদরাও একই প্রশ্ন তোলায় অস্বস্তিতে সরকার।
আজ অর্থ মন্ত্রকের সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের কর্তাদের ডাকা হয়। সূত্রের খবর, কমিটিতে ঝাড়খণ্ডের এক বিজেপি সাংসদ নোট বাতিলের ফলে মাওবাদীরা কতটা সমস্যায় পড়ল, তা জানতে চান। কমিটির সদস্যদের বক্তব্য, নতুন মনোনীত স্বরাষ্ট্র সচিব রাজীব গউবা বা মন্ত্রকের অন্য কর্তারা এই প্রশ্নের নির্দিষ্ট কোনও উত্তর দেননি। বিরোধীদের যুক্তি, ক’দিন আগেই সুকমায় মাওবাদী হামলায় ২৫ জন আধাসেনা নিহত হয়েছেন। আর কাশ্মীর থেকে উত্তর-পূর্বের
বিভিন্ন জায়গায় জঙ্গি হামলাও অব্যাহত। তা হলে নোট বাতিলের কী প্রভাব পড়ল!
নোট বাতিলের পরে ‘ডিজিটাল অর্থনীতি’-র কথাও বলেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তিনি ও তাঁর দলের নেতা-মন্ত্রীরা এ নিয়ে হইহই করে প্রচারও চালিয়েছেন নিরন্তর। কিন্তু সাইবার সুরক্ষা কতখানি মজবুত, তা নিয়ে বিস্তর প্রশ্ন উঠেছে গত কয়েক মাসে। এ নিয়ে কথা বলতেই আজ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক ও নীতি আয়োগের কর্তাদের ডেকে পাঠায় কংগ্রেসের বীরাপ্পা মইলির নেতৃত্বাধীন কমিটি। হাজির ছিলেন সার্ট-ইন (কম্পিউটার এমার্জেন্সি রেসপন্স টিম), সিবিআই, দিল্লি পুলিশের কর্তারাও।
ডিজিটাল লেনদেনের ক্ষেত্রে হ্যাকিং, ভাইরাস হানা রুখতে কী ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে, তা জানতে চান তৃণমূলের সৌগত রায়-সহ অন্যরা। প্রশ্নের মুখে সাইবার হামলা রোখার গোটা ব্যবস্থার ব্যাখ্যা দেন সরকারি অফিসাররা। তাতে সন্তুষ্ট হলেও তৃণমূলের দিনেশ ত্রিবেদীর পরামর্শ, সাইবার হামলা মোকাবিলায় পৃথক মন্ত্রক তৈরির সময় এসেছে।
আরও পড়ুন: চিন নিয়ে বিপাকে, তাই সর্বদল
ডিজিটাল মুদ্রা বা বিটকয়েন নিয়েও এ দিন কথা হয়। যদিও রিজার্ভ ব্যাঙ্কের গভর্নর উর্জিত পটেল-সহ কেউই এ নিয়ে সরকারের নীতি স্পষ্ট করতে পারেননি। আরবিআই ও অর্থ মন্ত্রকের কর্তারা জানিয়েছেন, বিটকয়েন নিয়ে সরকারের এখনও স্পষ্ট কোনও অবস্থান নেই। এটি আইনি না বেআইনি, তা-ও ঠিক হয়নি। অর্থ মন্ত্রক ও আরবিআই একটি করে কমিটি গঠন করেছে। তারা বিষয়টি খতিয়ে দেখছে।
প্রশ্ন উঠেছে, মোদী সরকার কালো টাকার লেনদেন বন্ধ করার কথা বলছে। বিটকয়েনের মাধ্যমে সেই কালো টাকার হাতবদল সম্ভব। কারা লেনদেন করছে, তা গোপন রাখা যায়। বিটকয়েন কার্যত বিকল্প মুদ্রার কাজ করে। নোট বাতিলের পরে বিটকয়েনের ব্যবহার বেড়েছে। সরকারি কর্তারা জানান, বিভিন্ন মন্ত্রকের বৈঠক হলেও এ বিষয়ে কোনও সিদ্ধান্ত হয়নি। আপাতত বিটকয়েনকে একটি পণ্য হিসেবেই দেখা হচ্ছে। বিটকয়েনের লেনদেনকে সেবি-র আওতায় আনার কথাও ভাবা হয়েছে।
সরকারের এই অবস্থান দেখে এনডিএ-শরিক অকালি দলের এক সাংসদের মন্তব্য, ‘‘এর পর রাজনৈতিক দলগুলিও বিটকয়েনে চাঁদা নিতে শুরু করবে। তার পরে হয়তো সরকার নীতি ঠিক করবে!’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy