Advertisement
০৫ মে ২০২৪

বিয়ে রুখতে এসপির কাছে নাবালিকা

শুধু বিয়ের কার্ড ছাপাই নয়, বিয়ের জিনিস কেনাও শুরু করে দিয়েছিলেন সিমডেগার কুল্লুকেরার বাসিন্দা খুয়ু নায়ক। কিন্তু তাঁর ১৫ বছরের মেয়ে সাকিনা কুমারী যে কতখানি জেদি তা জানতেন না বাবা। প্রথম থেকেই সে বলেছিল, বিয়ে করবে না।

এসপির সঙ্গে সাকিনা কুমারী। ছবি: পার্থ চক্রবর্তী।

এসপির সঙ্গে সাকিনা কুমারী। ছবি: পার্থ চক্রবর্তী।

নিজস্ব সংবাদদাতা
রাঁচি শেষ আপডেট: ০৭ এপ্রিল ২০১৬ ০৩:২২
Share: Save:

শুধু বিয়ের কার্ড ছাপাই নয়, বিয়ের জিনিস কেনাও শুরু করে দিয়েছিলেন সিমডেগার কুল্লুকেরার বাসিন্দা খুয়ু নায়ক। কিন্তু তাঁর ১৫ বছরের মেয়ে সাকিনা কুমারী যে কতখানি জেদি তা জানতেন না বাবা। প্রথম থেকেই সে বলেছিল, বিয়ে করবে না। পড়াশোনা করবে। মেয়ের কথায় পাত্তা দেননি তিনি। সাকিনা কিন্তু শেষ পর্যন্ত জেদে অনড় রইল। আজ সকালে সে স্কুলে গিয়ে এক শিক্ষককে সঙ্গে নিয়ে সোজা চলে যায় সিমডেগার পুলিশ সুপারের অফিসে। যার জেরে আটকে যায় অষ্টম শ্রেণির সাকিনার বিয়ে।

প্রত্যন্ত গ্রাম কুল্লুকেরার অনেকেরই আঠারোর আগে পড়াশোনা বন্ধ করে বিয়ে হয়ে যায়। এটাই পরিচিত ছবি। সাকিনা সেটাই পাল্টে দিল। বিয়ের দিন ঠিক ছিল ২১ এপ্রিল। পুলিশ সুপারের অফিসে দাঁড়িয়ে লাজুক মুখে সাকিনা বলে, “আমার বিয়ের কার্ড বিলি হচ্ছিল। বাবাকে বারবার বারণ করেছিলাম। কেউ আমার কথা শোনেনি। তাই বাধ্য হয়ে পুলিশ সাহেবের কাছে এসেছি।” কুল্লুকেরা গ্রামের গরিব কৃষক খুয়ু। চার মেয়ের মধ্যে সাকিনা বড়। খুয়ু বলেন, “আমরা গরিব। মেয়ের ভালর জন্যই তো পাশের গ্রামের একটি ভাল ছেলের সঙ্গে সম্বন্ধ করেছিলাম। ধারদেনাও করে ফেলেছি। এ বার কী হবে কে জানে!”

সাকিনা থানায় এসে পরিবারের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ করেছে। সিমডেগার পুলিশ সুপার রাজীবরঞ্জন সিংহ বলেন, “আরও পড়াশোনা করতে চায় বলে মেয়েটি আমাদের জানিয়েছে। বাড়িতে সে পরিবেশ নেই। জেলাশাসকের সঙ্গে কথা বলে ওকে সিমডেগার কস্তুরবা গাঁধী আবাসিক বিদ্যালয়ে ভর্তি করে দেওয়ার কথা ভাবছি।” পুলিশ জানিয়েছে, মেয়েটির মা বাবাকে থানায় ডেকে পাঠানো হয়েছে। এ বার তাঁদের সর্তক করে দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু ফের বিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করলে তাঁদের গ্রেফতার করা হবে।

চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে গুমলার নাবালিকা মমতা কুমারী একই ভাবে বিয়ের প্রতিবাদ করেছিল। মা, বাবার বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ করেছিল সে। তার কয়েক মাস আগে গুমলার আর এক নাবালিকা বিরসামুনি কুমারীও নিজের বিয়ে রুখেছিল। এরা সবাই এখন আবাসিক বিদ্যালয়ে পড়াশোনা করছে। সিমডেগার জেলাশাসক বিজয়কুমার সিংহের মতে, এই সব সাহসী মেয়েরাই অন্য মেয়েদের পথ দেখাচ্ছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

marriage Minor girl police
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE