Advertisement
২৭ এপ্রিল ২০২৪
Coronavirus in India

দেশে প্লাজ়মা ব্যাঙ্ক কত? তা-ও জানে না কেন্দ্র

‘তথ্য নেই’-এর তালিকায় এ বার নতুন সংযোজন, প্লাজ়মা ব্যাঙ্ক। বহু রাজ্যে করোনা রোগীদের প্লাজ়মা থেরাপিতে চিকিৎসা করে সুস্থ করে তোলা হচ্ছে।

ছবি: সংগৃহীত।

ছবি: সংগৃহীত।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২১ সেপ্টেম্বর ২০২০ ০৪:৫৬
Share: Save:

নরেন্দ্র মোদী সরকারের ‘তথ্য নেই’-এর তালিকা আরও দীর্ঘ হল।

লকডাউনের পরে কত জন পরিযায়ী শ্রমিক বাড়ি ফেরার রাস্তায় মারা গিয়েছেন, বা কত জন শ্রমিক কাজ হারিয়েছেন, সে তথ্য সরকারের কাছে নেই বলে আগেই কেন্দ্র সংসদে জানিয়েছিল। কত ছোট-মাঝারি শিল্প সংস্থা বন্ধ হয়ে গিয়েছে, সে তথ্যও সরকারের কাছে নেই। দু’দিন আগে মোদী সরকারের স্বাস্থ্য মন্ত্রক জানিয়েছিল, করোনা রোগীদের চিকিৎসা করতে গিয়ে কত জন ডাক্তার মারা গিয়েছেন, তার তথ্যও কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে নেই।

‘তথ্য নেই’-এর তালিকায় এ বার নতুন সংযোজন, প্লাজ়মা ব্যাঙ্ক। বহু রাজ্যে করোনা রোগীদের প্লাজ়মা থেরাপিতে চিকিৎসা করে সুস্থ করে তোলা হচ্ছে। কিন্তু রবিবার স্বাস্থ্য মন্ত্রক সংসদে জানিয়েছে, দেশে কত প্লাজ়মা ব্যাঙ্ক রয়েছে, তার তথ্য সরকারের কাছে নেই। রাজ্যগুলি প্লাজ়মা থেরাপি দিতে প্লাজ়মা ব্যাঙ্ক তৈরিতে উদ্যোগী হয়েছে। কিন্তু এই ধরনের ব্যাঙ্কের কেন্দ্রীয় তথ্যভাণ্ডার রাখা হয়নি। গাড়ি শিল্পে কত জনের চাকরি গিয়েছে তাও আজ জানাতে পারেনি কেন্দ্র।

মোদী সরকারের কাছে কী তথ্য নেই

• কত জন পরিযায়ী শ্রমিক মারা গিয়েছেন
• কত জন পরিযায়ী শ্রমিক কাজ হারিয়েছেন
• লকডাউনের ফলে কতগুলি ছোট-মাঝারি শিল্প সংস্থা মারা গিয়েছে
• অতিমারির জেরে চাষিদের আয় কতখানি কমেছে
• কোভিডের চিকিৎসা করতে গিয়ে কত জন চিকিৎসক, স্বাস্থ্যকর্মী মারা গিয়েছেন
• দেশে কতগুলি প্লাজ়মা ব্যাঙ্ক রয়েছে
• কোভিডে কত জন সাফাই কর্মচারী মারা গিয়েছেন
• জেলে কত জন বিচারাধীন রাজনৈতিক বন্দি রয়েছেন

লোকসভায় কংগ্রেসের দলনেতা অধীর চৌধুরী আগেই মোদী সরকারকে ‘নো ডেটা সরকার’ বলে তকমা দিয়েছিল। আজ সংসদে তৃণমূলের রাজ্যসভার দলনেতা ডেরেক ও’ব্রায়েন কেন্দ্রকে নিশানা করে বলেন, ‘‘ডিজিটাল ইন্ডিয়ার কথা বলে সরকার। কিন্তু লোকসভা বা রাজ্যসভায় যেখানেই প্রশ্ন করা হোক, কোনও উত্তর মেলে না।’’

সংসদ অধিবেশনের প্রথম দিনেই কেন্দ্রীয় সরকার প্রশ্নের উত্তরে বলেছিল, বাড়ির পথ ধরা কত জন পরিযায়ী শ্রমিক রাস্তাতেই মারা গিয়েছেন, তার তথ্য নেই। অথচ শনিবার রেল মন্ত্রক জানিয়েছে, শ্রমিক স্পেশাল ট্রেনের মধ্যেই ৯৭ জন শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে। কত জন শ্রমিকের কাজ গিয়েছে, তার তথ্যও নেই। এর পরে করোনা কালে চাষিদের কতখানি ক্ষতি হয়েছে, তার তথ্য নেই বলে জানায় কৃষি মন্ত্রক। ছোট-মাঝারি শিল্প মন্ত্রক জানিয়েছে, লকডাউনের পরে কত ছোট-মাঝারি শিল্প সংস্থা বন্ধ হয়েছে, তার তথ্য নেই। বিরোধীদের যুক্তি, মোদী সরকার ছোট-মাঝারি শিল্পকে সুরাহা দিতে একগুচ্ছ প্রকল্প ঘোষণা করেছে। তা হলে বন্ধ সংস্থার হিসেব রাখছে না কেন?

একই প্রশ্ন ডাক্তারদের মৃত্যুর হিসেব নিয়েও। মোদী সরকার মার্চ মাসেই করোনার মোকাবিলায় নিযুক্ত ডাক্তার-স্বাস্থ্যকর্মীদের জন্য ৫০ লক্ষ টাকার বিমা ঘোষণা করেছিল। অথচ সংসদে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক জানিয়েছে, কত জন ডাক্তার ও স্বাস্থ্যকর্মী মারা গিয়েছেন, তার তথ্য নেই। অতিমারি পরিস্থিতিতে কত জন সাফাইকর্মী মারা গিয়েছেন, তার তথ্যও নেই বলে সামাজিক ন্যায় মন্ত্রক জানিয়েছে। সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন অতিমারির মোকাবিলা করতে গিয়ে মৃত ৩৮২ জন ডাক্তারের নামের তালিকা প্রকাশ করেছে। বিরোধীদের প্রশ্ন, সরকার কি ডাক্তারদের বিমার টাকা, পরিযায়ী শ্রমিকদের ক্ষতিপূরণ দেওয়ার ভয়েই তথ্য রাখছে না!

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE