দিল্লিতে লালকেল্লার কাছে বিস্ফোরণের ঘটনায় যে চার জন চিকিৎসকের নাম উঠে এসেছে, তাঁদের লাইসেন্স বাতিল করে দিল জাতীয় মেডিক্যাল কমিশন। শুক্রবার এই সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছে। বলা হয়েছে, এই চার চিকিৎসক দেশের আর কোথাও কখনও প্র্যাকটিস করতে পারবেন না। চার জনেরই ভারতীয় মেডিক্যাল রেজিস্টার (আইএমআর) এবং জাতীয় মেডিক্যাল রেজিস্টার (এনএমআর) বাতিল করা হয়েছে।
মেডিক্যাল কমিশন বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছে, আদিল আহমেদ রাথর, মুজাফ্ফর আহমেদ, মুজ়াম্মিল শাকিল এবং শাহীন সইদের লাইসেন্স বাতিল হয়েছে। গত ১০ নভেম্বর দিল্লির বিস্ফোরণের ঘটনার তদন্তের সূত্রে যে ধরনের তথ্যপ্রমাণ উঠে এসেছে, তার ভিত্তিতেই চার চিকিৎসকের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করা হল। জম্মু ও কাশ্মীর পুলিশ, কাশ্মীর মেডিক্যাল কাউন্সিল এবং উত্তরপ্রদেশ মেডিক্যাল কাউন্সিলের কাছ থেকে এই তথ্য পেয়েছে কমিশন। সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপে এই চার জনের যোগ রয়েছে বলে অভিযোগ। বলা হয়েছে, ‘‘ডাক্তারি পেশায় যে সততা, শালীনতা প্রয়োজন, তার সঙ্গে এবং জনসাধারণের আস্থার সঙ্গে এই চার চিকিৎসকের আচরণ অসঙ্গতিপূর্ণ।’’
আরও পড়ুন:
মুজাফ্ফর, আদিল এবং মুজ়াম্মিলের লাইসেন্স আগেই বাতিল করে দিয়েছিল জম্মু ও কাশ্মীরের মে়ডিক্যাল কাউন্সিল। শাহীনের রেজিস্ট্রেশন পৃথক ভাবে বাতিল করে উত্তরপ্রদেশ মেডিক্যাল কাউন্সিল। সারা দেশেই এই নির্দেশ কার্যকর করার কথা বলেছে জাতীয় কমিশন।
গত সোমবার দিল্লির বিস্ফোরণে মোট ১৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। তার ঠিক আগেই কাশ্মীর-সহ উত্তর ভারতের বিভিন্ন প্রান্তে ধরপাকড় চালিয়েছিল পুলিশ। মুজ়াম্মিল, শাহীন, মুজাফ্ফরকেও তখন গ্রেফতার করা হয়। আরও আগে শ্রীনগর থেকে ধরা পড়েছিলেন আদিল। তাঁকে জেরা করে হরিয়ানার ফরিদাবাদ থেকে বিপুল পরিমাণ বিস্ফোরক পদার্থ উদ্ধার করা হয়। সে দিন সন্ধ্যাতেই বিস্ফোরণ ঘটে দিল্লিতে। ভারত সরকার এই ঘটনাকে সন্ত্রাসবাদী হামলা হিসাবে চিহ্নিত করেছে এবং এর সঙ্গে জড়িতদের কঠোর শাস্তির কথা বলেছে। চিকিৎসকদের এই ধরনের কার্যকলাপের সঙ্গে যোগাযোগ উদ্বেগ বাড়িয়েছে বিভিন্ন মহলে।
শ্রীনগরের রাস্তায় জইশ-ই-মহম্মদের সমর্থনে পোস্টার সাঁটতে গিয়ে গ্রেফতার হয়েছিলেন আদিল। তাঁর সূত্র ধরে ফরিদাবাদ থেকে ৩৬০ কেজি অ্যামোনিয়াম নাইট্রেট (আরডিএক্স তৈরির মশলা) উদ্ধার করা হয়। এ ছাড়া, উত্তরপ্রদেশের সাহারানপুরেও অভিযান চালায় কাশ্মীর পুলিশ। কাশ্মীর, ফরিদাবাদ এবং সাহারানপুর থেকে পাওয়া যায় মোট ২৯০০ কেজি বিস্ফোরক। দিল্লির ঘটনার সঙ্গেও এই বিস্ফোরকের যোগ রয়েছে বলে সন্দেহ। যে গাড়িটিতে বিস্ফোরণ হয়েছে, সেটি এসেছিল ফরিদাবাদ থেকেই।