—ফাইল চিত্র।
কিরঘিজস্তানে আগামিকাল থেকে সাংহাই কোঅপারেশন অর্গানাইজেশন বা ‘এসসিও’ গোষ্ঠীর রাষ্ট্রগুলির শীর্ষ সম্মেলন শুরুর আগে আজ চিন এবং রাশিয়ার সঙ্গে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক সারলেন নরেন্দ্র মোদী। প্রধানমন্ত্রিত্বের দ্বিতীয় ইনিংসে তাঁর প্রথম বহুপাক্ষিক বৈঠকের মঞ্চটিকে কাজে লাগিয়ে এক দিকে বড় শক্তিধর দেশগুলির সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক নতুন করে ঝালিয়ে নিতে চান মোদী। অন্য দিকে ‘ইউরেশিয়া ব্লক’-এর রাষ্ট্রগুলির সঙ্গে বাণিজ্যিক এবং কৌশলগত মৈত্রী স্থাপন করাটাও নয়াদিল্লির উদ্দেশ্য। কিরঘিজস্তানের রাজধানী বিশকেক-এ আজ সেই কাজটাই এগিয়ে রাখা হল।
এ কথা ঠিকই যে, চিন এবং রাশিয়ার রাষ্ট্রপ্রধানদের সঙ্গে আজ বিস্তারিত দ্বিপাক্ষিক বৈঠক হয়নি প্রধানমন্ত্রীর। সে রকম হওয়ার কথাও ছিল না। কিন্তু আলাদা আলাদা করে চিনের প্রেসিডেন্ট শি চিনফিং এবং রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে বৈঠকে গোটা বছরের পারস্পরিক আদান-প্রদানের রোডম্যাপ তৈরির কাজটি সেরেছেন মোদী। উহানের পরে দ্বিতীয় ঘরোয়া বৈঠকের জন্য চিনফিংকে ভারতে আসার আমন্ত্রণ জানিয়েছেন তিনি। চিনা প্রেসিডেন্ট সেই আমন্ত্রণ গ্রহণ করেছেন। পুতিন সেপ্টেম্বরের গোড়ায় ভ্লাদিভস্তকে ‘ইস্টার্ন ইকনমিক ফোরাম’-এ মোদীকে প্রধান অতিথি হওয়ার প্রস্তাব দিয়েছেন। মোদী জানিয়েছেন, তিনি যাওয়ার জন্য প্রস্তুত। পরে মোদী টুইটারে লিখেছেন, ‘প্রেসিডেন্ট পুতিনের সঙ্গে দুর্দান্ত বৈঠক হয়েছে। ভারত-রাশিয়া কৌশলগত সম্পর্ক আরও শক্তিশালী করা নিয়ে বিস্তারিত কথা হয়েছে। রাশিয়ার সঙ্গে বাণিজ্যিক যোগাযোগ বাড়াতে আমরা কাজ করব।’ এই মাসের শেষে জাপানে জি-২০ বৈঠকের ফাঁকে ভারত-চিন-রাশিয়া ত্রিপাক্ষিক বৈঠক হবে।
চিনফিংয়ের সঙ্গে বৈঠকে আজ পাকিস্তানের প্রসঙ্গ তুলেছেন মোদী। পরে বিদেশসচিব বিজয় গোখলে বলেন, ‘‘দক্ষিণ এশিয়ায় শান্তি ফেরাতে চায় ভারত। কিন্তু পাকিস্তান সেই প্রয়াসকে বারবার ভেস্তে দিয়েছে। সন্ত্রাসমুক্ত পরিবেশ তৈরি করতে হবে পাকিস্তানকে, কিন্তু এখনও পর্যন্ত সে রকম কোনও পরিস্থিতি দেখতে পাচ্ছি না। আমরা আশা করছি, এই ব্যাপারে হাতে-কলমে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’ সম্মেলনে যোগ দিতে আজই পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান পৌঁছেছেন বিশকেক-এ। ঠিক এই সময়েই পাকিস্তানের সমালোচনা করে (তা-ও আবার চিনের কাছে, যারা পাকিস্তানের সব রকম আবহাওয়ার মিত্র) একটি স্পষ্ট বার্তা মোদী দিতে চাইলেন বলেই মনে করা হচ্ছে।
বিদেশসচিবের কথায়, ‘‘আজকের বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী উল্লেখ করেছেন যে, ভারত ও চিনের মধ্যে কৌশলগত সংযোগ অনেকটাই বেড়েছে। ভারতে চিনা ব্যাঙ্কের শাখা খোলা অথবা জইশ জঙ্গি মাসুদ আজহারকে নিষিদ্ধ তালিকায় আনার মতো বিষয়গুলি সম্ভব হয়েছে।’’ বৈঠকের আগেই চিনফিং জানিয়েছিলেন, আমেরিকার শুল্ক-যুদ্ধের বিষয়টি নিয়ে তিনি কথা বলবেন ভারতের সঙ্গে। এই নিয়ে এর আগেই পুতিনের সঙ্গে বৈঠক সেরেছেন চিনফিং। আমেরিকার একতরফা সংরক্ষণবাদী অর্থনীতির ফলে সম্প্রতি ভুগতে হয়েছে ভারতকেও। বিনা শুল্কে আমেরিকায় বহু পণ্য রফতানির সুবিধা হারিয়েছে নয়াদিল্লি। ইরান থেকে তেল আমদানির প্রশ্নে মার্কিন নিষেধাজ্ঞাও জারি হয়ে গিয়েছে। সব মিলিয়ে চিনের মতো ভারতও কিছুটা চাপে। সূত্রের খবর, গোটা বিষয়টিই উঠে এসেছে আজকের জোড়া বৈঠকে।
এবার শুধু খবর পড়া নয়, খবর দেখাও। সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের YouTube Channel - এ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy