করিমগঞ্জ পুরসভা গঠন হয়েছে মাস খানেক আগে। এরই মধ্যে কংগ্রেসের দলীয় কোন্দল মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে সেখানে। কংগ্রেস পরিচালিত করিমগঞ্জ পুরবোর্ডের নব-নির্বাচিত পুরপ্রধান ও উপ-প্রধানকে সরাতে ১৭ জনের মধ্যে ৮ সদস্যই মরিয়া হয়ে উঠেছে।
বিষয়টি নিয়ে দলের বিভিন্ন স্তরে দরবার করতে শুরু করেছেন তাঁরা। দলে খুব একটা পাত্তা না পেয়ে এখন দল ভাঙার চক্রান্তও তাঁরা শুরু করেছেন বলে অভিযোগ কংগ্রেসেরই অন্য মহলের। কয়েকদিন আগে করিমগঞ্জের এই আট বিক্ষুব্ধ পুর-সদস্য হাইলাকান্দিতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর উপদেষ্টা গৌতম রায়ের কাছেও দরবার করেছেন। নিজেদের অবস্থানের কথা জানিয়ে দিয়েছেন। জানিয়েছেন, পুরপ্রধান শিখা সূত্রধরকে তাঁরা কোনও ভাবেই মেনে নেবেন না। কিন্তু গৌতমবাবু তাঁদের কথায় বিশেষ আমল দেননি। কারণ বরাক উপত্যকার একটি পুরবোর্ডে যদি এক মাসের মধ্যে পুরপ্রধানকে পরিবর্তন করতে হয় তাতে দলের দখলে থাকা অন্যান্য পুরবোর্ডগুলিতেও তার প্রভাব পড়বে।
বিষয়টি নিয়ে বিক্ষুব্ধরা উত্তর করিমগঞ্জের বিধায়ক কমলাক্ষ দে পুরকায়স্থের কাছেও একই আবদার করেছেন। জেলার অতিরিক্ত আবর্ত ভবনে মঙ্গলবার পুর সদস্যদের নিয়ে কমলাক্ষবাবু আলোচনায় বসেন। সে সময় বিক্ষুব্ধ পুরসদস্যদের অনেকেই স্পষ্ট করে জানিয়ে দেন, এই পুরপ্রধানকে তাঁরা মেনে চলবেন না। এ নিয়ে জটিলতা তৈরি হলে কমলাক্ষবাবু পরিস্থিতির রাশ টানতে বেশ কয়েকটি কমিটি গঠন করেছেন। সেই কমিটিগুলিতে পুরবোর্ডের নির্বাচিত সদস্যদের পাশাপাশি তাঁদের স্বামী, ভাই, ভাতিজাদের স্থান দেওয়া হয়। যেমন শহর সাফাই কমিটিতে (কনজার্ভেন্সি) ১৩ নম্বর ওয়ার্ডের পুরসদস্য রীতা দাসের স্বামী সুব্রত দাস, ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের উজ্জ্বল দাস, ১৮ নম্বর ওয়ার্ডের শ্যামসুন্দর দাস, ৭ নম্বর ওয়ার্ডের বিজয়া দাস রক্ষিতের স্বামী সুমন দাস, ৩ নম্বর ওয়ার্ডের সংহিতা পুরকায়স্থের স্বামী শম্ভু পুরকায়স্থ, ২ নম্বর ওয়ার্ডের পুরসদস্য ঋষিশ্রীকে প্রমুখকে স্থান দেওয়া হয়েছে। অনুরূপ ভাবে পূর্ত এবং পানীয়জল সরবরাহ বিভাগে ১ নম্বর ওয়ার্ডের বিশ্বজিত্ দাস, ২৬ নম্বর ওয়ার্ডের মল্লিকা দাসের স্বামী বিমল দাসকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। একইভাবে বৈদ্যুতিক বাতি, পুরসভার গাড়ি দেখাশোনার দায়িত্ব অর্পণ করা হয়েছে নির্বাচিত পুরসদস্যদের আত্মীয়স্বজনের মধ্যে।
পুরসভা গঠনের এক মাসের মধ্যে যদি দলীয় কোন্দল এই হারে বৃদ্ধি পায় তাহলে শহরের উন্নয়ন হবে কি করে?—এই প্রশ্নে শহর এখন সরগরম। এ ছাড়া উত্তর করিমগঞ্জের বিধায়ক কমলাক্ষ দে পুরকায়স্থের পুর পরিচালনায় অত্যাধিক হস্তক্ষেপও পুরসদস্যরা খুব একটা ভাল চোখে দেখছেন না বলে একাংশের অভিমত। নির্বাচিত পুরসদ্যদের আত্মীয়স্বজনকে বিভিন্ন কমিটিতে স্থান দেওয়াও কতটা যুক্তিযুক্ত তা নিয়েও প্রশ্ন তুলছে বিরোধীরা। কংগ্রেস মহলের আশঙ্কা, এমন পরিস্থিতি চলতে থাকলে তার রাজনৈতিক ফায়দা লুঠবে বিজেপি। কংগ্রেসকে ভেঙে বিক্ষুব্ধদের নিজেদের দলে টানার চেষ্টাও করবে তারা। এখন দেখার কংগ্রেস কী করে দল সামলায়!
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy