Advertisement
১৯ মে ২০২৪

মোদী-শি আলোচনায় বসন্তের খোলা হাওয়া

মধ্য চিনের উয়াহান শহরে যা শুরু করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। এটা প্রথম, তবে শেষ নয়। মোদী জানাচ্ছেন, আগামী বছর একই ধাঁচে আলোচনার আসর বসবে ভারতেও।

খেলার ছলে: চিনের উয়াহান শহরের এক সংগ্রহশালায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। রয়েছেন চিনা প্রেসিডেন্ট শি চিনফিং। শুক্রবার। ছবি: পিটিআই

খেলার ছলে: চিনের উয়াহান শহরের এক সংগ্রহশালায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। রয়েছেন চিনা প্রেসিডেন্ট শি চিনফিং। শুক্রবার। ছবি: পিটিআই

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৮ এপ্রিল ২০১৮ ০৩:১৩
Share: Save:

প্রোটোকলের কড়া শাসন নেই। প্রাকৃতিক পরিবেশে আস্থা অর্জনের ঘরোয়া কূটনীতি। মধ্য চিনের উয়াহান শহরে যা শুরু করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। এটা প্রথম, তবে শেষ নয়। মোদী জানাচ্ছেন, আগামী বছর একই ধাঁচে আলোচনার আসর বসবে ভারতেও।

চিনের প্রেসিডেন্ট শি চিনফিংকে ভারতে আমন্ত্রণ জানিয়ে মোদীর বক্তব্য, ‘‘এই ঘরোয়া আলাপচারিতায় অত্যন্ত ইতিবাচক এক পরিবেশ তৈরি হল। চিনের প্রেসিডেন্টের তাতে বড় ভূমিকা রয়েছে। বেজিংয়ের বাইরে এসে তিনি দু’ দুবার আমায় অভ্যর্থনা জানালেন। ভারতবাসী গর্বিত যে আমিই প্রথম ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী আপনি যাকে দু’বার রাজধানীর বাইরে এসে স্বাগত জানালেন।’’ তিন বছর আগে মোদী চিনে গেলে জিয়াং শহরে তাঁর সঙ্গে বৈঠক করেছিলেন শি।

ডোকলামে সংঘাতের পরিস্থিতি নিয়ে টানা ৭২ দিনের অচলাবস্থার পর এই প্রথম মুখোমুখি হলেন দুই রাষ্ট্রনেতা। এতে ফিকে হয়ে যাওয়া দ্বিপাক্ষিক আস্থা ফেরত পাওয়া গেল কি না, সেটা অদূর ভবিষ্যতেই স্পষ্ট হবে। আপাতত বিদেশ মন্ত্রকের দাবি, আজ থেকে শুরু হওয়া ‘উয়াহান সংলাপ’ দৃশ্যতই দু’দেশের মধ্যে কিছুটা সহজ বাতাস বইয়ে দিতে পেরেছে। এর ফলে মতপার্থক্যগুলি নিয়ে আলোচনার পরিসরটি ফিরিয়ে আনার একটা পরিবেশ অন্তত তৈরি হল। একই সঙ্গে এই আলাপচারিতার পথ ধরেই ভবিষ্যতে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য এবং উন্নয়নের ক্ষেত্রগুলিতে পদক্ষেপ করা সম্ভব হতে পারে বলেমনে করছে বিদশ মন্ত্রক।

আমেরিকা-সহ পশ্চিমি দেশগুলি বাণিজ্যের ক্ষেত্রে যখন ক্রমেই রক্ষণশীল মনোভাব নিচ্ছে, তখন এশিয়ার দুই বৃহৎ শক্তি বিশ্বে একটি বিশেষ ভূমিকা রাখতে পারে বলে এ দিনের আলোচনায় একমত হয়েছেন মোদী-শি। মোদীর কথায়, ‘‘গত দু’হাজার বছরের মধ্যে ষোলোশো বছর ধরেই ভারত ও চিন আন্তর্জাতিক আর্থিক বৃদ্ধিতে বড় ভূমিকা নিয়েছে।’’ আর শি বলেন, ‘‘প্রধানমন্ত্রী মোদীর সঙ্গে দেখা হওয়ায় আমি খুশি। বসন্তই দেখা করার জন্য প্রকৃষ্ট সময়!’’

চিনে বসন্ত দু’মাসের। এপ্রিল-মে। এই বসন্তে মোদীকে ঢালাও অভ্যর্থনা জানাতে কোনও রকম কার্পণ্য করেননি শি। এ দিন দুপুরে দু’জনের দেখা হয় স্থানীয় হুবাই জাদুঘরে। গাড়ি থেকে নেমে দীর্ঘ লাল কার্পেটের উপর দিয়ে হেঁটে এসে অপেক্ষারত চিনা প্রেসিডেন্টের দিকে হাত বাড়িয়ে দেন মোদী। অজস্র ক্যামেরার ফ্ল্যাশের ঝলকানির মধ্যে চলে দীর্ঘ করমর্দন। এর পর একটি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পাশাপাশি বসে দেখেন দু’জন।

চার ঋতুর দেশ চিনে শীত বেশ দীর্ঘ। পাঁচ মাসের। তাদের সঙ্গে ভারতের তিক্ততার তালিকাও কম দীর্ঘ নয়। তবু আজকের বসন্ত-বাতাসে সে সব সামনে আনেননি কেউই। বরং ঘরোয়া আলোচনার পর শি বলেছেন, ‘‘গত পাঁচ বছরে আমরা যৌথ ভাবে অনেক কিছুই অর্জন করেছি। বিভিন্ন উপলক্ষে আমাদের দেখা হয়েছে। দ্বিপাক্ষিক বিষয়গুলি নিয়ে গভীর মত বিনিময়ের জন্য আমি অপেক্ষা করছি। ভারত-চিন সম্পর্ককে পরবর্তী স্তরে নিয়ে যেতে পারস্পরিক আস্থা গড়ে তোলা প্রয়োজন। আমি নিশ্চিত সেটা আমরা করে ফেলতে পারব।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE