সংসদে মোদী। ছবি: পিটিআই।
ক্ষণিকের জন্য আজ লোকসভায় দেখা দিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। মেরেকেটে পাঁচ মিনিট। একটিও কথা বলেননি। তার মধ্যেই অবশ্য লোকসভার অধিবেশন মুলতুবি করে দেন স্পিকার। এর পর আর ফিরে আসেননি প্রধানমন্ত্রী।
কিন্তু এই ক্ষণিকের উপস্থিতি নিয়েই গোটা বিজেপি শিবির ঝাঁপিয়ে পড়েছে, এই দেখুন প্রধানমন্ত্রী সংসদে। যে বিরোধীরা প্রধানমন্ত্রীকে দেখতে চাইছিলেন, তারাই এখন আর আলোচনা করছে না। সংসদীয় মন্ত্রী অনন্ত কুমার বলেন, অসম থেকে মধ্যপ্রদেশে জয় দেখিয়ে দিয়েছে, নোট বাতিলের সিদ্ধান্তে মানুষ প্রধানমন্ত্রীর পাশে। সাংবাদিকদের কাছে মোদীর সেনাপতি অমিত শাহ বলছেন, জওহরলাল নেহরু থেকে আজ পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রীদের উপস্থিতির খতিয়ান খতিয়ে দেখুন, নরেন্দ্র মোদীর উপস্থিতিই সব থেকে বেশি।
কিন্তু কোথায় কী? গোটা লোকসভার রেকর্ড ঘেঁটে যা বেরিয়ে আসছে, তাতে এক দিনও সংসদে আসেননি প্রধানমন্ত্রী।
আসলে সাংসদরা যখন লোকসভা বা রাজ্যসভায় যান, নিয়ম হল বাইরে রাখা ডায়েরিতে নিয়মিত স্বাক্ষর করা। সেই স্বাক্ষরই লিপিবদ্ধ করে, কোন কোন সাংসদ কত দিন সংসদে উপস্থিত থাকলেন। এর ভিত্তিতে ভাতাও পান সাংসদরা। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী লোকসভা বা রাজ্যসভায় এক দিনও আসেননি, এমন নয়। অথচ সই না করার জন্য তিনি কত দিন সংসদে হাজির থেকেছেন, সেই হিসাবটি খুঁজে পাওয়া দুষ্কর।
প্রধানমন্ত্রীর সচিবালয় অবশ্য বলছে, প্রধানমন্ত্রী নিয়মিত সংসদ ভবনে আসেন। সংসদ ভবনে নিজের দফতরে বসে রোজ সকালে দলের নেতাদের সঙ্গে সংসদের কৌশল নিয়েও আলোচনা করেন। দিনভর অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকও করেন। লোকসভা বা রাজ্যসভায় না গেলেও সেখানকার গতিবিধি সম্পর্কে ওয়াকিবহাল। টেলিভিশনেও সরাসরি সম্প্রচার দেখেন। কিন্তু বিরোধীরা বলছে, তিনি সই করেন না আসলে হিসাবটি গুলিয়ে দেওয়ার জন্য। রাহুল গাঁধী আজও বলেন, ‘‘প্রধানমন্ত্রী সব জায়গায় বক্তৃতা করছেন। সংসদে এসে বলতে আপত্তি কোথায়? কীসের ভয় পাচ্ছেন তিনি? নোট বাতিলের সিদ্ধান্তটি তো তিনিই নিয়েছেন। তাঁর উচিত সংসদে সারাক্ষণ বসে বিরোধীদের কথা শোনা।’’
আরও পড়ুন: ‘হিটলারের চেয়েও বড় হিটলার এসে গিয়েছেন’ আরও চড়া মমতার সুর
কংগ্রেসের নেতা রণদীপ সিংহ সুরজেওয়ালা বলেন, ‘‘প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর উচিত ছিল মনমোহন সিংহের থেকে পরামর্শ নেওয়া। তিনি সংসদে আসছেন না। বাইরে থেকে অ্যাপের মাধ্যমে জনতার মত চাইছেন।’’ চাপের মুখে পড়ে বিজেপি নেতারা আজ সন্ধ্যায় বলেন, বিরোধী দলের সঙ্গেও আলোচনায় রাজি সরকারপক্ষ। আগমিকাল রাজ্যসভায় থাকতে পারেন প্রধানমন্ত্রী। বিরোধীদের মত, আগামিকাল রাজ্যসভায় প্রধানমন্ত্রী দফতরের প্রশ্ন আছে। স্বাভাবিক ভাবেই তাঁর সেখানে থাকা উচিত। গত বুধবার সংসদের অধিবেশন শুরু হতেই বিরোধীরা নোট বাতিল নিয়ে আলোচনা শুরু করে দিয়েছে। কিন্তু বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রীর হাজির থাকার কথা থাকলেও তিনি আসেননি। তখন থেকেই বিরোধীরা একজোট হয়ে দাবি তুলতে থাকে, প্রধানমন্ত্রী সংসদে না এলে আলোচনাও হবে না।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy