বিতর্কের বাইশ গজে প্রথমে নামতে চাননি তিনি। কিন্তু বিপক্ষের বাউন্সারে নিজের দলের বেহাল দশা দেখে শুধু দর্শকের ভূমিকায় আর থাকতে পারলেন না নরেন্দ্র মোদী। মাঠে নামতেই হল তাঁকে। বিদ্রোহী কীর্তি আজাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে দলীয় সভাপতি অমিত শাহকে নিয়ে সক্রিয় হয়ে উঠলেন প্রধানমন্ত্রী। যদিও তাতে ম্যাচ কিছুটা সামাল দেওয়া গেলেও টিম বিজেপির অন্দরের অশান্তি রয়েই গেল বলে আশঙ্কা অনেকের।
এটাই চাননি মোদী! দিল্লি ক্রিকেট সংস্থায় (ডিডিসিএ) দুর্নীতির অভিযোগ তুলে বহু দিন ধরেই হইহল্লা করছিলেন কীর্তি। কিন্তু তখনও প্রধানমন্ত্রীর মত ছিল, ক্রিকেট থাকুক নিজের জায়গায়। সেখানে আগ বাড়িয়ে শাসক দলের ঢোকার দরকার নেই। ইতিমধ্যে দিল্লির সচিবালয়ে হানা দেয় সিবিআই। মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীবাল দাবি করেন, ডিডিসিএ দুর্নীতির ফাইল খুঁজতেই এসেছিল কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা দল। তির ঘুরে যায় কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলির দিকে। নয়া ইন্ধনে চাঙ্গা হয়ে জেটলিকে তোপ দাগা শুরু করেন কীর্তি। তখনও কিন্তু মোদী লালকৃষ্ণ আডবাণীর দৃষ্টান্ত দিয়ে জেটলির সততার প্রশংসা করেছিলেন। যদিও সেই মন্তব্য অস্বস্তি বাড়িয়েছিল জেটলি-শিবিরে। অনেকেরই মনে হয়েছিল, গোটা ব্যাপারটা থেকে নিজের দূরত্ব বাড়িয়ে ফেললেন মোদী।
আসলে কিন্তু মোদী-অমিত ধরে ফেলেছিলেন, কীর্তি নিমিত্ত মাত্র। ক্রিকেটার-সাংসদকে ঢাল করে নেপথ্যে ঘুঁটি সাজাচ্ছে বিজেপিরই জেটলি-বিরোধী শিবির। তাঁদের আক্রমণের লক্ষ্য যতটা না জেটলি, তার চেয়েও বেশি মোদী নিজে! এই কারণেই প্রথমটায় কীর্তির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে চাননি মোদী-অমিত। সময় নিয়েছিলেন দিন চারেক। কিন্তু ততক্ষণে রাজনৈতিক ক্ষতি যা হওয়ার হয়ে যায়। ‘দুর্নীতি-দমনে’ ব্যর্থতা নিয়ে সটান কেন্দ্রীয় সরকারকে নিশানা করে ঘোলা জলে মাছ ধরতে নেমে পড়ে আম আদমি পার্টি ও কংগ্রেস।