যোজনা কমিশনের পর কী এই নিয়ে আলোচনায় এ বারে কমিশনের প্রাক্তনীদেরও মত নিতে চাইছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সেই লক্ষ্যেই আগামী মঙ্গলবার এক বৈঠকে বসছেন তিনি। যোজনা কমিশন ভেঙে যে নতুন প্রতিষ্ঠান তৈরি করা হবে, তার চেহারাটা ঠিক কেমন হবে, তা নিয়ে আলোচনাই এই বৈঠকের মূল লক্ষ্য। এ যাবৎ যাঁরা যোজনা কমিশনের সদস্য, সচিব বা উপাধ্যক্ষের পদ সামলেছেন, রাজনৈতিক মত নির্বিশেষে তাঁদের সকলকে ওই বৈঠকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
গত সপ্তাহে লালকেল্লা থেকে যোজনা কমিশন ভেঙে দেওয়ার কথা ঘোষণা করেন মোদী। জানিয়েছিলেন, তার পরিবর্তে তৈরি হবে নতুন কোনও প্রতিষ্ঠান। সেখানে রাজ্যগুলোর ক্ষমতা বেশি থাকবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি। তবে এই নতুন প্রতিষ্ঠানের কাঠামো এবং প্রক্রিয়া নিয়ে এখনও নীরব সরকার। ফলে, নতুন এই প্রতিষ্ঠানের নিয়ন্ত্রক কে হবেন, কেন্দ্র এবং রাজ্যের ক্ষমতা এবং অধিকারের ভাগাভাগি কেমন হবে এবং কী কী দায়িত্ব পালন করবে এই নতুন প্রতিষ্ঠান, তা নিয়ে জল্পনা চরমে। মনে করা হচ্ছে, মঙ্গলবারের ওই বৈঠকের পরে সামান্য হলেও ছবিটা সাফ হবে।
বৈঠকে যাঁরা এর মধ্যেই ডাক পেয়েছেন, সেই তালিকায় রয়েছেন কমিশনের সদ্য প্রাক্তন উপাধ্যক্ষ মন্টেক সিংহ অহলুওয়ালিয়া। অহলুওয়ালিয়ার আমলেই নিজের গণ্ডি থেকে বেরিয়ে কেন্দ্রের বিভিন্ন মন্ত্রকের কাজে নাক গলানোর অভিযোগ উঠেছিল যোজনা কমিশনের বিরুদ্ধে। অভিযোগ ছিল, রাজ্যগুলোর কাজকর্মের উপরেও দাদাগিরি ফলাচ্ছে কমিশন। গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে মোদী সেই সময়ে এই দাদাগিরির বিরুদ্ধে সরব ছিলেন।
মোদী কিন্তু নতুন প্রতিষ্ঠানের চেহারা নিয়ে পরামর্শ চাইতে সেই মন্টেককেই আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। অনেকেই বলছেন, এই বৈঠকের মাধ্যমে মোদী এমন ভাবমূর্তি তৈরির চেষ্টা করছেন, যাতে সার্বিক ভাবে মনে হয়, জাতীয় স্বার্থের খাতিরে সব রকম রাজনৈতিক সংকীর্ণতা ঝেড়ে ফেলেছেন প্রধানমন্ত্রী।
মোদী নিজেই ওই বৈঠকের সভাপতিত্ব করবেন। থাকবেন যোজনা দফতরের মন্ত্রী রাও ইন্দ্রজিৎ সিংহ। কমিশনের সচিব সিন্ধুশ্রী খুল্লার প্রশ্ন তুলবেন যোজনা কমিশনের ভবিষ্যৎ নিয়ে, যা আলোচনাকে এগিয়ে দেবে। নতুন প্রতিষ্ঠানের কাঠামো, দায়বদ্ধতা নিয়ে সকলের মতামত জানতে চাওয়া হবে। সরকারি সূত্রের খবর, নতুন প্রতিষ্ঠান মূলত একটি ‘থিঙ্ক ট্যাঙ্ক’ হিসেবে কাজ করবে।
যোজনা ভবনে তিন দিন আগে থেকেই এই বৈঠকের প্রস্তুতি শুরু হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর দফতরের নির্দেশ, কোথাও যেন কোনও খুঁত না থাকে। তবে সকলের মনে প্রশ্ন দু’জনকে নিয়ে বৈঠকে কি আসছেন প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহ?
এক সময়ে কমিশনের সচিব ছিলেন মনমোহন সিংহ। রাজীব গাঁধীর আমলে ছিলেন উপাধ্যক্ষ। আবার প্রধানমন্ত্রী হিসেবে কমিশনের অধ্যক্ষও ছিলেন। রাজনৈতিক উদারতা দেখিয়ে কি তা হলে মনমোহনকেও আমন্ত্রণ জানিয়েছেন মোদী? আর যদি তা হয়েও থাকে, রাজনৈতিক বিরোধিতার গণ্ডি পেরিয়ে মনমোহন কি আসবেন বৈঠকে? কেউ কেউ আবার বলছেন, নরসিংহ রাওয়ের আমলে উপাধ্যক্ষ ছিলেন প্রণববাবু। তাঁর বেলায় কি হবে?
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy